দেশীয় ভ্যাকসিনের ট্রায়াল ডোজ নিলেন রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী, জানালেন অভিজ্ঞতার কথা

হরিয়ানায় দেশীয় ভ্যাকসিন ভারত বায়োটেকের তৈরি করোনা-রোধী টিকার ট্রায়াল শুরু হল। ৬৭ বছর বয়সি অনিল ভিজ আগেই ট্যুইট করেছিলেন, তিনিই হরিয়ানার প্রথম স্বেচ্ছাসেবক হিসাবে ভ্যাকসিনের ডোজ নেবেন। সেই মতই অম্বালার একটি হাসপাতালে কোভ্যাকসিনের ডোজ নেন বিজেপি নেতা তথা হরিয়ানার স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

ভারত বায়োটেকের এই করোনা-রোধী ভ্যাকসিনের ট্রায়ালে অংশ নিয়ে দু’ঘণ্টা পরই নিজের দফতরে বসে কাজ শুরু করলেন ভিজ। ভ্যাকসিন প্রয়োগ করার পর সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানালেন, “ভারতীয়দের জন্য এটা গর্বের বিষয় যে ভারত বায়োটেকের মতো স্বদেশীয় সংস্থা এগিয়ে এসেছে করোনা প্রতিরোধে ভ্যাকসিন তৈরির জন্য। যাতে মানুষের আতঙ্ক দূর হয়। তাই আমি নিজেই স্বেচ্ছাসেবক হিসাবে ভ্যাকসিনের ট্রায়ালে অংশ নিয়েছি। ভ্যাকসিন তৈরিকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।”

৬৭ বছরের বিজেপি নেতা অনিল ভিজ ডায়াবেটিক রোগী। তিনিই হরিয়ানার প্রথম যিনি ভ্যাকসিনের ট্রায়ালে অংশ নিলেন। কোভ্যাক্সিনের তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল চলছে গোটা দেশে। অনিল ভিজ জানিয়েছেন, “অতিমারির জেরে বহু মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা পাল্টে গিয়েছে। কেউ কোনও অনুষ্ঠানে, আত্মীয়ের বাড়িতে যেতে ভয় পান। পরিজনদের সঙ্গে দেখা করতে পারছেন না। সিনেমা হলে যেতেও আতঙ্কিত। শিশুরা স্কুলে যেতে পারছে না। কলেজ, বাস সবই খালি। মানুষ এই অতিমারি থেকে মুক্তি পেতে চাইছেন। আর তার জন্য ভ্যাকসিন দ্রুত আসা ভীষন জরুরি। আর সেইজন্য এই গুরুদায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছি।”

ভ্যাকসিন নেওয়ার অভিজ্ঞতা কেমন ছিল? জানালেন অনিল ভিজ।

সে রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানালেন, “চিকিৎসকদের উপর পূর্ণ আস্থা রয়েছে। প্রথম দুই পর্যায়ের ট্রায়ালে বহু বিধিনিষেধ ছিল। কিন্তু তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল বেশি ঝুঁকিপূর্ণ এবং বিশেষ ক্যাটাগরির মধ্যে পড়ে। এক মিনিটের জন্যও ভয় পাইনি। ভ্যাকসিন শরীরে প্রয়োগের পর দফতরে এসে কাজও করেছি অন্যান্য দিনের মতো।”

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, এক ঘণ্টা ভিজকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছিল। অন্তত বছর খানেক তাঁর শারীরিক অবস্থার উপর নজর রাখতে হবে। এবং প্রতি মাসে তাঁর রক্তপরীক্ষা করা হবে। ভিজ জানিয়েছেন, “আমার কোনও সমস্যা নেই তাতে। চিকিৎসকরা আমার শরীরে যে কোনও পরীক্ষা করতে পারেন। যখন খুশি।”

সোমবারই ভারত বায়োটেক দেশে ২৬ হাজার স্বেচ্ছাসেবকের ওপর কোভ্যাক্সিনের তৃতীয় দফার ট্রায়াল শুরু হচ্ছে বলে ঘোষণা করে। ড্রাগস কন্ট্রোল জেনারেল অব ইন্ডিয়া তা অনুমোদন করেছে। সূত্রের খবর অনুযায়ী, আইসিএমআরের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে হবে এই ট্রায়াল হবে। এবং তা হবে দেশে সবচেয়ে বড় কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের ক্লিনিকাল পরীক্ষা।

কোভ্যাক্সিনের প্রথম, দ্বিতীয় ধাপের ট্রায়ালে প্রায় ১০০০ জনের ওপর তার কার্যকারিতা পরীক্ষা করা হয়েছিল। সেই পরীক্ষায় ইতিবাচক ফল মেলে। দেখা যায়, সেটি নিরাপদ, প্রতিরোধক্ষমতা তৈরি করেছে। ভারত বায়োটেকের বিবৃতি অনুসারে হরিয়ানায় পন্ডিত ভাগবত দয়াল শর্মা ইউনিভার্সিটি অব হেলথ সায়েন্সেস ও ফরিদাবাদের ইএসআইসি হাসপাতালকে ভারতজুড়ে বাছাই করা ট্রায়াল কেন্দ্রগুলির তালিকায় রাখা হয়েছে।

আরও পড়ুন : কুলভূষণকে পাকিস্তানের হাতে তুলে দেওয়া ইরানের সেই জঙ্গি খতম বালুচিস্তানে

 

Previous articleশুভেন্দু, সৌগত-সহ ৫ সাংসদের বিজেপিতে আসা সময়ের অপেক্ষা! বিস্ফোরক দাবি অর্জুনের
Next article“পুনর্জন্ম”, শ্রাদ্ধের দিনই বাড়ি ফিরলেন করোনাজয়ী!