Wednesday, November 12, 2025

মেলালেন তিনি মেলালেন। এক মৃত্যু। আর এই মৃত্যু জবাব দিল অনেক কিছুর। ৪০ দিনের লড়াই শেষ করে সংসার ত্যাগ করলেন অপু। কিংবদন্তির প্রয়াণে শোকের ছায়া সব মহলে। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে শ্রদ্ধা জানাতে এদিন শেষযাত্রায় অংশ নেন অগণিত মানুষ। আর এই শেষ যাত্রায় পা মেলালেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। সৌমিত্রর মরদেহর সঙ্গে হাঁটলেন বাম নেতৃত্ব সূর্যকান্ত মিশ্র, বিমান বসু, সুজন চক্রবর্তীরা। অভিনেতার মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, ‘‘সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের মৃত্যু এক গভীর দু:খজনক ঘটনা। বাংলা চলচ্চিত্র চিরকাল তাঁর কাছে ঋণস্বীকার করবে। আমি তাঁর পরিবার পরিজনকে সমবেদনা জানাই।’’

আজীবন বামপন্থায় বিশ্বাসী ছিলেন তিনি। জীবনের শেষদিন পর্যন্ত বামপন্থা বিকল্প হিসেবেই মনে করেছেন তিনি। কোনও অবস্থাতেই নিজের বিশ্বাস থেকে সরে আসেননি। বরং সোচ্চারে জানিয়েছেন বামপন্থার প্রতি তাঁর আস্থা। বলেছেন, বামপন্থাই ভবিষ্যৎ। বামেদের অরাজনৈতিক মঞ্চে বারবার উপস্থিত থেকে বুঝিয়ে দিয়েছেন নিজের রাজনৈতিক অবস্থান। সিপিএমের মুখপত্র গণশক্তির শারদ সংখ্যায় শেষবার কলম ধরেছিলেন তিনি। সেই শারদ সংখ্যাতেও তিনি জানিয়ে গিয়েছেন, ‘‘বামপন্থাই বিকল্প।’’

২০১১ সালে তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পর তাদের সঙ্গেও সুসম্পর্ক রেখেছিলেন সদ্য প্রয়াত অভিনেতা এবং তাঁর পরিবার। ২০১৭ সালে তাঁকে বঙ্গবিভূষণ পুরস্কার দেয় তৃণমূল সরকার। রাজ্যের নির্বাচিত সরকারের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সেই পুরস্কার গ্রহণ করেছিলেন তিনি। করোনা আক্রান্ত হয়ে ৬ অক্টোবর বেলভিউ ক্লিনিকে ভর্তি হন বর্ষীয়ান অভিনেতা। এদিন অভিনেতার মৃত্যুর পর তাঁর কন্যা পৌলমী বসু রাজ্য সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। বলেছেন, ‘‘অভিভাবক হয়ে মুখ্যমন্ত্রী যেভাবে পাশে থেকেছেন তাতে আমি কৃতজ্ঞ।’’ এদিনই সাংবাদিকদের দেওয়া সাক্ষাৎকারে পৌলমী দীপ্ত কন্ঠে জানিয়েছেন, ‘‘উনি শুধু আমার বাবা নন। আমার কমরেড, আমার বন্ধু ছিলেন।’’

রবিবার সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের মৃত্যুর পর বেলভিউ ক্লিনিক থেকে তাঁর মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় গল্ফগ্রিনের বাড়িতে। সেখান থেকে টেকনিশিয়ান স্টুডিও হয়ে দেহ বেশ কিছুক্ষণ শায়িত থাকে রবীন্দ্র সদনে। রবীন্দ্র সদন থেকে পদযাত্রা করে দেহ আনা হয় কেওড়তলায়। পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সেখানেই শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে অভিনেতার। কিন্তু সবশেষে প্রমাণ করে দিল মরোণত্তর যাত্রাতেও বামপন্থাতেই বিশ্বাসী কিংবদন্তি। আর তাই সহযোদ্ধার সঙ্গে শেষবেলায় থাকলেন সূর্য-বিমান-সুজনরাও। এদিন বর্ষীয়ান অভিনেতার প্রয়াণে শোক প্রকাশ করেছেন রাজ্যসভার সাংসদ তথা বর্ষীয়ান আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, ‘‘বামপন্থার প্রতি তাঁর গভীর আগ্রহ ছিল। আমাদের সঙ্গে বহুবার রাস্তায় নেমেছেন। বড় মাপের অভিনেতা হলেও খুব সাধারণ জীবনযাপন করতেন। এক অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গেল।’’

আরও পড়ুন:দুঃখ করবেন না, আমরা বাবার জীবন সেলিব্রেট করব, বার্তা সৌমিত্র-কন্যার

Related articles

আবারও আন্তর্জাতিক মঞ্চে সিস্টার নিবেদিতা ইউনিভার্সিটি, চিনে ‘ব্রিকস স্কিলস কম্পিটিশন’-এ ভারতের প্রতিনিধিত্ব করবে ছাত্রছাত্রীরা

ফের ইতিহাস গড়ল সিস্টার নিবেদিতা ইউনিভার্সিটি (এসএনইউ)। গত বছরের পর আবারও এই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা নির্বাচিত হয়েছে চিনে অনুষ্ঠিত...

বিজেপিকে সুবিধা করে দিতেই BLA নিয়োগে নয়া নির্দেশিকা ! কমিশনকে তোপ তৃণমূলের

জাতীয় নির্বাচন কমিশনের নতুন নির্দেশিকা ঘিরে উত্তাল রাজনৈতিক মহল। বুথ লেভেল এজেন্ট (BLA) নিয়োগের নিয়ম পরিবর্তন করে এক...

বোধি ভবনের বার্ষিক উৎসব, সংবর্ধিত অভিনেত্রী মাধবী মুখোপাধ্যায়

দক্ষিণ কলকাতার অন্যতম সেরা CBSE বিদ্যালয় বোধি ভবন কলেজিয়েট স্কুলে মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত হল বার্ষিক অনুষ্ঠান। এই উপলক্ষে উত্তম...

সঙ্গীত পরিচালকের ভূমিকায় সৃজিত?

১৫ বছর টলিউডে রাজত্ব করেছেন। ঝুলিতে রয়েছে দুর্দান্ত সব ছবি। কিন্তু এবার সঙ্গীত পরিচালকের ভূমিকায় কাজ করতে চলেছেন...
Exit mobile version