Sunday, May 18, 2025

দুর্গাপুর ব্যারেজ : সারাই শুরু হয়নি, জলসঙ্কট, উৎপাদন কমছে, অরাজক শিল্পাঞ্চল

Date:

Share post:

দুর্গাপুর ব্যারেজের লক গেট ভেঙেছে ৭২ ঘন্টা পেরিয়ে গিয়েছে। কিন্তু এখনও সেই লক গেট মেরামতের কাজই শুরু করা যায়নি। ব্যারেজ মেরামতে হাত দিতে না পারার জেরে জলসঙ্কট গোটা দুর্গাপুর এলাকা এবং বাঁকুড়ায়। ব্যারেজের জল বন্ধ করার পরবর্তী দিনের কথা ভেবে মাথায় হাত কৃষকদের। তাদের আশঙ্কা, বোরো ও রবি চাষে জল পাওয়া যাবে তো! পাশাপাশি ইতিমধ্যে দুটি থার্মাল পাওয়ারের দুটি ইউনিট জলের অভাবে বন্ধ করে দিতে হয়েছে। ফলে এখনই বিদ্যুৎ ঘাটতি ৭৫০ মেগাওয়াট। যার দরুণ শিল্পাঞ্চল এলাকায় লোডশেডিং শুরু হয়ে গিয়েছে। পাশাপাশি এদিন ডিপিএলের ৭নম্বর গেটের কাছে সাফাই করার সময় বোমা বিস্ফোরণে এক সাফাই কর্মীর মৃত্যুতে আতঙ্ক ছড়িয়েছে।

শনিবার সন্ধ্যায় দুর্গাপুরের লক গেট ভেঙে যায়। কেন ভাঙে? এলাকার কৃষক ও মৎস্যজীবীরা বলছেন, আসলে অসাধু ব্যবসার কারণেই এই বিপত্তি। মাছ ধরার জন্য কোনওরকম নিয়ম না মেনেই লক গেট খোলা হয়। আর জলের স্রোতে একদিক যে কারণে ভেঙে যায়। এই বেআইনি ব্যবসায়ে সরকারি আধিকারিকরাও যুক্ত বলে অভিযোগ। এরপর জল বন্ধ করে লক গেট মেরামতের চেষ্টা শুরু হয়।

প্রথম ২৪ ঘন্টা পেরিয়ে যায় কীভাবে জল বন্ধ করা হবে, তার ভাবনাচিন্তা করতেই। প্রথমে বালির বস্তা ফেলা শুরু হয়। কিন্তু তাতেও লাভ না হওয়ায় নামানো হয় ডাম্পার। এবার সেই ডাম্পার নামিয়ে দামোদরের জল আটকানোর জন্য মঙ্গলবার সন্ধ্যে পর্যন্ত কাজ হয়। এরপর সেই জমা জল সরাতে আরও ঘন্টা ছয়েকের সময় লাগবে। ফলে এই সময় ধরে চললেও কাজ শুরু করতে প্রায় রাত কিংবা সকাল হয়ে যাবে।

এর আগের অভিজ্ঞতা বলছে, সারাই করে চালু করতে কম করে ১৮ ঘন্টা লেগে যাবে। অর্থাৎ খুব দ্রুত হলেও ব্যারেজ মেরামত করে চালু করতে বৃহস্পতিবার লেগে যাবে বলে জানাচ্ছেন চিফ ইঞ্জিনিয়ার জয়ন্ত দাস। অনেকে বলছেন শুক্রবারও হতে পারে।

এই জলাভাবের কারণে সোমবারই মেজিয়া থার্মাল পাওয়ারের ৪৫০ মেগাওয়াটের একটি ইউনিট বন্ধ করে দিতে হয়েছে। পাশাপাশি, মঙ্গলবার দুর্গাপুর তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের একটি ইউনিট একই কারণে বন্ধ হয়ে যায়। এটি ৩০০ মেগাওয়াটের ইউনিট। ফলে জলের অভাবে ৭৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কমে গিয়েছে।

অন্যদিকে জল সরবরাহ বন্ধ থাকায় দুর্গাপুর, বাঁকুড়া, মেজিয়ায় জলকষ্ট শুরু হয়েছে। স্থানীয় পুরসভা জলের গাড়িতে জল দিচ্ছে। সেখানে শুধু অল্প খাওয়ার জল। দীর্ঘ লাইন। দুর্গাপুরের মেয়র জানাচ্ছেন, বস্তি এলাকায় জলের পাউচও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এই জল দেওয়া হচ্ছে নিয়ন্ত্রিত এলাকায়। এরপর জল কোথা থেকে আসবে, সে নিয়ে মাথার ঘাম পায়ে ফেলছে প্রশাসন। কিন্তু ব্যারেজ কর্তৃপক্ষের অপরিণামদর্শিতায় এলাকার মানুষ সমস্যা চরম সমস্যার মধ্যে পড়তে চলেছেন। বুধবার চরম আকার নেবে বলে ধারণা।

আরও পড়ুন-জমি বিবাদে পড়শিকে গুলি-কোপ, মৃত্যু ঘিরে উত্তেজনা চাঁচলে

spot_img

Related articles

পাকবিরোধী প্রচারে ভারত: জাপানসহ একাধিক দেশে তৃণমূল সাংসদ ইউসুফ পাঠান

ভারতে পাকিস্তানের জঙ্গি কার্যকলাপ নিয়ে ভারতের সহযোগী রাষ্ট্রগুলিতে প্রচার চালাবে কেন্দ্রের সরকার। সহযোগিতা করবেন বিরোধী দলের সংসদরাও। শনিবারই...

আন্দোলনের নামে গালিগালাজ! প্রকাশ্যে বিকাশ ভবনে আটকে থাকা ২ মহিলা কর্মীর বিস্ফোরক পোস্ট

আন্দোলনের নামে বৃহস্পতিবার বিকাশ ভবনকে ঘিরে যে হিংস্রতা, বর্বরতা, অসভ্যতা এবং ভাঙচুর-হামলার ঘটনা ঘটেছে তা দেখেছেন বাংলার মানুষ৷...

বাংলাদেশের সঙ্গে স্থল বাণিজ্যে লাগাম! পোশাক থেকে চিপস – জারি নির্দেশিকা

বাংলাদেশের সঙ্গে স্থল বাণিজ্যে ব্যাপক লাগাম টানল ভারতের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রালয় (Ministry of Commerce and Industry)। পোষাক...

নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে শুরু হল এডুকেশন ইন্টারফেস ২০২৫

তরুণ প্রজন্মের ভবিষ্যৎ তৈরিতে পূর্ব ভারতের বৃহত্তম শিক্ষা ও ক্যারিয়ার মেলা শুরু হল কলকাতায়। ক্যারিয়ার প্ল্যানার এডুফেয়ারের উদ্যোগে...