প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসার মধ্যেই পাহাড়-উত্তরবঙ্গ নিয়ে উদ্বেগ রাজ্যপালের

কিশোর সাহা

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির গুণগান করে উত্তরবঙ্গ সফর শুরু করেছিলেন। এবার মোদির কার্যক্রমের প্রশংসার ধারাবাহিকতা বজায় রেখে পাহাড়ের প্রথম সরকারি অনুষ্ঠানে গিয়ে দার্জিলিংসহ উত্তরবঙ্গের পরিস্থিতি নিয়ে কার্যত উদ্বেগ প্রকাশ করলেন পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়।

বুধবার দার্জিলিঙে হিমলয়ান মাউন্টেরিয়ারিং ইন্সটিটিউটের মাউন্টেন বাইক প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়ে রাজ্যপাল বলেন, “আমি ব্যক্তিগতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে দার্জিলিং পাহাড়-সহ উত্তরবঙ্গের সঙ্কট ও তার প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে বিশদে জানতে এখানে টানা থাকব”। সে জন্য তিনি এলাকার নানাস্তরের প্রতিনিধিদের সঙ্গেও কথাবার্তা বলবেন বলেও জানিয়েছেন।

শুধু তাই নয়, রাজ্যপাল জানান, আগামী ৮ নভেম্বরের পরে তিনি পাহাড়ের মিডিয়ার প্রতিনিধিদের সঙ্গেও সরাসরি কথাবার্তা বলতে চান। তিনি জানান, এলাকার নানা ব্যাপারে তিনি মিডিয়ার প্রতিনিধিদের মতামত শুনে নিজেকে সমৃদ্ধ করতে চেষ্টা করবেন।

নভেম্বরের শুরুতেই রাজ্যপাল এক মাসের উত্তরবঙ্গ সফর শুরু করেছেন। প্রথম দিন এনজেপি স্টেশনে নেমে সাংবাদিক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা করেন। তার পরে এদিন এইচএমআইয়ের পুরস্কার বিলি অনুষ্ঠানে গিয়ে স্বাস্থ্যরক্ষায় অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টসের ভূমিকা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর স্বাস্থ্য সচেতনতা, যোগাভ্যাসের বিষয়টি উল্লেখ করে করেন। পৃথিবীতে যোগ এখন কতটা সমাদৃত হয়েছে সে কথাও উল্লেখ করেন রাজ্যপাল। ওই অনুষ্ঠানে তাঁকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য এইচএমআই কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদও জানিয়ে দেন তিনি। এর পরে রাজ্যপাল এইচএমআইকে ১ লক্ষ ১ হাজার টাকা অর্থসাহায্যের কথাও ঘোষণা করেন।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য, রাখতে গিয়ে রাজ্যপাল পাহাড় সহ উত্তরবঙ্গের ক্রিটিকাল কনসিকোয়েন্সেস বুঝতেই টানা থাকার জন্য ব্যক্তিগতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলেও জানিয়ে দেন। কিন্তু, কী সঙ্কটজনক প্রসঙ্গে কোনও বিস্তারিত ব্যাখ্যা অবশ্য তাঁর বক্তৃতায় ছিল না।

রাজনৈতিক মহলের অনেকে মনে করছেন, পাহাড়ে বিমল গুরুং ফেরার সম্ভাবনা তৈরি হতে যে রোজ মিটিং-মিছিলে উত্তাপ ছড়িয়েছে সেটাও রাজ্যপালের অজানা নয়। তরাই-ডুয়ার্সেও তার প্রভাব পড়েছে। গ্রেটার কোচবিহার পিপলস পার্টি, কামতাপুর পিপলস পার্টি সহ নানা আন্দোলনের সঙ্গে যুক্তরা ফের সক্রিয় হয়েছেন। সে ব্যাপারেই রাজ্যপাল নানা সঙ্কটের কথা বলেছেন বলে তাঁদের মত।
তবে বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দলের উত্তরবঙ্গের নেতাদের একাংশ দাবি করেন, আসন্ন বিধানসভা ভোটের আগে পাহাড় ও সমতলে রাজ্যপাল কেন, কী করতে চাইছেন তা বুঝতে অনেকেরই অসুবিধে হচ্ছে না।

আরও পড়ুন:৯ ই উত্তরবঙ্গের উপাচার্যদের সাক্ষাৎ চেয়ে আমন্ত্রণ জানালেন রাজ্যপাল

Previous articleফেসবুকে ৩১২ কোটি টাকার ব্যবসা
Next articleঅফিস টাইমে চলবে ২০০ ট্রেন: রেল-রাজ্য বৈঠকে সিদ্ধান্ত