শুভেন্দু পর্বের মাঝেই শান্তনুকে নিয়ে জোর জল্পনা! বিজেপি সাংসদকে বার্তা তৃণমূলের

রাজ্য রাজনীতিতে এখন যুযুধান দুই পক্ষ। শাসক তৃণমূল, বিরোধী বিজেপি। তাই একুশের বাংলায় মেগা ইভেন্টের আগে একে অপরকে টেক্কা দিতে কোমর বেঁধে ময়দানে নেমে পড়েছে। প্র্যাকটিস ম্যাচ চলছে একেবারে পেন্ডুলামের মতো। আজকের জোড়াফুল ঝটকা দিলে, কাল চমক দিচ্ছে পদ্মফুল। সব মিলিয়ে লড়াই হাড্ডাহাড্ডি। ঘর গোছাতে সুযোগ বুঝে একে অপরের ঝুলিতে হাত বাড়াচ্ছে। শুভেন্দু অধিকারী পর্বের মাঝেই এবার জোর জল্পনা রাজ্যের এক সাংসদকে নিয়ে। ঘনিষ্ঠ মহলে অভিযোগ, তাঁকে সাংসদ করার সময়ে বিজেপি যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তার কিছুই পূরণ করেনি। রয়ে গিয়েছে আক্ষেপ। সম্প্রতি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের সভা হোক কিংবা অমিত শাহের সফর, দেখা মেলেনি বনগাঁর বিজেপি সাংসদের। একের পর এক দলীয় কর্মসূচিতে যোগ না দেওয়া এবং আচমকা “নিষ্ক্রিয়” হয়ে যাওয়ায় এবার বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুরের রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে তৈরি হয়েছে জোর জল্পনা।

বিজেপির সঙ্গে তাঁর দূরত্ব বাড়ছে, শান্তনু ঠাকুরকে নিয়ে এমন গুঞ্জনের মাঝে তা আরও উস্কে দিলেন উত্তর ২৪ পরগনা জেলার তৃণমূল শীর্ষনেতা তথা খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। বাগদার এক কর্মিসভা থেকে শান্তনু ঠাকুরের উদ্দেশে তাঁর স্পষ্ট বার্তা, সে যেন ফের তৃণমূলে ফিরে আসে।

রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর বিভিন্ন ইস্যুতে পুরোনো দিনের নেতা-কর্মীদের দলের সঙ্গে তৈরি হওয়া দূরত্ব মেটাতে, এখন অনেকটাই নমনীয় মনোভাব দেখাচ্ছে ঘাসফুল শিবির। সেখানে মতুয়াদের মন ফিরে পেতে শান্তনু ঠাকুর বড় ফ্যাক্টর হতে পারে বলে মনে করছে থিঙ্ক ট্যাঙ্ক। তাই শান্তনু ঠাকুরে নিজেদের দিকে টানতে পদক্ষেপ নিচ্ছে শাসক শিবির, এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ।

বাংলার ভোটে মতুয়া সম্প্রদায় চিরকালই বড় ফ্যাক্টর।রাজ্যের ২৯৪ টি আসনের মধ্যে কমপক্ষে ৭০ টিতে মতুয়া সম্প্রদায়ের উপস্থিতি রয়েছে। কমপক্ষে পাঁচটি আসনে ডিসাইডিং ফ্যাক্টর বলে মনে করা হয়। গত লোকসভা নির্বাচন থেকে মতুয়াদের একটি বড় অংশের সমর্থন পেয়েছে বিজেপি। বিশেষ করে NRC ও CAA পরবর্তী পর্যায়ে উদ্বাস্তুদের নাগরিকত্ব দেওয়ার প্রশ্নে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল গেরুয়া শিবির। কিন্তু বছর পেরিয়ে গেলেও তা এখনও কার্যকর হয়নি। বা ভোটের আগে দেওয়া প্রতিশ্রুতি মতো এখনও নাগরিকত্ব দিতে পারেনি বিজেপি সরকার।

এই ইস্যুতে শান্তনু ঠাকুর অমিত শাহকে চিঠিও দিয়েছিলেন বলে জানা যায়। মতুয়া অধ্যুষিত বনগাঁ ও তৎসংলগ্ন অঞ্চলের পরিস্থিতি ক্রমশ বিজেপির প্রতিকূলে যা তা স্পষ্ট হচ্ছে। সেই সুযোগকে কাজে লাগাতে চায় শাসক শিবির। মতুয়া ভোট ফের নিজেদের ঝুলিতে আনতে মরিয়া তৃণমূল। তারই প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে শান্তনু ঠাকুরকে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের এমন বার্তা বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।

প্রসঙ্গত, আগামী ৯ ডিসেম্বর বনগাঁর গোপালনগরে সভা করবেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারই প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে ঘাসফুল শিবির। মুখ্যমন্ত্রীর সেই সভার আগে দলের কর্মীদের সংঘবদ্ধভাবে লড়াইয়ের বার্তা দিয়ে পুরনো কর্মীদের ফের দলে ফেরার আহ্বান জানাচ্ছেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকরা।

আরও পড়ুন-‘শুভেন্দু তো একা যাবে না, বাংলা দেখবে ধস নামছে তৃণমূলে’, এবার তোপ মান্নানের