বিয়ের পর থেকে টাকা চাইতেন, আত্মঘাতী হওয়ার হুমকিও দেন পুত্রবধূ

বিয়ের পর থেকে টাকা চাইতেন বালুরঘাটের সুস্মিতা আচার্য্য। তা দিতে কখনই অস্বীকার করেননি শ্বশুর বাড়িরলোক। তবে দিনের পর দিন চাহিদা বাড়তেই থাকে ওই গৃহবধূর।

শ্বশুরবাড়ির সামনে ধর্নায় বসেন বালুরঘাটের যুবতী। তাঁর একতরফা অভিযোগ, তাঁর স্বামী ভিন দেশে থাকায় তাঁকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছেন শ্বশুর, শাশুড়ি। শ্বশুরবাড়ির লোকের অভিযোগ, নিজেদের নিরাপত্তার কারণেই তাঁরা ছেলের অনুপস্থিতিতেই পুত্রবধূকে ঘরে ঢুকতে দিতে চাননা। এই নিয়ে মামলাও চলছে আদালতে।

চলতি বছরে ফ্রেব্রুয়ারি মাসে বালুরঘাটের এক যুবকের সঙ্গে বিয়ে হয় মালদহের তরুণীর। বিয়ের দশ দিনের মধ্যে কর্মসূত্রে দুবাই চলে যান তাঁর স্বামী। কিন্তু গৃহবধূ সুস্মিতা আচার্য্যর বিএড পরীক্ষা থাকার কারণে এখানেই থেকে গিয়েছেন। এরপরেই শুরু হয় অশান্তি। ২১ অক্টোবর তাঁকে বের করে দেওয়া হয় বাড়ি থেকে। এরপরেই শ্বশুরবাড়িতে ফেরার অনুমতি এবং ধর্নায় বসেন গৃহবধূ।

ওই তরুনী জানান, শুরু থেকে তাঁর সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকজন। এরপর জানান, তাঁর স্বামীও তাঁর সঙ্গে কোনও যোগাযোগ রাখেননি। কোনও ফোন কল, মেসেজ বা হোটসঅ্যাপ করে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেনি। শ্বশুর শাশুড়ির পালটা দাবি, নিজেদের নিরাপত্তার কারণেই তাঁরা ছেলের অনুপস্থিতিতেই পুত্রবধূকে ঘরে ঢুকতে দিতে চাননা। এই নিয়ে মামলাও চলছে আদালতে। এরইমধ্যে গত শুক্রবার ধর্নায় বসেন গৃহবধূ। ফের শুরু হয় নতুন উত্তেজনা।

ওই তরুণীর শাশুড়ি পেশায় শিক্ষিকা। অনীতা বিশ্বাস কর্মকার জানান, বিয়ের পর থেকে শুধু টাকা চাইতেন পুত্রবধূ সুস্মিতা আচার্য্য। ক্রমশই বাড়তে থাকে তাঁর টাকার পরিমাণ। অশান্তি বাড়তে থাকলে ফেসবুক লাইভ করে আত্মঘাতী হওয়ার হুমকি দেন সুস্মিতা। মেয়ের বাড়ি থেকে ফোন করে নানা রকমের হুমকি দেওয়া হয়। এরপর আমার স্বামীর অসুস্থতার কারণে কলকাতায় চিকিৎসা করাতে এলে সুস্মিতা গ্যাস কাটার দিয়ে বাড়ির ৯টি তালা কেটে বাড়ির ভিতরে ঢোকেন। বাড়িতে সিসিটিভি থাকার কারণে ফুটেজে দেখতে পাই মেয়েটির বাড়ির লোক ঘরের ভিতরে বসে আমাদের থেকে টাকা আদায়ের কথা বলছে। লকডাউনের সময় দিনের পর দিন আমি ওঁকে নিজের মেয়ের মতো ভালোবেসে রান্না করে খাওয়াতাম। আজ এই প্রতিদান দিলো। আমার স্বামী, আমার ও আমার বোনের নামে বালুরঘাট থানায় ৪৯৮ মামলা দায়ের করেন সুস্মিতা। এখন আমাদের নিজেদের প্রাণ বাঁচাতে ওঁকে ভাড়া বাড়িতে থাকতে বলেছি। ভাড়ার টাকা আমরা বহন করব বলেও জানিয়েছি। এরমধ্যে আমার এক প্রতিবেশী শিক্ষিকা সুলতা ভৌমিক জানিয়েছেন, সুস্মিতার ওপর অত্যাচার করতাম আমরা। আমার প্রশ্ন ওঁর কাছে অত্যাচার করার কোনও প্রমাণ আছে কি? আমি আগের মাসেও সুস্মিতাকে হাত খরচের টাকা দিয়েছি, এই মাসেও দিয়েছি এবং আগামী মাসেও দেব।

আইনজীবী অয়ন চক্রবর্তী জানান, “কমল চন্দ্র কর্মকার ও অনীতা বিশ্বাস কর্মকার কলকাতায় চিকিৎসার জন্য এলে পুত্রবধূ বালুরঘাটের বাড়িতে ঢোকে। এবং কমল চন্দ্র কর্মকার ও অনীতা বিশ্বাস কর্মকার চিকিৎসার পর বাড়ি ফিরে গেলে তাঁদের ঢুকতে দেওয়া হয় না। এরপর হাইকোর্ট থেকে অর্ডার করিয়ে দেওয়ার পর তাঁরা বাড়িতে ঢোকেন।”

আরও পড়ুন-মণীশ খুনের ঘটনায় পাঞ্জাব থেকে গ্রেফতার আরও ২ শার্প শ্যুটার

 

Previous article১ সেন্টিমিটারেরও কম পেন্সিলের শিসে কালীর মূর্তি গড়ে তাক লাগিয়েছেন সৌরভ
Next articleগড়ফায় প্রতিবাদী প্রৌঢ়ের মৃত্যুতে উত্তেজনা