শীত পড়ার সঙ্গে সঙ্গে শহরের বাতাসে বাড়ছে ‘বিষ’। বাতাসে মাত্রা বাড়ছে অতি সূক্ষ্ম ধূলিকণার। কলকাতায় বায়ুদূষণের মাত্রা পৌঁছেছে খুব খারাপ জায়গায়। শুক্রবার সকাল থেকেই শহরের একাধিক জায়গার বায়ুদূষণ মাত্রা ছাড়িয়েছে জানান দিচ্ছে ন্যাশনাল এয়ার কোয়ালিটি ইন্ডেক্স। শহরের বায়ুদূষণ মাপা কেন্দ্রগুলির মধ্যে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রের সূচক রয়েছে খানিকটা ভয়ের জায়গাতেই।

কলকাতায় রাতের তাপমাত্রা স্বাভাবিক থাকলেও দিনের বেলায় স্বাভাবিকের ওপরে পারদ। ভোরের দিকে শীতের আমেজ থাকলেও বেলা বাড়লেই তা উধাও। কলকাতার বাতাসে জলীয়বাষ্পের পরিমাণ ৯০ শতাংশের বেশি থাকায় আদ্রতায় অস্বস্তিও কিছুটা হচ্ছে। আগামী কয়েকদিন এমনই থাকবে আবহাওয়া। আপাতত জাঁকিয়ে শীত এর কোনো সম্ভাবনা নেই। উত্তরবঙ্গের পাহাড়ি এলাকায় হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা। আজ সকালে স্বাভাবিক ছিল সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৬.৫ ডিগ্রি। গতকাল সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল স্বাভাবিকের ১ ডিগ্রি উপরে ২৮.৯ ডিগ্রি। সোমবার পশ্চিমী ঝঞ্ঝা ঢুকছে জম্মু-কাশ্মীরে। মঙ্গলবার থেকে ওই এলাকায় বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা। আগামী কয়েকদিনে বৃষ্টি ও তুষারপাতের সম্ভাবনা ও অরুণাচল প্রদেশেও। বঙ্গোপসাগরের ঘূর্ণিঝড় বুরেভি শক্তি হারিয়ে গভীর নিম্নচাপে পরিণত।

করোনাভাইরাসের কারণে দীর্ঘদিন থমকে ছিল স্বাভাবিক জনজীবন। লকডাউনের জন্য কোনও যানবাহন চলাচল করেনি শহরে। মার্চ মাসের শেষ সপ্তাহে শহরের দূষণের মাত্রা নেমেছিল খুব ভাল সূচকেই ছিল। তারপর শুরু বর্ষাকাল। তার ওপর চলতি বছরে এবার কালীপুজোয় হাইকোর্টের নির্দেশে বাজি ফাটেনি। তার জেরে ওই সময় শহরের বাতাসে বাজির ধোঁয়া থেকে যে পরিমাণ দূষণ হয় তাও এবার ছিল না। ফলে দীর্ঘদিন দূষণ মুক্ত বাতাস উপভোগ করেছে কলকাতাবাসী।

কিন্তু ডিসেম্বর মাস পড়তেই ধীরে ধীরে বাড়তে শুরু করল কলকাতার বাতাসে দূষণর পরিমাণ। গত কদিন ধরেই ধীরে ধীরে বার ছিল বায়ুদূষণের সূচক। শুক্রবার তা মারাত্মক পর্যায় পৌঁছয়। ন্যাশনাল এয়ার কোয়ালিটি ইন্ডেক্স বলছে এদিন রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে সকাল ন’টার সূচক ছিল ৩৮৭ যা অত্যন্ত খারাপ। বেলা ১২ টায় তা বেড়ে হয় ৪০৮। এর পাশাপাশি রবীন্দ্র সরোবর বাদে সব জায়গাতেই দূষণের মাত্রা পৌঁছয় খুব খারাপ পর্যায়। এদিন বালিগঞ্জে দূষণের মাত্রা ছিল সকাল ন’টায় ৩১৪, যা বেলা বারোটায় হয় ৩১৭। ফোর্ট উইলিয়ামে সকাল ন’টায় ছিল ৩১৬, বেলা বারোটায় পৌঁছে ৩২৪। ভিক্টোরিয়াতে সকাল ন’টায় ছিল ৩১১, আর বেলা বারোটায় ছিল ৩১৬। বিধাননগরে সকাল ন’টায় ছিল ৩২১, বেলা বারোটায় ছিল ৩২৪ যাদবপুরে সকাল ন’টায় ছিল ৩৯৫, আর বেলা বারোটায় তা পৌঁছয় ৩১০। রবীন্দ্র সরোবরে সকাল ন’টায় দূষণের মাত্রা রেকর্ড হয়েছে ২৬২ যা মন্দের ওপর ভালো, আর বেলা বারোটায় ২৭১।


আরও পড়ুন-কৃষি আইন কৃষকের মৃত্যু পরোয়ানা: কৃষকদের সমর্থনে টুইট অভিষেকের

