লক্ষ্য প্রবাসী আয় : দক্ষ কর্মী তৈরিতে ৫ হাজার কোটির প্রকল্প

খায়রুল আলম (ঢাকা) : বিশ্ব শ্রমবাজারে দক্ষ জনশক্তির চাহিদা বাড়লেও দেশে এ বিষয়ে উল্লেখযোগ্য কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। ফলে বাংলাদেশি প্রবাসীরা হাড়ভাঙা পরিশ্রম করলেও দক্ষতার অভাবে অন্য দেশের শ্রমিকের তুলনায় কম বেতন পেয়ে থাকেন। এমন পরিস্থিতিতে সরকার দক্ষ কর্মী তৈরির ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে। ‘উপজেলা পর্যায়ে ৭১টি কারিগরী প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন’ প্রকল্পের আওতায় ৪ হাজার ৮৪৮ কোটি ৬৭ লাখ ৯ হাজার টাকা ব্যয়ে সারা দেশে দক্ষ জনশক্তি তৈরি করা হবে।

যাতে প্রবাসী আয়ের প্রবাহ বাড়ে। দক্ষ শ্রমিক তৈরি করতে বর্তমানে দেশে ৪৭টি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে রয়েছে। এসব কেন্দ্রে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন নতুন নতুন ট্রেড চালুর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সেজন্য দেশের সব জেলায় প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (টিটিসি) নির্মাণের জন্য প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে। সরকার দক্ষ জনশক্তি তৈরির জন্য দেশের ৮ বিভাগে প্রথম পর্যায়ে ৭১ উপজেলায় প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন করতে যাচ্ছে। প্রকল্পের প্রস্তাবনা পরিকল্পনা কমিশনে পাঠিয়েছে জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো। এ বিষয়ে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা হবে। ২০২০ সালের জুলাই থেকে ২০২৩ সালের জুন মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে।

জনশক্তি, কমর্সংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর অতিরিক্ত পরিচালক মো. শামছুল আলম বলেন, “প্রকল্পের ডিপিপি (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা) পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে। প্রকল্পটি সঠিকভাবে বাস্তবায়িত হলে বৈদেশিক কর্মসংস্থান বাড়বে।” জনশক্তি, কমর্সংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরা জানায়, যেসব জেলা থেকে কম কর্মী বিদেশে যায়, সেসব জেলায় দক্ষ কর্মী তৈরি করে বিদেশে পাঠানোর উদ্যোগ নেওয়া হবে।

দক্ষ মানবশক্তি গড়তে বিভাগওয়ারী যেসব উপজেলায় প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নির্মাণ করা হবে সেগুলি হলো-

▪️ ঢাকা বিভাগ: শরীয়তপুরের জাজিরা, ডামুড্যা ও নড়িয়া। গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর, রাজবাড়ীর পাংশা, মাদারীপুরের শিবচর, গাজীপুরের কালীগঞ্জ, নরসিংদীর পলাশ, মুন্সীগঞ্জের লৌহজং ও ফরিদপুরের চর ভদ্রাসন।

▪️ ময়মনসিংহ বিভাগ: গফরগাঁও, ত্রিশাল, মুক্তাগাছা, নেত্রকোনা জেলার পূর্বধলা ও মোহনগঞ্জ, জামালপুর জেলার ইসলামপুর, টাঙ্গাইল জেলার মধুপুর।

▪️ চট্টগ্রাম বিভাগ: হাটহাজারী, ফটিকছড়ি, মীরসরাই, পটিয়া। কুমিল্লা জেলার বড়ুরা, লাকসাম। খাগড়াছড়ি জেলার দীঘিনালা, কক্সবাজারের চকরিয়া, নোয়াখালীর হাতিয়া, লক্ষ্মীপুরের কমলনগর, ফেনীর সোনগাজী।

▪️ রাজশাহী বিভাগ: রাজশাহী জেলার বাগমারা ও রাঘা। চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ, সিরাজগঞ্জ জেলার রায়গঞ্জ ও কাজীপুর, পাবনার বেড়া, নওগাঁ জেলার পত্নীতলা ও বদলগছি, নাটোরের বাগাতিপাড়া, জয়পুরহাটের পাঁচ বিবি।

▪️ রংপুর বিভাগ: কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর, গাইবান্ধার সাঘাটা, নীলফামারীর জলঢাকা, পঞ্চগড়ের আটওয়ারী, দিনাজপুরের বিরল, ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর, লালমনিরহাটের পাটগ্রাম।

▪️ খুলনা বিভাগ: খুলনা জেলার কয়রা, সাতক্ষীরার শ্যামনগর, ঝিনাইদহের মহেশপুর, কুষ্টিয়ার খোকশা, মাগুড়ার শালিখা, মেহেরপুরের মুজিবনগর, বাঘেরহাটের মোরেলগঞ্জ, নড়াইলের লোহাগড়া, চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা।

▪️ সিলেট বিভাগ: সুনামগঞ্জের তাহেরপুর, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ ও জগন্নাথপুর। সিলেটের ছাতক, গোয়াইনঘাট ও জয়িন্তাপুর, হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ।

▪️ বরিশাল বিভাগ: উড়িরপুর ও মেহেন্দিগঞ্জ, ভোলা জেলার চরফ্যাশন, পিরোজপুরের নেছারাবাদ ও নাজিরপুর, ঝালকাঠির রাজাপুর ও বরগুনার তালতলী।

 

Previous articleঅনলাইন নিউজ পোর্টাল ও OTT প্ল্যাটফর্মের কন্টেন্টে সরকারি নজরদারির নির্দেশিকা জারি
Next articleঅর্ণবের জামিন: সুপ্রিম কোর্টে প্রশ্নের মুখে মহারাষ্ট্র সরকার, জামিন মিলবে, জল্পনা তুঙ্গে