তুমুল লড়াই চলছে, রাশিয়ার সাহায্য চাইল আর্মেনিয়া

থামছে না যুদ্ধ। চলছে ব্যাপক লড়াই। নাগর্নো-কারাবাখ অঞ্চলের দখল নিয়ে চলছে যুদ্ধ। নিজেদের অবস্থান থেকে এক ইঞ্চিও নড়তে নারাজ আজারবাইজান ও আর্মেনিয়া। এরমধ্যে সামরিক চুক্তি অনুযায়ী রাশিয়ার সাহায্য চাইল আর্মেনিয়া। এক সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, শনিবার যুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কাছে প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত একটি জরুরি আলোচনার আবেদন জানিয়েছেন আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী পাশিনিয়ান। আগেই জানা গিয়েছিল,রাশিয়ার সঙ্গে আর্মেনিয়ার সামরিক চুক্তি রয়েছে। এছাড়াও, ওই দেশে একটি সামরিক ঘাঁটি রয়েছে রাশিয়ার সেনাবাহিনীর।

এই যুদ্ধ থামানোর বহু চেষ্টা করেছে ফ্রান্স, আমেরিকা ও রাশিয়া। কিন্তু লাভ হয়নি। তিনবার সংঘর্ষ বিরতিতে রাজি হলেও আবারও শুরু হয়ে যায় লড়াই। এই পরিস্থিতিতে শুক্রবার জেনেভায় আরও একবার শান্তি ফেরানোর আলোচনা হয়। তবে তা ভেস্তে যায়। বিশ্লেষকদের মতে, তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু করার মতো যথেষ্ট ইন্ধন রয়েছে এই লড়াইয়ে। রাশিয়া আর্মেনিয়ার পাশে দাঁড়ালে পিছপা হবে না তুরস্কও। ফলে সরাসরি সংঘাতে জড়িয়ে পড়বে দুই শক্তি।

উল্লেখ্য, গত ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে আর্মেনীয় অধ্যুষিত বিতর্কিত নাগর্নো-কারাবাখ অঞ্চলের দখল নিয়ে লড়াই শুরু করছে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজান। দু’বার সংঘর্ষ বিরতি চুক্তি হলেও তা কিছু সময় হয়। তাই ককেশাসে শান্তি ফেরাতে কয়েকদিন আগে দুই দেশের বিদেশমন্ত্রীদের সঙ্গে আলাদাভাবে ওয়াশিংটনে বৈঠকে বসেন মার্কিন বিদেশসচিব মাইক পম্পেও। তবে সেই চেষ্টায় ব্যর্থ হয়। ফলে দুই দেশের মধ্যে লড়াই আরও তীব্র হয়েছে। যুদ্ধে এপর্যন্ত প্রায় ৫ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এই যুদ্ধে প্রত্যক্ষভাবে অংশ নিয়েছে আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রীর স্ত্রী।

এই সংঘর্ষের জেরে মস্কো জানিয়েছে, ইয়েরেভানের সঙ্গে থাকা চুক্তি স্বঘোষিত রাষ্ট্র নাগর্নো-কারাবাখের ক্ষেত্রে লাগু হয় না। পালটা আর্মেনিয়ার দাবি, আজারবাইজানকে মদত দিচ্ছে তুরস্ক। এবং সংঘর্ষ শুধমাত্র বিতর্কিত অঞ্চলেই সীমাবদ্ধ নেই। এখন লড়াই আর্মেনিয়ার সীমান্তে চলে এসেছে। ফলে মস্কো চুক্তি মেনে প্রতিশ্রুতি রক্ষা করুক।

প্রসঙ্গত, ১৯৯১ সালে তৎকালীন সোভিয়েত শাসিত আজারবাইজান প্রজাতন্ত্র থেকে নাগর্নো–কারাবাখকে স্বাধীন ঘোষণা করা হয়। আন্তর্জাতিকভাবে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলটি আজারবাইজানের অংশ হিসেবে স্বীকৃত। তবে বহু বছর ধরেই ওই অঞ্চলটি নিয়ন্ত্রণে রেখেছে আর্মেনিয়া। নাগর্নো-কারাবাখ অঞ্চলকে স্বাধীন হিসেবে স্বীকৃতি না দিলেও সরকার রাজনৈতিক ও সামরিকভাবে সাহায্য প্রদান করে আসছে। ১৯৯৪ সালে সংঘর্ষ বিরতি চুক্তি হয়। কিন্তু তাতে কোনও লাভ হয়নি। আজারবাইজানের দাবি তারা আত্মরক্ষার্থেই গুলি ছুঁড়তে শুরু করেছিল। অন্যদিকে, আর্মেনিয়ার অভিযোগ সাধারণ মানুষকে লক্ষ্য করে আচমকা গুলি চালায় অপর পক্ষ।

আরও পড়ুন-করোনা’র ‘সেকেন্ড ওয়েভ’ ভয়াবহ, ফের এক মাসের লকডাউন ইংল্যান্ডে

Previous articleরমরমিয়ে টিউশন স্কুলশিক্ষকদের, বেকার গৃহশিক্ষকরা! রিপোর্ট তলব কেন্দ্রের
Next articleরাশিয়ার করোনা ভ্যাকসিনের ট্রায়াল এবার বাংলায়, বাছা হল সাগর দত্তকে