Thursday, August 21, 2025

উত্তরবঙ্গের সভা বুঝিয়ে দিল বিজেপিতে মুকুলের জায়গা ঠিক কোথায়, অভিজিৎ ঘোষের কলম

Date:

অভিজিৎ ঘোষ

মুকুল রায়কে কতখানি গুরুত্ব দিচ্ছে বিজেপির দিল্লির নেতারা? উত্তরবঙ্গে দলের সভা সেটাই চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল।

বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি হিসেবে মুকুল মঞ্চে ছিলেন, কিন্তু এক বর্ণও বলেননি। বলা ভালো, তাঁকে বলতেই দেওয়া হয়নি। রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ অসুস্থ ছিলেন। তিনি মঞ্চে তাহলে নিশ্চিতভাবে প্রথম বক্তা হতেন। তাহলে প্রশ্ন জাগে, মুকুল রায়কে কতখানি গুরুত্ব দিচ্ছে ভারতীয় জনতা পার্টি?

মুকুল রায় সম্বন্ধে নানা উপমা তার ঘনিষ্ঠ মহল দিয়ে থাকেন। কিন্তু বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর একটি নির্বাচনেও তাঁর ক্যারিশমার প্রকাশ ঘটেনি। যে কারণে রাজ্য বিজেপিকে ভরসা করতে হয়েছে দিলীপ ঘোষের উপর। আর তাই বিধানসভা উপনির্বাচনে ৩-০ তে হারলে রাজ্য সভাপতিকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে দল, দলের সমর্থকরা। ফলে তিনি তাঁর ‘নন্দ ঘোষ’ হওয়া প্রমাণ করছে, তিনিই পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির মুখ।

বিজেপির একটি মহল বলছে মুকুল রায়ের নানাবিধ সমস্যা।

এক, তিনি তৃণমূলে অন্যতম শীর্ষস্থানে ছিলেন। এখানে এসে ভেবেছিলেন সেই অধিকারই পাবেন। কিন্তু তা হয়নি। সেই ভাবনা থেকে তিনি কয়েক যোজন দূরে রয়েছেন।

দুই, বিজেপির সব গোষ্ঠী নেতার সঙ্গে মুকুলের মোটেই সদ্ভাব নেই। তিনি যে আসলে কৈলাশ বিজয়বর্গীর বাই প্রোডাক্ট, তা নিজেই বারবার প্রমাণ করছেন। যেখানেই যান কৈলাস আর মুকুল। সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি হওয়ার পর এই জুটি দেখানোটা বোধহয় মুকুলের ‘বাধ্যতামূলক’ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু মুকুল বুঝতে পারছেন না, কৈলাসের সঙ্গে যত থাকছেন ততো তাঁর পয়েন্ট কমছে। কারণ, বাংলার মানুষ মোটেই কৈলাসের রাজনৈতিক হাব-ভাব আচার-আচরণ পছন্দ করছেন না। ওসব হিন্দি বলয়ে চলে।

তিন, দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে মুকুল তার গোষ্ঠী বাড়াতে পারেননি। তৃণমূলে ছিলেন যাদের সঙ্গে বিজেপিতেও তাদের সঙ্গে। সেই অনুপম, সৌমিত্র, অর্চনা, সব্যসাচীরা। ফলে মুকুল রায়ের নামের পাশে সর্বভারতীয় বিজেপি নেতার তকমাটা বড্ড খাটো লাগে। মনে হয় তিনি এক গোষ্ঠীর নেতা।

চার, মুকুল মানেই সারদা-নারদা। বিজেপিতে গিয়ে আপাতত নিজেকে ‘সেফ’ রাখলেও তাঁকে ঘিরে এসব প্রশ্ন উঠবে, এবং উঠছে। তাতে দলের বিড়ম্বনা বাড়ছে বই কমছে না।

পাঁচ, কৈলাসের পীড়াপীড়িতে এবং নাছোড়বান্দা মনোভাবের কারণে মুকুল সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি হতে পারেন, কিন্তু নাড্ডাদের খাতায় মুকুল রায় নামটি মোটেই যে বিশ্বাসযোগ্য নয়, তা বেশ বোঝা যাচ্ছে আসল কর্মক্ষেত্রে। শিলিগুড়ির সভায় যেখানে দিলীপ ঘোষ অনুপস্থিত ছিলেন, সেখানে নিশ্চিতভাবে মুকুল রায়কে বক্তব্য রাখার সুযোগ দেওয়া উচিত ছিল। কিন্তু তা হয়নি। আর এই ঘটনাই প্রমাণ করছে বিজেপিতে এখনও মুকুল ‘সেকেন্ড গ্রেড সিটিজেন’। দলেরই একজন বললেন, মুকুলকে কৈলাস যতই ‘চাণক্য’ বানানোর চেষ্টা করুন না কেন, এই চাণক্য যে ‘মেড ইন চায়না’, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

আরও পড়ুন-#বয়কটমোদিভাষণ: সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ বয়কটের ডাক

Related articles

পুজোর আগে রাজ্য পুলিশের শীর্ষস্তরে রদবদল! পরিবর্তন হল ৬ জেলার এসপি-ডিসি

পুজোর মুখে রাজ্য পুলিশের শীর্ষ পদে বড়সড় রদবদল করল নবান্ন। বৃহস্পতিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, একাধিক জেলায় পুলিশ...

‘নোরা ফাতেহি’ হতে হবে! স্ত্রীকে জোর করে শরীরচর্চা করিয়ে গর্ভপাত শিক্ষকের

যোগীরাজ্যে স্কুলশিক্ষকের ফ্যান্টাসির চূড়ান্ত নমুনা! স্ত্রীকে হতে হবে রোগা ছিপছিপে চেহারার। আর সেই চেহারা বানাতে গিয়েই স্বামীর নির্মম...

গান-কবিতায় সংসদে সরব তৃণমূল! বয়কট রাজ্যসভার চা-চক্র

বৃহস্পতিবার অধিবেশনের শেষ দিনে সংসদ উত্তাল হল বাংলা গান, কবিতা, বিক্ষোভ, প্রতিবাদে। সংসদের অন্দরে যেমন কালাকানুন, এসআইআর, ভাষাসন্ত্রাসের...

নওশাদ-সহ আইএসএফ সমর্থকদের জামিন দিল ব্যাঙ্কশাল আদালত

ধর্মতলার কর্মসূচির নামে অশান্তি পাকানোর চেষ্টা। বুধবার গ্রেফতার করা হয় ভাঙড়ের বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকিকে (Naushad Siddiqui)। বৃহস্পতিবার নওশাদ-সহ...
Exit mobile version