রাজ্যে শিক্ষক নিয়োগের দাবিতে সরকারের বিরুদ্ধে সরব বাম-কংগ্রেস

বছরের পর বছর ধরে মামলা জটে আটকে রয়েছে একের পর এক শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া। ফলস্বরূপ রাজ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে চোখে পড়েছে শিক্ষকের অভাব। এই ইস্যুতেই এবার কলেজ ও স্কুলগুলিতে শিক্ষক নিয়োগের দাবীতে রাজ্য সরকারকে চিঠি দিল বাম কংগ্রেস। যে চিঠিতে আগামী ছয় মাসের মধ্যে রাজ্যের সমস্ত কলেজে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার আর্জি জানানো হয়েছে। এ প্রসঙ্গে বুধবার সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে সরকারের বিরুদ্ধে সরব হয়ে উঠলেন সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী ও বরিষ্ঠ কংগ্রেস নেতা আব্দুল মান্নান।

এদিন সংবাদমাধ্যমের সামনে উপস্থিত হয়ে সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘রাজ্যে বর্তমানে ৪৫২ টি কলেজ রয়েছে। যেখানে ৩৫ থেকে ৩৬ হাজার শিক্ষকের প্রয়োজন। অথচ শিক্ষক রয়েছে মাত্র ১১ হাজার।’ তার কথায়, ‘যাদের যোগ্যতা রয়েছে তারা দাবী করবে তাদের কাজের সুযোগ দেওয়া হোক। তারা পরীক্ষা দিয়েছ, পাস করেছে, ইন্টারভিউ হয়ে গেছে অথচ নিয়োগ হচ্ছে না। রাজ্যে নেট সেট পাস করা ছাত্র ছাত্রীর সংখ্যা ৩০ হাজারের বেশি। এমন অনেক কলেজ আছে যেখানে ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ শূন্য পদ। সরকার ক্ষমতায় আসার পর দু’বার সিএসসি পরীক্ষা নিয়েছে অথচ নিয়োগ করেনি।’

এরপরই রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে রীতিমতো তোপ দেগে সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘বাংলার শিক্ষাক্ষেত্রটাকে সর্বনাশ করার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। রাজ্য সরকার শিক্ষিত ছেলেদের প্রতি দায় দায়িত্ব পালন করছে না। শিক্ষার গুণমান প্রতিহত হচ্ছে। শিক্ষিত ছেলে মেয়েরা বঞ্চিত হচ্ছে। যেহেতু শিক্ষক নিয়োগ হচ্ছে না সেহেতু রিজার্ভেশনের নিয়ম বাতিল হয়ে যাচ্ছে।’ এরপরই তিনি বলেন, ”২০১৫ সালের টেট পাস করেছে অথচ এখনও পর্যন্ত নিয়োগ হয়নি। পড়ুয়াদের পাঁচ বছর থেকে সাত বছর নষ্ট হয়ে যাচ্ছে অথচ শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন ‘আমার কোনও দায়িত্ব নেই’।” এসএসসিতে সাত বছরে কোনও নিয়োগ হয়নি বলেও অভিযোগ করেন তিনি।’

আরও পড়ুন:দূত মারফৎ যোগাযোগ, দিলীপ-মিহির বৈঠক কী রাতে না কাকভোরে

এ প্রসঙ্গে সুজন চক্রবর্তী আরও জানান, ‘ইতিমধ্যেই নিয়োগের দাবিতে আমি ও মান্নান বাবু সরকারকে চিঠি দিয়েছি। অনুরোধ করেছি যাতে সরকার যে নির্দেশগুলি দিয়েছিল সেগুলো যেন যথাযথভাবে পালন করা হয়। এবং আগামী ৬ মাসের মধ্যে রাজ্যে যেন নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়।’ যদিও বামেদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে তৃণমূলের দাবি, শিক্ষক নিয়োগের গোটা প্রক্রিয়াটাই ঝুলে রয়েছে আদালতের দরজায়। রাজ্য সরকার চায় দ্রুত নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হোক। কিন্তু মামলা জটে আটকে থাকা নিয়োগ চাইলেও দ্রুততার সঙ্গে করা সম্ভব নয়। কারণ, সেটা বর্তমানে সরকারের হাতে আর নেই। আদালতের রায়ের উপরেই নির্ভর করছে গোটা প্রক্রিয়া। ফলে চাইলেও রাজ্য সরকারের আওতায় আর সেটা নেই।

Previous articleদূত মারফৎ যোগাযোগ, দিলীপ-মিহির বৈঠক কী রাতে না কাকভোরে
Next articleনীতীশ বললেন জনতাই মালিক, ধন্যবাদ প্রধানমন্ত্রীকেও