বিহারে দুর্গা বিসর্জনে পুলিশের লাঠিচার্জে মৃত চার বাঙালি, মমতা নীতিশকে চিঠি বাংলাপক্ষের

দশমীর রাতে বিহারের মুঙ্গেরে দুর্গাপুজোর বিসর্জনের সময় লাঠিচার্জে কমপক্ষে চারজন বাঙালি নিহত এবং বহু আহত হয়েছেন, এমনটাই দাবি “বাংলা পক্ষ”র। যার প্রতিবাদে ইতিমধ্যেই সরব হয়েছে “বাংলা পক্ষ”। বিহারে ভোটের আবহে যা নিয়ে রাজ্যের বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছে “বাংলা পক্ষ”। একই চিঠি ফরোওয়ার্ড করা হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছেও।

“বাংলা পক্ষ” জানাচ্ছে , “বাঙালির প্রাণের উৎসবের শেষ লগ্নে বিষাদের ছায়া নেমে এসেছে। এই হত্যা গোটা ভারতে বাঙালি জাতির অপমান এবং চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় যে গো-বলয়ের রাজ্যে বাঙালি বিদ্বেষের শেকড় কতটা গভীরে পৌঁছে গেছে। এর আগে দুর্গাপূজার সময় প্রতিমা বিসর্জন দিতে বাঙালিকে বাধা দেওয়া হয়েছে, দিল্লিতে বাঙালির প্রতিমা ভেঙে টুকরো করে দেওয়া হয়েছে, দুর্গাপুজোর সময় বাঙালির স্বাভাবিক খাদ্যাভ্যাসের উপরে আঘাত নামিয়ে আনা হয়েছে। কিন্তু, বিহারের ঘটনা সমস্ত কিছুকে ছাপিয়ে যায়। গো-বলেয়ের প্রচুর মানুষ বাংলায় থাকেন, বাঙালির ভোটে নির্বাচিত সরকার তাদের আচার-অনুষ্ঠান পালন এ সমস্ত রকমের সহযোগিতা করেন। অথচ, বাঙালির ক্ষেত্রে এর ব্যতিক্রম দেখতে পাওয়া যায় হিন্দিভাষী রাজ্যগুলোতে। বাংলা পক্ষ দাবি করে, এই মর্মান্তিক তথা নিষ্ঠুর ঘটনার সঙ্গে জড়িত প্রত্যেকের কঠিনতম শাস্তি। বাংলা পক্ষ এই মর্মে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী, বিহারের মুখ্যমন্ত্রী, এবং ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছে।”

বাংলা পক্ষ আরও জানাচ্ছে , “এই ঘটনায় বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর সক্রিয় পদক্ষেপ দাবি করি। বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের কাছে আমাদের স্পষ্ট দাবি, যে এই নারকীয় ঘটনার সঙ্গে যুক্ত প্রত্যেকটি পুলিশকর্মীর উপযুক্ত শাস্তি হোক। গোটা বিহার রাজ্যে বাঙালির সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কাছে আমাদের দাবি স্পষ্ট যে বাঙালির ওপর এই নির্যাতন বন্ধ করুন, কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করুন, এবং বাঙালির নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করুন যাতে হিন্দি বলয়ের রাজ্যগুলো থেকে বাঙালিকে প্রত্যেকদিন প্রাণের ভয়ে জমি-বাড়ি সম্পত্তি বিক্রি করে পালিয়ে আসতে না হয়। ভারত রাষ্ট্রে অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর যতটা অধিকার, বাঙালিরও ততটা অধিকার। সংবিধান স্বীকৃত এই অধিকার সুনিশ্চিত করার দায়িত্ব আপনার।”

একইসঙ্গে বাংলা পক্ষ ভারতের প্রত্যেকটি রাজ্যে অবস্থিত বাঙালিদের দের উদ্দেশ্যে বার্তা দিতে চাইছে। তারা জানাচ্ছে, “একে অপরকে আরও বেশি সংগঠিত করুন। একে অপরের পাশে থাকুন। বাঙালির ওপরে যেখানে আক্রমণ নেমে আসছে, কার বিরুদ্ধে জাতি হিসেবে সোচ্চার হোন। এই কঠিন সময়ে জাতি হিসেবে একে অপরের সঙ্গে সংঘটিত হওয়ার প্রয়োজন সবচেয়ে বেশি। হিন্দি সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসন এবং আক্রমণের কথা এখন আর কেবলমাত্র তত্ত্ব নয়, বরং ঘোর বাস্তব। প্রতিরোধ গড়ে তোলার সময় আসন্ন। ভারত রাষ্ট্রে বাঙালির সমান অধিকার। আমাদের সবকিছু আমাদের রক্ষা করতে হবে আমাদের বুঝে নিতে হবে। দুর্গা প্রতিমা বিসর্জন দিতে গিয়ে মুঙ্গেরে বাঙালি যে দুরবস্থা যে অপমান ঘটলো তার বিরুদ্ধে সুবিচার আদায় করে নেওয়ার জন্য আমাদের বাংলা তথা গোটা ভারতে জাতি হিসেবে আরো সংঘটিত হওয়ার প্রয়োজন আর অস্বীকার করা যায় না।”

তবে এখানেই থেমে থাকতে চায় না বাংলা পক্ষ। আগামীর প্রতিবাদী পদক্ষেপ হিসেবে আরও বৃহত্তর আন্দোলনে নামছে তারা। তারই অঙ্গ হিসেবে কলকাতার ধর্মতলায় বিহার ভবনের সামনে বড়সড় বিক্ষোভে সামিল হবে বাংলা পক্ষ। বিহার ভোটেট5 মাঝে এখন যেদিকেই নজর রাজনৈতিক মহলের।

আরও পড়ুন- ত্বহার সঙ্গে কথা, ফুরফুরা শরীফের উন্নয়নে কয়েকশো কোটির মাস্টারপ্ল্যান

Previous articleত্বহার সঙ্গে কথা, ফুরফুরা শরীফের উন্নয়নে কয়েকশো কোটির মাস্টারপ্ল্যান
Next articleএখনই অফিস খোলার পরিকল্পনা নেই: ফেসবুক