Monday, August 25, 2025
জয়ন্ত চক্রবর্তী, ক্রীড়া সাংবাদিক

সাংবাদিকতা করার সুবাদে নিজের এই চোখে চাক্ষুস করেছি অনেক কিছু। চাক্ষুস করেছি ফুটবল বিশ্বকাপ ও। আর এই ফুটবল বিশ্বকাপ কভার করার দৌলতে আলাপ হয় ফুটবল রাজপুত্র দিয়েগো মারাদোনার সঙ্গে।

আজ আমার বেশ মনে পড়ছে মারাদোনার কথা। তাঁর প্রয়ান কালে ভেসে আসছে নানান স্মৃতি। ১৯৯০ সাল। প্রথম নিজের চোখের সামনে দেখলাম ফুটবল রাজপুত্রকে। ইতালির ট্রেগোরিয়ায় সেই সময় অনুশীলন করছিল আর্জেন্তিনা। সেই অনুশীলন ছিল ক্লোস ডোর। তবে সার্জিও নামে এক সাংবাদিকের সহায়তায় সেই অনুশীলনে ঢোকার অনুমতি মেলে। সেখানে ঢুকতেই দেখি বলের ওপর বসে আছেন দিয়েগো। ইংরেজি বলতে পারতেন না মারাদোনা। কিন্তু স্প‍্যানিশ ভাষায় কি যেন গড়গড় করে বলে যাচ্ছিলেন তিনি। ভাষাগত সমস্যা হওয়ায় মারাদোনার মুখের দিকে তাকিয়ে থাকি। সার্জিও অবশ‍্য তা অনুবাদ করে জানান, কেন অনুশীলনে নামেননি তিনি সেই কথাই জানাচ্ছিলেন দিয়েগো।

নব্বইয়ের দশকে দ্বিতীয়বার সাক্ষাৎ হয় মারাদোনার সঙ্গে। বিখ্যাত সাংবাদিক জে সি দাসের সৌজন্যে।সেই সময় ইতালির নেপোলিতে থাকতেন ফুটবলের রাজপুত্র। একদিন জে সি আমাকে নিয়ে গেল মারাদোনার বাড়িতে। সেই সময় বাড়িতে ছিলেন না তিনি। তবে খানিক বাদেই হাজির হন তিনি। একটি লাল রং এর স্পোর্টস ক‍্যার চালিয়ে আসেন মারাদোনা। শুধু তাই নয় গাড়ি থেকে নেমে বল পায়ে নাচাতে নাচাতে ড্রয়িং রুমে ঢোকেন তিনি। সেই ছবি যেন আজও ভেসে আছে চোখের সামনে।

এরপর ১৯৯০ বিশ্বকাপে ফুটবলার মারাদোনাকে দেখি অসাধারণ ভাবে। আর্জেন্তিনার প্রতিপক্ষ ইতালি। সেই ম‍্যাচে কি ভাবে বোকা বানিয়েছিল প্রতিপক্ষ ফুটবলারদের। বল ছাড়া সাইডলাইনের পাশ থেকে দৌড় শুরু করলেন দিয়েগো। ইতালির দুজন ডিফেন্ডার তাকে আটকাতে আসে, আর এরই সুযোগ নিয়ে গোল করে যান ক‍্যানিলিয়া।

ফুটবলার মারাদোনা ছাড়াও সাংবাদিক মারাদোনাকে পাই আমি। ২০০২ সালে দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপান বিশ্বকাপে মারাদোনাকে পেলাম সাংবাদিক হিসাবে। সেই সময় তিনি ল‍্যামন্ড পত্রিকায়র হয়ে স্পেশাল স্টোরি করছিলেন।

এত গেল বিদেশের মাটিতে মারাদোনার কথা। দেশের মাটিতেও দু- দুবার চাক্ষুস করার সুযোগ হয়েছে আমার। ২০০৮ এবং ২০১৭। এই দুই বছর ভারতে আসেন ফুটবলের রাজপুত্র। আজও মনে আছে, ২০০৮ সালের সেই মজার কথা। ২০০৮ সালে যখন মারাদোনা ভারতে আসেন, সেই সময় পশ্চিমবাংলার ক্রীড়ামন্ত্রী ছিলেন সুভাষ চক্রবর্তী। সুভাষ চক্রবর্তী মাথায় টুপি পড়তেন বলে, সুভাষ চক্রবর্তীকে দেখলেই মারাদোনা বলতেন, ‘দ‍্যা হ‍্যাট হ‍্যাস ক‍্যাম’।

বুধবার রাতে যখন মারাদোনার মৃত্যুর খবরটা পাই, তখন দিয়ে যেন সব পুরোনো স্মৃতি ঘুরে ফিরে আসছে, নিজের মনের ডাইরিতে। মনে হচ্ছে এখনও আমার পাশেই রয়েছে মারাদোনা।

আরও পড়ুন- এক দেশ,এক নির্বাচন-এর পক্ষে সওয়াল প্রধানমন্ত্রীর

Related articles

গাজায় সাংবাদিকসহ ১৯ জনের মৃত্যু! নীরব নেতানিয়াহু

দুর্ভিক্ষপীড়িত গাজায় ফের রক্তক্ষয়ী হামলা চালাল ইজরায়েলি সেনা। সোমবার দুপুরে গাজার খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালে একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র ও...

শ্রমশ্রী প্রকল্পে ভুয়ো আবেদন রুখতে কড়া নজরদারি রাজ্যের 

ঘরে ফেরা পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য ঘোষিত শ্রমশ্রী প্রকল্পে প্রকৃত ও যোগ্য প্রার্থীরাই সুযোগ পান, তা নিশ্চিত করতে বিশেষ...

আদিবাসী উন্নয়ন আরও সুদূর প্রসারি করার বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর, সৌজন্য উড়িয়ে বৈঠকে অনুপস্থিত বিজেপি

আদিবাসী উন্নয়ন নয়, রাজনীতিই যে তাদের লক্ষ্য তা আরও একবার প্রমাণ করল বিজেপি (BJP)। আমন্ত্রণ পেয়েও সৌজন্যের জবাব...

DHFC-র হারের পরই ক্লাব থেকে কর্তাদের ছোট করার চেষ্টা, জবাব দিলেন মানস

ডুরান্ড কাপের(Durand Cup) ফাইনালে পৌঁছে সকলকে চমকে দিয়েছিল ডায়মন্ডহারবার এফসি(DHFC)। বাংলার ফুটবলকে যে দল নতুন স্বপ্ন দেখাচ্ছে, তাদের...
Exit mobile version