সম্পত্তির পুরো হিসেব দিন, সস্ত্রীক মুকুল রায়কে ED-র কড়া নোটিস

বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি মুকুল রায় এবং তাঁর স্ত্রী-র স্থাবর, অস্থাবর সম্পত্তি এবং ব্যাঙ্ক লেনদেনের যাবতীয় তথ্য ED চেয়ে পাঠালো৷ পাশাপাশি তাঁকে CBI-এর সঙ্গে যোগাযোগের পরামর্শও দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত এই খবর ঘিরে সাতসকালেই চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে রাজনৈতিক মহলে৷ ED-র এই পদক্ষেপের পর বঙ্গ-রাজনীতিতে একাধিক প্রশ্ন উঠেছে৷
২০১৭ সালে মুকুল রায় বিজেপি-তে যোগ দেওয়ার পর জল্পনা তৈরি হয়, সারদা-নারদ মামলা থেকে বাঁচতেই তিনি বিজেপিতে নাম লিখিয়েছেন৷ নানা অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও মুকুলবাবুকে বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি করা হয়েছে সম্প্রতি।
রাজনৈতিক শিবিরের একটি অংশ মনে করছে, রাজ্যে আসন্ন ভোটে তাঁকে কাজে লাগাতে চাইছে বিজেপি৷ ফলে বিজেপি-র সঙ্গে থাকার সুবাদে মুকুলবাবু এই সব অভিযোগ থেকে ছাড় পেয়ে যেতে পারেন। তবে অন্য অংশের ধারনা, এটা বিজেপির বৃহত্তর এক কৌশলের অংশ৷ ভোটের আগে এ ধরনের ফতোয়া পাঠিয়ে বিজেপি নিজেদের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে চায়৷ মুকুলবাবু যদি গ্রেফতারও হন, তা হলেও লাভ বিজেপিরই। বিজেপি প্রচার করবে, দুর্নীতির ক্ষেত্রে বিজেপি সমঝোতা করে না৷ এই ছকেই ED-র এই নোটিশ জারি হতে পারে বলে এই অংশের ধারনা৷


আনন্দবাজারে প্রকাশিত এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ৩ জুলাই মুকুল রায়কে ED একটি চিঠি দেয়। তাতে যে নথিগুলি তলব করা হয়েছিলো, তার বেশির ভাগই মুকুল রায় ED-র কাছে পাঠিয়ে দিয়েছেন৷ তবে কিছু নথি তিনি দেননি৷ এবার নাকি সেই নথিই চাওয়া হয়েছে৷ তলব করা নথির মধ্যে আছে, মুকুলবাবুর স্ত্রীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের পূর্ণাঙ্গ বিবরণ, মুকুল রায়ের সম্পত্তির বিস্তারিত বিবরণ, ২০১৭-২০১৮ এবং ২০১৯-২০২০ অর্থবর্ষের আয়কর রিটার্ন ইত্যাদি ৷
২০১৫-১৬ সালে মুকুল রায় সারদা এবং নারদা মামলায় কার্যত নাজেহাল হয়েছেন৷ সারদা মামলায় তাঁর সঙ্গে সুদীপ্ত সেনের প্রত্যক্ষ যোগ ছিল বলে অভিযোগ এনেছিলেন সুদীপ্ত সেনকে কাশ্মীর পৌঁছে দেওয়া ড্রাইভার অরবিন্দ চৌহান। ওদিকে, নারদা-কাণ্ডে ম্যাথু স্যামুয়েলের স্টিং অপারেশনেও দেখা গিয়েছে মুকুল রায়কে৷ সেখানে তাঁকে সরাসরি টাকা নিতে দেখা না গেলেও IPS এসএমএইচ মির্জাকে বলতে শোনা যায়, মুকুল রায়ের কথাতেই যাবতীয় লেনদেন চলছে।

এরপরই মুকুল রায় দলবদল করেন। তৃণমূল ছেড়ে যোগ দেন বিজেপিতে৷ রাজনৈতিক মহলের ধারনা, নিজেকে রক্ষা করতে বিজেপিতে যাওয়া ছাড়া মুকুল রায়ের হাতে বিকল্প কিছু ছিলো না৷ বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরেও প্রশ্ন উঠেছে, ED- CBI-এর হাত থেকে এত সহজে কি মুক্তি পাবেন তিনি ?

তবে বাংলায় ভোটের মুখে বিজেপির এক শীর্ষ পদাধিকারীকে ED যেভাবে নোটিশ ধরালো, তাতে সঙ্গতভাবেই প্রশ্ন তুলছে রাজনৈতিক মহল, বিজেপি এই পদক্ষেপকে সামনে রেখেই কি নিজেদের ক্লিন ইমেজ নিয়ে জোরালো প্রচার চালাবে আগামী ভোটে ? সেই কাজেরই কি সলতে পাকানো পর্ব শুরু হয়েছে ED-র এই নোটিশের মাধ্যমে ?

আরও পড়ুন:তৃণমূলের সঙ্গে জোট হলে ভালো, না হলে একাই লড়বো বাংলায়, জানালো AIMIM

 

Previous articleবিরাটের সিদ্ধান্তকে সমর্থন ম্যাকগ্রার
Next articleসোনায় মোড়া শ’খানেক কফিন, মহামারির মিশরে পর্যটন ঘুরে দাঁড়ানোর আশা