প্রিয় পুলুকে হারিয়ে শোকস্তব্ধ কৃষ্ণনগর

কালীপুজোর রোশনাইয়ে আঁধার নেমে এলো বাঙালির মনে। চলে গেলেন ফেলুদা। সবার প্রিয় ‘অপু’ সংসার ত্যাগ করলেন। কিন্তু বাকিদের কাছে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় হলেও কৃষ্ণনগরবাসীর কাছে তিনি পুলু। প্রিয় পুলুর মৃত্যু সংবাদ পেয়ে শোকস্তব্ধ কৃষ্ণনগর।

পূর্ববঙ্গের কুষ্টিয়ায় আদি বাড়ি চট্টোপাধ্যায়দের। স্বাধীনতার বেশ কয়েকবছর আগে সেখান থেকে এপার বাংলায় চলে আসেন সদস্যরা। কৃষ্ণনগরেই জীবনের প্রথম দশ বছর কেটেছে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। কৃষ্ণনগরের সিএমএস স্কুলে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করেন তিনি। বাবা মোহিত চট্টোপাধ্যায়ের বদলির চাকরির জন্য হাওড়ার চলে আসেন তাঁরা। তবে শহরের বসন্তকুমার চট্টোপাধ্যায় লেন বা সোনাপটি এলাকায় এখনও বেঁচে জীর্ণ পৈতৃক ভিটে। বর্তমানে তা সিপিএমের এরিয়া কমিটির অফিস।

তিনতলা বাড়ির আনাচে কানাচে চট্টোপাধ্যায় পরিবারের ঐতিহ্যের ছাপ এখনও সুস্পষ্ট। ‘সুধা নিলয়ে’র তিনতলার ঘরে, উঠোনে সৌমিত্র সহ পরিবারের সদস্যরা নাট্যচর্চাও করতেন। এখনও দেওয়ালে মঞ্চের নকশা দেখা যায়। রবিবার মৃত্যু সংবাদ পেয়ে পুলুর কাছের বন্ধু, আত্মীয়দের মন ভারাক্রান্ত। ছেলেবেলার বন্ধুকে হারিয়ে শোকাচ্ছন্ন সন্ধ্যা মজুমদার। স্মৃতিচারণায় তিনি তুলে ধরলেন, ছেলেবেলার নানা কথা। সন্ধ্যা বলেন, ‘‘সৌমিত্র-সহ তাঁর ভাইয়েরা এই সোনাপট্টিতে বড় হয়েছিলেন। সিএমএসটি জনস হাইস্কুলে নবম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছিলেন,তারপর কলকাতায়চলে যান তাঁরা। সোনাপট্টির যে বাড়িতে সৌমিত্ররা থাকতেন সেটি তখনই বিক্রি করে দেওয়া হয়। পরে সেই বাড়িরই একটি অংশে সিপিএমের কার্যালয় হয়।’’

২০১৭সালে শেষবার কৃষ্ণনগরে একটি নাটক করতে গিয়েছিলেন। ২০১৮সালে যাওয়ার কথা থাকলেও শারীরিক অসুস্থার জন্য যেতে পারেননি বলে জানিয়েছেন শহরের নাট্যব্যক্তিত্বরা। শহরের নাট্যব্যক্তিত্ব শিবনাথ ভদ্র বলেন, চট্টোপাধ্যায় পরিবারের সবাই মিলে বাড়ির উঠোনে নাট্যচর্চা করতেন। সেখান থেকেই সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের নাট্যচর্চা শুরু। আবার স্কুলের এক শিক্ষকও নাটকের তালিম দিতেন। যখনই দেখা হয়েছে বারবার নস্টালজিয়ায় ডুবে গিয়েছেন। কিন্তু শিল্পীর তো মৃত্যু হয় না। আমাদের মধ্যে বেঁচে থাকবেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়।

আরও পড়ুন:কিংবদন্তির মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ বলিউডের

Previous articleছাদ ঢালাই সম্পন্ন, দ্রুততার সঙ্গে চলছে বিমানবন্দর মেট্রো প্রকল্পের কাজ
Next articleআদালতে জোর ধাক্কা, অতঃপর ট্রাম্পকে জয়ী ঘোষণার দাবিতে পথে নামল সর্মথকরা