শীতেও রাজনীতির উত্তাপ বাড়ছে শিলিগুড়ির! কেনই বা নজর রাখছেন খোদ ডিজি

কিশোর সাহা

শীতকাল শুরু হলেও শিলিগুড়ির আবহাওয়া কিন্তু এখনও বেশ গরম। রাজনৈতিক পরিস্থিতি দেখলে রবিবার ও সোমবার তা আরও গরম হয়ে যাবে। কারণ, রবিবার বিমল গুরুংয়ের সভায় লক্ষাধিক লোকের সমাবেশ হবে বলে উদ্যোক্তারা দাবি করেছেন. তার পর দিন সোমবার বিজেপির যুব সংগঠনের উত্তরকন্যা অভিযানেও গোটা উত্তরবঙ্গ থেকে দলের লোকজন এনে শিলিগুড়িতে হাজির করার চেষ্টা করছেন উদ্যোক্তারা। তাতেই শিলিগুড়ির পুলিশ-প্রশাসনের নাওয়া-খাওয়া, ঘুম আপাতত প্রায় শিকেয় উঠেছে।

পুলিশ-প্রশাসন সূত্রের খবর, সামগ্রিক পরিস্থিতির উপরে নজরদারি করছেন খোদ রাজ্য পুলিশের ডিজি। শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেট এলাকায় দুটি কর্মসূচি হবে। কিন্তু, রাজ্য পুলিশের উত্তরবঙ্গের আইজির দফতর থেকেও প্রয়োজনীয় মনিটরিং করা হচ্ছে। রাজ্য পুলিশের উত্তরবঙ্গের গোয়েন্দা সেল-এর পক্ষ থেকেও নিয়মিত রিপোর্ট পাঠানো হচ্ছে সদর দফতরে।

পুলিশ-প্রশাসনের প্রস্তুতির বিষয়টি কেমন দেখা যাক। যেমন, কেউ হিসেব রাখছেন ব্যারিকেডের সরঞ্জাম পর্যাপ্ত রয়েছে কি না! কেউ জলকামান ঠিকঠাক কাজ করে কি না সেটার মহড়ায় ব্যস্ত। কাঁদানে গ্যাস, ঢাল, হেলমেট, লাঠির সংখ্যা যাতে প্রয়োজন অনুযায়ী থাকে সেটা দেখার জন্যও পৃথক টিম রয়েছে। আন্দোলনের সুযোগে কোথাও দুষ্কৃতীরা কোনও নাশকতামূলক কাজের চেষ্টা করবে কি না সে দিকে খেয়াল রাখার জন্যেও গোয়েন্দা সেলের তরফে বিশেষ নজরদারি শুরু হয়েছে।

অতীতে ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে একবার উত্তরকন্যা অবিযান করেছিল ফরওয়ার্ড ব্লক। সে যাত্রায় উত্তরকন্যা অবধি পৌঁছতেই পারেনি কতারা। তার আগেই ব্যারিকেডে থমকে গিয়েছিল আন্দোলন। সূত্র অনুযায়ী, এবারও উত্তরকন্যা পৌঁছনোর সব রাস্তায় ব্যারিকেড করবে প্রশাসন। কোথাও তা এক কিলোমিচার দূরে আবার কোথাও তার চেয়েও বেশি দূরে ব্যারিকেড হবে। লোহার, বাঁশের ব্যারিকেড দুরকমই থাকবে। যতদূর জানা গিয়েছে, পুলিশ-প্রশাসন এমন ব্যবস্থা করতে চাইছে যে আন্দোলনকারীরা হয়তো নবান্নের অনেক আগেই থমকে যেতে বাধ্য হবেন। প্রয়োজনে সেখানে স্মারকলিপি নিতে প্রশাসনের কোনও আধিকারিকও থাকতে পারেন। অথবা কয়েকজনকে উত্তরকন্যা যেতে দেওয়া হতে পারে।

রবিবার গুরুংয়ের সভা হওয়ার কথা শিলিগুড়ি শহরের উপকণ্ঠে গান্ধী ময়দানে। গুরুংয়ের দলের সহ সভাপতি বিশাল ছেত্রী জানান, তাঁরা দেড় লক্ষ সমর্থকের উপস্থিতি আশা করছেন। গুরুংও জানিয়ে দিয়েছেন, ওই সভা থেকেই তিনি আগামী বিধানসভা ভোটে বিজেপির বিরুদ্ধে কীভাবে প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ, মিথ্যাচারের অভিযোগ এনে প্রচার করতে হবে সেই সুর বেঁধে দেবেন।

গুরুংয়ের সভার পরদিনই উত্তরকন্যা অভিযান। ভোটের আগে উত্তরবঙ্গে শক্তি প্রদর্শন করতে মরিয়া বিজেপিও। ইতিমধ্যে প্রদেশের একাধিক নেতা শিলিগুড়িতে ঘাঁটি গেড়ে উত্তরবঙ্গ চষে বেড়াচ্ছেন। দলের যুব সংগঠনের ব্যানারে ওই অভিযান হচ্ছে। বিজেপির যুব মোর্চার দার্জিলিং জেলা সভাপতি কাঞ্চন দেবনাথ জানান, উত্তরকন্যা অভিযানকে কেন্দ্র করে অভূতপূর্ব সমাবেশ হতে চলেছে।

আরও পড়ুন-কৃষি আইন সংশোধন করতে পারে সরকার, পঞ্চম দফা বৈঠকে সমঝোতার ইঙ্গিত

Previous articleভারতীয় দলের পাশে দাড়ালেন বীরেন্দ্র সহবাগ, একহাত নিলেন ম‍াইকেল ভন, টম মুডিদের
Next articleসারদা: জেল থেকে সুদীপ্তর চিঠি ঘিরে জল্পনা