পাড়ায় পাড়ায়: ঐতিহ্যের বাগবাজার আর চারপাশে

শৈবাল বিশ্বাস : বাগবাজার। দালানে কেউ উঠতে পারবেন না, মাঠ থেকে দেখতে হবে। বন্ধ বীরাষ্টমী,সিঁদুর খেলা। পাড়ার আরেক বিখ্যাত পুজো জগৎ মুখার্জি পার্কে নো এন্ট্রি। এবার শিল্পী অশোক গুপ্তর সম্মানে তাঁর প্রায় পঞ্চাশ বছর আগে করা একটি থিম পুনর্নির্মাণ করা হয়েছিল। সেটা আর কেউই দেখতে পাবেন না। অনেকেই জানেন না, বিখ্যাত চিত্রশিল্পী অশোক গুপ্তই প্রথম প্রতিমার রূপ ভেঙে থিমের পুজো শুরু করেন। তখন বলা হত ‘ আর্টের ঠাকুর’। দুর্গা প্রতিমাকে আটপৌরে নারী সাজানো, পুরাণের গল্পকে পুনর্গঠন করে সমকালীন রূপ দেওয়া এসবই অশোক গুপ্তর হাত দিয়ে শুরু। বহু বিখ্যাত শিল্পী বাগবাজারে থাকতেন বা থাকেন– যামিনী রায়,গোপাল ঘোষ, হারান ঘোষ, মাধব ভট্টাচার্য, সুব্রত গঙ্গোপাধ্যায়, অশোক গুপ্ত, অশোক গঙ্গোপাধ্যায় ইত্যাদি। কাছেই শ্যামপুকুরে বিকাশ ভট্টাচার্য, বিমল কুন্ডু… । তালিকা বাড়ালাম না। মোট কথা, শিল্পের ধ্রুপদী ও আধুনিক নির্মাণ কোনও দিক দিয়েই বাগবাজারের জনজীবন চর্যা বঞ্চিত হয়নি। আজ এ কথা মনে করিয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্য, বিকাশ ভট্টাচার্যের একটি ছবির অনুকরণে হত দরিদ্র মায়ের প্রতিমা এবার খুবই জনপ্রিয় হয়েছে। একদিকে অতিমারী জনিত বিষন্নতা, অন্যদিকে শ্রমিক পরিবারগুলির কাজ হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে নেমে আসা। সব মিলিয়ে বিকাশ ভট্টাচার্যের সেই মা যেন এবার বড্ড বেশি জ্যান্ত। বিকাশ এমন দুর্গা অনেক এঁকেছিলেন। দুর্গাপুজোর শিল্প আবহ নিয়ে বইও লিখেছিলেন ( সূত্রধর প্রকাশনী প্রকাশিত) । অশোক গুপ্তর হাত ধরে তিনটি পুজো আর্টের ঠাকুর করা শুরু করে– বাগবাজার পল্লীপুজো ( গৌরীমাতা উদ্যান), একের পল্লী ( জগৎ মুখার্জি পার্ক) এবং ষড়ঙ্গ। অশোকও প্রতিমায় আটপৌরে মায়ের রূপ ফুটিয়ে তুলতেন। দুর্গা প্রতিমার রূপান্তর দেখে শিল্পভাবনার সূত্রপাত হয়েছে এমন ছেলেমেয়ে এলাকায় খুঁজে পাওয়া দুষ্কর নয়।

আরও পড়ুন-পাড়ায় পাড়ায়: রামমোহন সম্মিলনীতে এবার সাবেক বাংলা

Previous articleকোভিড রিপোর্ট নেগেটিভ এলেই শহরে প্রবেশের অনুমতি বিমানযাত্রীদের, পজিটিভে যেতে হবে হাসপাতালে
Next articleকোভিড অতিমারীর সম্ভাব্য প্রতিষেধক নিয়ে গবেষণা, তাক লাগালো ১৪ বছরের কিশোরী