কং-বাম জোটে ফের অনিশ্চয়তা, অধীর চৌধুরির প্রশ্নে খুশি নন বিমান বসু

কেন জোটের বৈঠক হবে বৈঠক ক্রান্তি প্রেসে? প্রদেশ কংগ্রেস দপ্তরে বৈঠক নয় কেন? শুক্রবারের বাম- কংগ্রেসের বৈঠকের শুরুতেই এমনই প্রশ্ন তোলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরি। অথচ, পূর্বনির্ধারিত সূচি অনুসারেই ক্রান্তি প্রেসে বামফ্রন্ট এবং কংগ্রেসের সমঝোতা বৈঠক হওয়ার কথা৷ বৈঠক শুরুও হয়, কিন্তু ঘণ্টাদেড়েকের ওই বৈঠকের তাল কাটে বারবার৷

প্রথমে অধীরবাবু প্রশ্ন তোলেন, ‘বাম-কংগ্রেস’ ঐক্য বলা যাবেনা৷ আগে কংগ্রেস থাকবে, পরে বামফ্রন্ট৷ এর অর্থ, অধীরের দাবি, ‘কংগ্রেস-বাম’ ঐক্য হবে, বাম-কংগ্রেস নয়৷ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির এই দাবি শুনে স্বাভাবিকভাবেই বৈঠকের মাঝেই মেজাজ হারান বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু । বৈঠকে উপস্থিত অন্যান্য নেতৃত্ব এখন আশঙ্কা করছেন শেষ পর্যন্ত আসন সমঝোতা নিয়ে ঐক্যে নাও হতে পারে৷

আরও পড়ুন : মহাষ্টমীর সন্ধ্যায় রাজ্যপাল যাচ্ছেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের বাড়ি

এর পর ফের অধীর চৌধুরি দাবি করেন,
বৈঠক কেন ক্রান্তি প্রেসে করা হচ্ছে? তাঁর যুক্তি, বিধানসভার কংগ্রেসের বিধায়ক সংখ্যা যেহেতু এখন বামফ্রন্টের থেকে বেশি, তাই বামফ্রন্টের সঙ্গে যাবতীয় বৈঠক হবে প্রদেশ কংগ্রেস দপ্তরে ।

এ দাবি শুনে কার্যত বিস্মিত হয়ে যান সিপিএম রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র, ফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু সহ উপস্থিত অন্যান্য ফ্রন্ট নেতৃত্ব । ২০১৬-র বিধানসভা নির্বাচনের আগেও যাবতীয় বৈঠক হয়েছিল এই ক্রান্তি প্রেসেই৷ তাহলে এখন বৈঠক হতে আপত্তি কোথায় ?
এ ছাড়াও বামনেতারা প্রশৃন তোলেন, কোন কারণে ‘বাম-কংগ্রেস জোট’ লেখা যাবে না? কেনই বা আগে ‘কংগ্রেস’ লিখতে হবে?

এই দুই বিষয় নিয়ে বৈঠকের মাঝখানেই দীর্ঘ তর্ক চলে৷ বৈঠকে উপস্থিত বাম নেতারা পরে বলেছেন, অধীর চৌধুরির কথাবার্তায় সন্তুষ্ট নয় ফ্রন্ট নেতৃত্ব৷ এই নেতাদের বক্তব্য, আসন সমঝোতার জন্য কংগ্রেসের কাছে বামফ্রন্ট ছাড়া আর কোনও বিকল্পই তো নেই৷ তাহলে এমন সব কথা কেন তোলা হচ্ছে ?

এই বাদানুবাদের জেরে শুক্রবারের বৈঠকে কোনও সমাধান সূত্র মেলেনি । পরবর্তী বৈঠকের বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে । তবে কবে বৈঠক হবে, কোথায় হবে, তা নিয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি ।

আরও পড়ুন : ‘Save Bengal from Bjp’, সোশ্যাল মিডিয়ায় অভিনব ক্যাম্পেনিং তৃণমূলের

ওদিকে, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরি জানিয়েছেন, “চলতি উৎসবের মরসুমে বামফ্রন্ট যে সমস্ত কর্মসূচি নিয়েছে সেগুলো তারা এককভাবে করুক। কংগ্রেস সেই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করবে না । দলীয় বৈঠকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এবং কর্মসূচি নিয়ে আলোচনার পরেই কংগ্রেসের কর্মীরা বামফ্রন্টের সঙ্গে যৌথ কর্মসূচি নেবে”৷

বামেদের কর্মসূচিতে কংগ্রেসকে যুক্ত হওয়ার আবেদন জানানো হয়েছিল বহু আগেই । মনে করা হচ্ছে, অধীরবাবু বাম আন্দোলনে কংগ্রেসের যুক্ত হওয়ার বিষয়টি খারিজ করেছেন। ফলে ইতিমধ্যেই প্রশ্নও উঠতে শুরু করেছে বামফ্রন্ট এবং কংগ্রেসের সমঝোতার ভবিষ্যত কী ?

Previous articleপাচারের আগেই ২০ কোটি টাকার হেরোইন আটক ওয়াটগঞ্জে, গ্রেপ্তার ২
Next articlePPE-‘সজ্জিত’ হয়ে মহাষ্টমীর পুষ্পাঞ্জলি পূর্ব কলকাতা সর্বজনীন দুর্গোৎসবে