কোন পথে বিহারে জয়? ব্যাখ্যা দিলেন মোদি

আগে বিহারের নির্বাচন মানেই খবরের শিরোনামে থাকত- বুথ দখল, হিংসা। আর এখন আলোচনায় থাকে ভোটদানের হার কত শতাংশ। এটাই বিজেপির সুশাসনের ফল। আর সেই কারণেই ফের বিহারে জয় পেয়েছে এনডিএ। বুধবার সন্ধেয় দিল্লির বিজেপি কার্যালয়ের বাইরে ধন্যবাদ জ্ঞাপন অনুষ্ঠানে মন্তব্য করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। একটি রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন এবং দেশ জুড়ে বিভিন্ন জায়গায় উপনির্বাচনের ফলে সাফল্য আসায় এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা, রাজনাথ সিং-সহ বেশ কয়েকজন শীর্ষ স্থানীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বিহারের বিধানসভা নির্বাচন ও উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ-সহ বেশ কিছু রাজ্যে উপনির্বাচনের বিজেপির স্বপ্নের ব্যাখ্যা করতে গিয়ে নরেন্দ্র মোদি বলেন, যারা উন্নয়নের কাজে সৎভাবে থাকবে, তারাই জনসমর্থন পাবে। উন্নয়ন করলে তার ফল পাওয়া যাবে। বিহারে সুষ্ঠু নির্বাচন সংগঠিত করার জন্য স্থানীয় প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী। পরপর বিধানসভা নির্বাচনে ধরাশায়ী শরিক হওয়ার পরে, বিহারের নির্বাচনে বিজেপির খরা কাটার কারণেই এই সভা বলে কটাক্ষ করেছে বিরোধীরা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেকেই ভেবেছিল করোনা আবহে ভোট কম পড়বে। এই আশঙ্কা দূর করে দিয়েছেন ভোটদাতারা। দেশের বিকাশ, রাজ্যের বিকাশে এখন সবচেয়ে বড় আলোচ্য বিষয়।
আগামী দিনেও এটাই নির্বাচনের প্রধান বিবেচ্য বিষয় হবে। এটা যারা বোঝেনি তারা জায়গায় জায়গায় জামানত জব্দ হয়েছে বলে বিরোধীদের কটাক্ষ করেন মোদি।

আরও পড়ুন- লালা-ঘনিষ্ঠ ৬ কয়লা ব্যবসায়ীকে নোটিশ আয়কর দফতরের

মোদি স্মরণ করেন, কখনও বিজেপি মাত্র দুটি আসনে ছিল। আর এখন সারা দেশে বিজেপির পতাকা উড়ছে বলে দাবি তাঁর। তিনি বলেন, বিজেপির কাছে বড় অংশ “সায়লেন্ট ভোটার’ আছে, যাঁরা বারবার তাদের জেতায়। মোদির কথায়, দেশের মহিলা, গ্রামের দুঃস্থ মানুষই বিজেপির সায়লেন্ট ভোটার।

বিহারে জয়ের ব্যাখ্যা করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, সেখানে জয়ের রহস্য হল ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ, সবকা বিশ্বাস’। তাঁর মতে, অতিমারি পরিস্থিতিতে যেখানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থমকে গিয়েছিল, সেখানে ভারতের বিকাশ হয়েছে।

সরাসরি কোনও রাজ্যের নাম না করে মোদি অভিযোগ করেন, যেসব দল গণতান্ত্রিকভাবে বিজেপির মোকাবিলা করতে পারছে না, তারা দলীয় কর্মীদের খুন করছে। এই মৃত্যুর খালা দেশে চলবে না বলেও মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। বাংলায় বিজেপি কর্মীদের খুন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন রাজ্য নেতৃত্ব। এদিন নাম না করে মোদি সেই দিকেই ইঙ্গিত করেছেন বলে মত রাজনৈতিক মহলের।

পরিবারতন্ত্র নিয়েও বিরোধীদের কটাক্ষ করেন নরেন্দ্র মোদি। তাঁর অভিযোগ, কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী পর্যন্ত পরিবারতন্ত্রিক রাজনৈতিক দলের জাল ছড়িয়ে রয়েছে। এই ধরনের দলগুলি গণতন্ত্রের জন্য সবচেয়ে বড় বিপদ। বিজেপি তাদের দলে গণতন্ত্রকে বাঁচিয়ে রেখেছে বলে দাবি করেন প্রধানমন্ত্রী।

বক্তৃতা শেষে ফের লোকাল ফর ভোকালের বার্তা দেন নরেন্দ্র মোদি। বলেন, “শুধু দেওয়ালি নয়, আগামী দিনে আমাদের স্লোগান হবে ‘ভোকাল ফর লোকাল'”।

তবে বিরোধীদের প্রশ্ন একটি রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে জেতার পরে দিল্লি থেকে নরেন্দ্র মোদি, জে পি নাড্ডা, রাজনাথ সিংয়ের মতো নেতাদের নিয়ে এত বড় সভার আয়োজন কেন? রাজনৈতিক মহলের মতে, দীর্ঘদিনই বিভিন্ন রাজ্যের নির্বাচন বা উপনির্বাচনে ধরাশায়ী হচ্ছিল গেরুয়া শিবির। বিহার-সহ অন্যান্য উপনির্বাচনগুলিতে সাফল্য আসায় সেই খরা কিছুটা কেটেছে। সেটাকে সামনে রেখে কর্মীদের চাঙ্গা করতেই এই সভার আয়োজন বলে মত তাদের।

আরও পড়ুন- ‘দো গজ কি দূরি, মাস্ক জরুরি’, নিজের স্লোগানেই বরফ-ঠাণ্ডা জল ঢাললেন মোদি

Previous articleফিটনেসে সর্বোচ্চ, সাকিবের বিপ টেস্টে স্কোর ১৩.৭
Next articleদূত মারফৎ যোগাযোগ, দিলীপ-মিহির বৈঠক কী রাতে না কাকভোরে