একুশের ভোটের চালচিত্রে নতুন রং লাগাতে চাইছে আসাদউদ্দিন ওয়েইসি-র AIMIM বা ‘মিম’৷

বিহারে তেজস্বীদের মহাজোটে অংশ নিতে চেয়েছিলো ‘মিম’৷ মহাজোট এই আর্জি ফিরিয়ে দেয়৷ মহাজোটের শরিক হতে না পেরে তেজস্বী যাদবদের বিরুদ্ধে প্রার্থী দেয় ‘মিম’। ফল প্রকাশের পর দেখা যায়, ‘মিম’ ভোট কেটে নেওয়ায় একাধিক আসনে সামান্য ভোটে পরাজিত হয়েছে মহাজোট প্রার্থীরা৷ AIMIM-এর মুখপাত্র আসিম ওয়াকার এর পরেই বিহারে ফের NDA সরকার হওয়ার জন্য তেজস্বী যাদবকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন। মিম মুখপাত্র বলেছেন, “আসাদউদ্দিন ওয়াইসি পাটনায় সাংবাদিক সম্মেলন করে তেজস্বীকে সমর্থন করার কথা জানিয়েছিলেন। তেজস্বী যাদব মুখ্যমন্ত্রী হতে চাইলে আমরা বাধা দেব না বলেও স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন তিনি। আমরা সঙ্গে থেকে জোট গড়ে লড়তে পারি। কিন্তু তাঁকে আমাদের সঙ্গে কথা বলতে হবে। কিন্তু তেজস্বী এতটাই অহঙ্কারী যে কথা বলতেই আসেননি।”

ওয়েইসি-র AIMIM পশ্চিমবঙ্গের ভোটেও শাসক দলের জোটে শরিক হতে চাইছে। আনুষ্ঠানিকভাবে যদিও এই প্রস্তাব ‘মিম’ এখনও তৃণমূলকে দেয়নি, কিন্তু একটি সংবাদমাধ্যমে এই বার্তা ইতিমধ্যেই দিয়েছে ওয়েইসি-র দল৷
AIMIM-এর জাতীয় মুখপাত্র তথা বাংলার পর্যবেক্ষক সৈয়দ আসিম ওয়াকার (Syed Asim waqar) ঘোষণা করেছেন, বাংলার আসন্ন নির্বাচনে AIMIM জোট বাঁধতে চায় শাসক তৃণমূলের সঙ্গে৷ তবে তৃণমূল যদি রাজি না হয়,সেক্ষেত্রে AIMIM একাই লড়বে৷

এক সর্বভারতীয় সংবাদপত্রে AIMIM মুখপাত্র আসিম ওয়াকার বলেছেন, “বিহারের পর আমাদের পরবর্তী লক্ষ্য পশ্চিমবঙ্গ। আমরা বিধানসভা ভোটে প্রার্থী দেব। আমরা বিজেপি বিরোধী। বাংলায় বিজেপিকে ক্ষমতায় দেখতে চাই না। তাই তৃণমূলের সঙ্গে জোটে যেতে আমরা রাজি৷ জোটের দরজা খোলা। ‘মিম’-এর সঙ্গে হাত মেলানোর সিদ্ধান্ত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই নিতে হবে। জোট না হলে আমাদের কোনও ক্ষতি হবেনা, বিহারের মতো বাংলাতেও একাই লড়বে ‘মিম’।”
একইসঙ্গে তিনি বলেছেন,”গত ৩ বছর ধরে বাংলায় সংগঠন গড়তে যথেষ্ট পরিশ্রম করেছি। ভোটে লড়ার জন্য সংগঠন এখন তৈরি। বাংলায় দলের কমিটি ঘোষণা করা হবে দিনকয়েকের মধ্যেই”৷


বিহারে ফলপ্রকাশের দিনই অল ইন্ডিয়া মজলিস-এ- ইত্তেহাদুল মুসলিমিন বা AIMIM সুপ্রিমো সাংসদ আসাদউদ্দিন ওয়েইসি ঘোষণা করেছিলেন, “এবার গন্তব্য পশ্চিমবঙ্গ”। বাংলার ভোটে প্রার্থী দেবে তাঁর দল৷ বলেছিলেন, মুর্শিদাবাদ, মালদহ এবং উত্তর দিনাজপুরের সংখ্যালঘুদের মধ্যে ‘মিম’-এর জনপ্রিয়তা বাড়ছে। দক্ষিণবঙ্গে হাওড়া, উত্তর ২৪ পরগনা ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় সংগঠন রয়েছে ওয়েইসির দলের। বিহার ভোটে ৫টি আসন জিতেছে ‘মিম’। তার মধ্যেই ৪টিই উত্তর দিনাজপুর ও মালদহের সীমানায়। রাজনৈতিক মহলের ধারনা, এই ফল এবং বিহারে জেতা আসনের ভৌগলিক অবস্থান বিবেচনা করেই বাংলার ভোটে ওয়াইসির দল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে চাইছে৷ প্রসঙ্গত, বিহার ভোটে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পর ফটো-ফিনিশে NDA জিতেছে ৷ বিরোধী মহাজোট সামান্য ব্যবধানে পরাজিত হয়েছে৷ NDA ও মহাজোটের লড়াইয়ে মাঝে থেকে গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর হয়ে ওঠে ‘মিম’৷ ভোটপ্রচারেই এই ওয়াইসি বলেছিলেন, তারা যে কোনও ফলাফলকে প্রভাবিত করতে পারে৷ ফলপ্রকাশের পরে দেখা গিয়েছে আরজেডি তথা মহাজোটের ভোট কেটে সত্যিই ফলাফলকে প্রভাবিত করেছে ‘মিম’৷
বিহারের এই ফল এবং ফলপ্রকাশের পরেই ওয়েইসি-র বাংলায় আসার ঘোষণা কিছুটা হলেও চিন্তায় ফেলছে তৃণমূলকে৷ যদিও দিনদুয়েক আগে তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেছেন, “AIMIM মুসলিম দল হিসাবে পরিচিত। তাঁরা সেই ভোট নিয়ে বিজেপিকে সাহায্য করতে চায়। তবে বাংলায় ওয়েইসি কোনও ফ্যাক্টর নয়৷ এখানে তিনি কিছু করতে পারবেন না।”


আরও পড়ুন:বাংলায় প্রচারের ঝাঁঝ বাড়াতে শহরে এলেন বিজেপির অমিত মালব্য
