দূত মারফৎ যোগাযোগ, দিলীপ-মিহির বৈঠক কী রাতে না কাকভোরে

কিশোর সাহা

একজন কোচবিহারেই থাকেন। অন্যজন কোচবিহার সফরে পৌঁছেছেন। চুপিসারে দুজনের মধ্যে বৈঠক করাতে আসরে নেমেছেন উভয়ের অনুগামীরা। হয় গভীর রাতে না হলে বৃহস্পতিবার কাকভোরে দুজনের দেখা হতে পারে বলে দুই নেতার অনুগামীদের কয়েকজন জানিয়েছেন। একজন হলেন, স্বঘোষিতভাবে তৃণমূল থেকে বিচ্ছিন্ন নেতা তথা বিধায়ক মিহির গোস্বামী। অন্য ব্যক্তিত্ব হলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা সাংসদ দিলীপ ঘোষ।

সূত্র অনুযায়ী, দূত মারফৎ মিহিরবাবুর মনোভাব বুঝে নিতে চাইছেন দিলীপবাবু। পক্ষান্তরে, মিহিরবাবুও বিজেপির অন্দরে দলাদলি, খেয়োখেয়ি, গেলে কতটা জায়গা পাবেন, কতটা বিপাকে পড়তে পারেন সেই জল মাপছেন। ইতিমধ্যে দিলীপবাবু কোচবিহারে প্রকাশ্যে বলেও দিয়েছেন, তাঁর সঙ্গে সরাসরি কথা না হলেও দলের সাংসদ নিশীথ প্রামাণিক মিহিরবাবুর বাড়িতে গিয়েছেন। দুজনের মধ্যে যা কথাবার্তা হয়েছে তার উপরে ভিত্তি করে দিলীপবাবুর মন্তব্য, কেউ আসতে চাইলে তাঁকেই আগে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তার পরেই আগতকে সাদরে অভ্যর্থনা জানানোর দায়িত্ব বিজেপির।

আরও পড়ুন- নারায়ণী, গোর্খা ব্যাটালিয়ন গড়ছেন মমতা, উচ্ছ্বসিত দার্জিলিং টু কোচবিহার

বুধবার সকালে কোচবিহারে প্রাতভ্রমণে বেরিয়ে সাগরদিঘির চারধারে ঘোরেন দিলীপবাবু। সে্খানে লোকজনদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। তাঁকে দেখতে ভোরেও উপচে পড়ে ভিড়। বেলা বাড়লে কোচবিহারের পান্থ নিবাসে দলীয় বৈঠক করেন। সেখানে কোচবিহারের ৯টি বিধানসভা আসনেই আগামী ভোটে জয় নিশ্চিত করতে সকলকে ঝাঁপিয়ে পড়তে নির্দেশ দেন। দলের জেলা নেতৃত্বের কথা শুনে সকলকে চলতে হবে বলে তিনি জানিয়ে দেন। কোনও উপদলীয় কোন্দল বরদাস্ত করা হবে না বলেও স্পষ্ট বুঝিয়ে দেন তিনি। এর পরে দুপুরে দিনহাটায় গিয়ে মহামিছিলে অংশ নেন। সেই মিছিলের জেরে দিনহাটায় ব্যাপক যানজট হয়। তৃণমূলের স্থানীয় নেতাদের অবশ্য অভিযোগ, কোচবিহার পুর এলাকা সহ গোটা জেলা থেকে বিজেপি দিনহাটায় লোক জড়ো করে যানজট তৈরি করিয়েছে।

আরও পড়ুন- নারায়ণী, গোর্খা ব্যাটালিয়ন গড়ছেন মমতা, উচ্ছ্বসিত দার্জিলিং টু কোচবিহার

বস্তুত, দিলীপবাবুর এবারের কোচবিহার সফরে মিহিরবাবুর সঙ্গে দেখা করার বিষয়টি নিয়েই রাজনৈতিক মহলে চর্চা তুঙ্গে। সূত্র অনুযায়ী, দিলীপবাবু মিহিরবাবুর মনোভাব কিছুটা আঁচ করেছেন নিশীথবাবুর মাধ্যমে। মিহিরবাবু নিশীথবাবুকে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, বিজেপিও যদি কলকাতা কেন্দ্রীক পার্টি হিসেবে উত্তরবঙ্গে উপনিবেশ গড়তে চায় তা হলে তিনি ওই দলে যাবেন না। মিহিরবাবু এটাও জানিয়েছেন, কলকাতার নেতারা ঠণ্ডা ঘরে বসে যা সিদ্ধান্ত নেবেন তা মেনে নিতে হবে এমন মানসিকতা থাকলেও তিনি বিজেপিতে যাবেন না। উপরন্তু, কলকাতার পাশাপাশি দিল্লির কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গেও যোগাযোগের পরেই তিনি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন বলেও মিহিরবাবু জানিয়ে দিয়েছেন নিশীথবাবুকে। সেই দূত মারফৎ সব জানার পরে দিলীপবাবুও হিসেব করে পা ফেলছেন।

তবে দুজনের মধ্যে দেখা হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল বলে উভয়ের অনুগামীদের একাংশ জানাচ্ছেন। সেটা বৃহস্পতিবার দিলীববাবুর ভুটান্ত সীমান্তের দলসিংপাড়ায় অনুষ্ঠান রয়েছে তার আগে ভোরেও হতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে। ওই দিন শিলিগুড়িতে বিজয়া সম্মিলনী সেরে রাতেই দার্জিলিং মেলে কলকাতা ফেরার কথা দিলীপবাবুর।

এত ব্যস্ততার মাঝে দিলীপ-মিহির বৈঠক হয় কি না সেটাই দেখার!

আরও পড়ুন- কোন পথে বিহারে জয়? ব্যাখ্যা দিলেন মোদি

Previous articleকোন পথে বিহারে জয়? ব্যাখ্যা দিলেন মোদি
Next articleরাজ্যে শিক্ষক নিয়োগের দাবিতে সরকারের বিরুদ্ধে সরব বাম-কংগ্রেস