২৮ ফেব্রুয়ারি বা ৭ মার্চ কলকাতায় পুরভোট?

কণাদ দাশগুপ্ত

বিধানসভা ভোটের আগেই আর এক যুদ্ধ কলকাতায়৷

কলকাতা পুরসভার ভোট করানোর ভাবনা-চিন্তা শুরু করেছে শাসকদল। প্রশাসনিক স্তরেও এই প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। নির্ভরযোগ্য সূত্রের খবর, ফেব্রুয়ারির শেষে অথবা মার্চের শুরুতেই কলকাতা পুরসভার ভোট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে পুরোমাত্রায়৷

নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি কিংবা ৭ মার্চ কলকাতা পুরভোটের সম্ভাব্য দিন হিসেবে আপাতত ভাবা হয়েছে। তবে তারিখ নিয়ে আলোচনা চলছে। রাজ্য সরকার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করার আগে দু-একদিনের মধ্যে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে কথা বলা হবে৷ তারপরই ভোটের দিনক্ষণ ঠিক করা হবে। এই মুহুর্তে ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজ চলছে। কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত দিনক্ষণ অনুযায়ী ১৫ জানুয়ারি চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশিত হবে। তার পর সেই তালিকা কলকাতার পুরভোটের জন্য রাজ্য নির্বাচন কমিশনের হাতে আসতে ২০ জানুয়ারি হয়ে যাবে। এই তালিকা হাতে না-পাওয়া পর্যন্ত রাজ্য নির্বাচন কমিশন পুরভোটের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে পারবে না। জানা গিয়েছে, ফেব্রুয়ারি শেষ বা মার্চের শুরুতে ভোট হবে ধরে নিয়েই কলকাতার পুরকর্তাদের প্রস্তুতি নিতেও বুধবার বলে দেওয়া হয়েছে৷

রাজ্যে এই মুহুর্তে নির্বাচন বকেয়া আছে প্রায় শতাধিক পুরসভার৷ তবে এখনই কলকাতা ছাড়া অন্যান্য পুরসভার ভোটের কথা ভাবা হচ্ছে না৷ নবান্নের খবর, কলকাতা পুরভোট নিয়ে ইতিমধ্যেই সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের হয়েছে। কয়েক দিন বাদেই তার শুনানি। সেদিন রাজ্য সরকারকে হলফনামা দিয়ে জানাতে হবে, তারা ঠিক কবে নাগাদ কলকাতার পুরভোট করাতে চায়। তা না-হলে সুপ্রিম কোর্টের তরফে কলকাতা পুরসভায় প্রশাসক নিয়োগ করা হবে বলে শীর্ষ আদালত জানিয়েছে৷ সেই পরিস্থিতি এড়িয়ে যেতেই আদালতে কলকাতা পুরভোটের তারিখ জানিয়ে দিতে চাইছে রাজ্য৷ সেই কারনেই, একুশের বিধানসভা ভোটের আগেই কলকাতা পুরসভার নির্বাচন হয়ে যাওয়া মোটামুটি পাকা৷ রাজনৈতিক মহলের ধারনা, কলকাতার পুরভোট নিয়ে বিধানসভা ভোটের আগে কোনও আইনি জটিলতা হোক, শাসক দল চাইছে না৷ কলকাতার পুরভোট করছেনা শাসক দল, এমন প্রচারে শাসক দল বা সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হবে৷ বিধানসভা ভোটে এই প্রচারের কু-প্রভাব পড়তে পারে৷ তা ছাড়া বিধানসভা ভোটের আগে নিজেদের শক্তি যাচাই করে নিতে পারবে শাসকদল।

জানা গিয়েছে, প্রশাসনিক শীর্ষ স্তরে আলোচনা হয়েছে, ফেব্রুয়ারির শেষে কিংবা মার্চের শুরুতে রাজ্যে কোনও বড় পরীক্ষা, উৎসব নেই।সাধারনত, ওই সময়ে কলকাতার আবহাওয়াও ভালো থাকে। সে কারনেই কলকাতা পুরভোটের জন্য ওই সময়টা ভাবা হয়েছে৷ রাজ্য নির্বাচন কমিশনের তরফেও কোনও আপত্তি না থাকলে, ভোট তখনই হবে৷ এদিকে, আগামী ১৭ ডিসেম্বর কলকাতা পুরভোট সংক্রান্ত মামলার শুনানি রয়েছে। তার আগে রাজ্যের হলফনামায় সুপ্রিম কোর্টকে সম্ভবত সেটাই জানানো হবে।

দল হিসাবে তৃণমূল কিছুদিনের মধ্যেই কলকাতা পুরসভার সাফল্যের ছবি তুলে ধরার সিদ্ধান্তও নিয়েছে৷ জেলার দিকে অনেক পুরসভার ভোট বকেয়া হলেও, এখনই সেখানে ভোট হচ্ছেনা৷ এর অন্যতম কারন, একাধিক জেলায় বিজেপির শক্তি বেড়েছে৷ সেখানে পুরভোট হলে রাজনৈতিক সংঘর্ষের আশঙ্কা রয়েছে। শাসক দলের ফল খারাপ হলে বিধানসভা ভোটে তার প্রভাবও পড়বে৷ তাই কলকাতার বাইরের জেলায় ভোট করানোর ঝুঁকি নিতে চাইছে না নবান্ন।

Previous articleইউপিএর ভরকেন্দ্র হতে চলেছেন পাওয়ার, গুরুত্ব কমছে কংগ্রেসের
Next article১০ জনের ইস্টবেঙ্গল আটকে দিল জামশেদপুর এফসিকে