বিশেষ সুরক্ষা বলয়ে রায় পরিবারের ঐতিহ্যশালী মাতৃ আরাধনায় মেতেছেন সবাই

দুর্গাপুজো নিয়ে বাঙালির নস্টালজিয়ার শেষ নেই। আর এবারের দুর্গাপুজো মহামারির আবহে সম্পূর্ণ এক অচেনা পরিস্থিতিতে হচ্ছে । বারোয়ারি থেকে বাড়ির পুজো সর্বত্রই মহামারির আবহে বাড়তি সতর্কতা নেওয়া হয়েছে । রাইস-এর কর্ণধার সমিত রায়ের পারিবারিক পুজোও তার ব্যতিক্রম নয়। বিগত ১৭ বছর ধরে তাঁর বাড়িতে হচ্ছে মাতৃ আরাধনা। তিনি স্বয়ং জানিয়েছেন, তাদের পূর্ববঙ্গের বাড়িতে দুর্গাপুজো শুরু হয়েছিল। সেই ধারাবাহিকতা বজায় রেখেই তিনি এখানে দুর্গাপুজো শুরু করেছেন।

তবে কোভিড-১৯ এর সংক্রমণের কথা মাথায় রেখে তিনি এবার বাড়তি সতর্কতা নিয়েছেন আগেভাগেই । পুজোর উপাচারের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত পুরোহিত থেকে ঢাকি, এমন চারজনকে তিনি দ্বিতীয়া থেকেই নিজের বাড়িতে আলাদা ঘরে রাখার ব্যবস্থা করেন। এরপর তাদের লালারস পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয় এবং দেখা যায় পুরোহিতসহ তাদের তিনজন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত।

অধ্যাপক সমিত রায় জানিয়েছেন , যদি সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে এই পদক্ষেপ না নেওয়া হতো তাহলে তাদের মাধ্যমে পরিবারের আরও মানুষের মধ্যে করোনা সংক্রমিত হওয়ার সুযোগ ছিল। এরই পাশাপাশি , দুর্গা দালানের চতুর্দিকে তিনি ফাইবার গ্লাস দিয়ে আটকে দিয়েছেন। সেই সুরক্ষিত অঞ্চলেই এবারের মাতৃ আরাধনা চলছে। রাইস-এররাইস-এর কর্ণধার স্পষ্ট জানিয়েছেন, মানুষের জীবন আগে। আমরা বেঁচে থাকলে উৎসব আবার আসবে। তাই বাড়তি সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে আমার পারিবারিক পুজোয় এই ব্যবস্থা নিয়েছি। তিনি আরও বলেন, মুখ্যমন্ত্রী সর্বতোভাবে চেষ্টা করছেন সংক্রমণ কমানোর। কিন্তু নিজেরা সতর্ক না হলে রাজ্যের পক্ষে একা এই পরিস্থিতি সামলানো সম্ভব নয় । এমনকি মায়ের আরাধনায় পুরোহিত এবং তার সহযোগী ছাড়া ধারে কাছে কাউকে ঘেঁষতে দেওয়া হচ্ছে না ।

এমনকি, অঞ্জলি দেওয়ার ক্ষেত্রেও বাড়তি সর্তকতা নেওয়া হয়েছে এই পারিবারিক পুজোতে। যে ফুল দিয়ে মাকে অঞ্জলি দেওয়া হচ্ছে সেই ফুল রীতিমতো স্যানিটাইজেশনের পরই মায়ের পায়ে অঞ্জলি দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এই পরিবারের সদস্য রজতশুভ্র রায় জানিয়েছেন, দুর্গাপুজো উপলক্ষ্যে বাড়িতে আরও অনেক আত্মীয় প্রত্যেক বছর আসেন। কিন্তু এবারের পরিস্থিতি যেহেতু অন্য রকমের তাই অনেকেই আসতে পারেননি বা সবাইকে সুযোগ করে দেওয়া যায়নি। পারিবারিক এই পুজোয় আত্মীয়দের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ পাওয়া যায় বলে তিনি উল্লেখ করেন। তবে শেষ পর্যন্ত এবছর মায়ের আরাধনা হওয়ায় তিনি যারপরনাই খুশি ।

আরও পড়ুন: অষ্টমী-নবমীর সন্ধিক্ষণে চামুন্ডা রূপে দুই ভয়ানক অসুরের রক্তপান করেন দেবী দুর্গা

ষষ্ঠীর বোধনে পুজোর সূচনা হয়েছিল। সপ্তমীতে নবপত্রিকা স্থাপন ও অষ্টমীর সন্ধিপুজোতে যেন তা পূর্ণতা পেল। এভাবেই সম্পূর্ণ পারিবারিক আবহে অনুষ্ঠিত হচ্ছে রায় পরিবারের পারিবারিক পুজো। সুরক্ষা বলয়ের মধ্যে থেকেই পরিবারের সবাই পুজোর আনন্দে মেতেছেন ।

Previous articleঅষ্টমী-নবমীর সন্ধিক্ষণে চামুন্ডা রূপে দুই ভয়ানক অসুরের রক্তপান করেন দেবী দুর্গা
Next articleপুজোয় আর নেই মন খারাপের মেঘ, অষ্টমীর সকালে উঁকি দিল ঝলমলে রোদ