Friday, December 19, 2025

ইউপিএর ভরকেন্দ্র হতে চলেছেন পাওয়ার, গুরুত্ব কমছে কংগ্রেসের

Date:

Share post:

একটি প্রতীকী চিত্রেই ক্রমশ স্পষ্ট হচ্ছে ভবিষ্যতের পূর্বাভাস। কৃষি আইনের প্রতিবাদে ২৪ টি বিরোধী দলের কথা বলতে পাঁচ সদস্যের যে টিম রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করে তার নেতৃত্ব দেন এনসিপি প্রধান শারদ পাওয়ার। ওই দলে কংগ্রেসের রাহুল গান্ধী ছিলেন ঠিকই, কিন্তু তিনি ছিলেন নেহাতই পার্শ্বচরিত্র হিসাবে। প্রকাশ্যে এই প্রতীকী দৃশ্য এবং রাজধানীর অন্দরে কিছু বৈঠকের গতিপ্রকৃতি বলছে, আগামীদিনে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএর ভরকেন্দ্রে আসতে চলেছেন এনসিপি নেতা শারদ পাওয়ার। দেশজুড়ে ক্রমশ দুর্বল হতে চলা কংগ্রেসের কাছে এই বিকল্প মেনে নেওয়া ছাড়া সম্ভবত অন্য উপায়ও নেই। আর এই প্রক্রিয়া বাস্তবায়িত হলে ইউপিএর রাশ যাবে কোনও অকংগ্রেসি বিরোধী দলের হাতে, এতদিন যে দায়িত্ব সামলেছেন কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী।

রাজনৈতিক মহলের অনুমান, সবকিছু ঠিক থাকলে আর মাসখানেক বাদে কংগ্রেস সভানেত্রীর দায়িত্বের পাশাপাশি ইউপিএ চেয়ারপার্সনের দায়িত্বও ছেড়ে দেবেন সোনিয়া। বয়স এবং শারীরিক অসুস্থতার কারণে এইসব দায়িত্ব নিজের হাতে আর রাখতে চান না তিনি। কংগ্রেসের পরবর্তী সভাপতি পদে রাহুলের পুনর্বহালের সম্ভাবনা জোরালো হলেও নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় অন্য কোনও মুখও উঠে আসতে পারে। তবু রাহুল যদি কংগ্রেস সভাপতি হনও, সোনিয়ার পরিবর্তে ইউপিএর স্টিয়ারিং তাঁর হাতে রাখতে রাজি হবেন না কংগ্রেস কোনও জোটসঙ্গীই। রাজনীতি ও নেতৃত্বদানে রাহুলের ধারাবাহিকতার অভাব নিয়ে শুধু বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতারাই নন, কয়েকদিন আগে কটাক্ষ করেছিলেন খোদ শারদ পাওয়ার। বিহার নির্বাচনে কংগ্রেসের খারাপ ফলের জন্যই ক্ষমতা হাতছাড়া হয়েছে মহাজোটের। সেজন্য রাহুল সহ কংগ্রেস নেতৃত্বের সিরিয়াসনেসের অভাবকেই দায়ী করেছেন আরজেডি নেতারা। ফলে এটা এখন স্পষ্ট, ইউপিএর শীর্ষপদে রাহুলের কর্তৃত্ব মানবে না এনসিপি, আরজেডি, ডিএমকে সহ কোনও জোটসঙ্গীই। বরং একাধিক কারণে সোনিয়ার পর ইউপিএর চেয়ারপার্সন পদের দাবিদার শারদ পাওয়ার। প্রবীণ রাজনীতিক শারদ পাওয়ার দীর্ঘদিন কংগ্রেস দল করেছেন। মূলত সোনিয়ার সঙ্গে বিরোধের জেরেই কংগ্রেস ছেড়ে এনসিপি তৈরি করেন এবং সেই দলের সর্বভারতীয় পরিচিতিও এসেছে পাওয়ারের সৌজন্যেই। সাংগঠনিক দক্ষতার পাশাপাশি মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী, কেন্দ্রের কৃষিমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী থাকার সুবাদে তাঁর প্রশাসনিক অভিজ্ঞতাও প্রচুর। শুধু বিরোধী দলের নেতারাই নন, বিজেপি নেতৃত্ব এবং খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে পাওয়ারের সুসম্পর্ক রয়েছে। সর্বোপরি মহারাষ্ট্রে বিজেপি বিরোধী তিন দলের সরকার গঠনের মূল কারিগর শারদ পাওয়ারই। তাঁর সৌজন্যেই শিবসেনা ও কংগ্রেসের মত কার্যত দুই মেরুতে থাকা দুটি দল হাত মিলিয়েছে। নিশ্চিতভাবেই মহারাষ্ট্র সরকারে শারদ পাওয়ার ও তাঁর দল এনসিপি এখন মুখ্য নিয়ন্ত্রক। সোনিয়া গান্ধী সরে গেলে পাওয়ারের সমকক্ষ নেতা এই মুহূর্তে আর নেই ইউপিএতে। তাই সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য মুখ হিসাবে তাঁকেই এবার গোটা ইউপিএর চালিকাশক্তি হিসাবে দেখা যেতে পারে। যদিও এখনই প্রকাশ্যে এমন সম্ভাবনার কথা স্বীকার করছেন না পাওয়ার বা তাঁর দলের নেতারা।

আরও পড়ুন- বিয়ের পর জামিন পেলেন ধর্ষণ মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি

 

spot_img

Related articles

বহরমপুরে টানা তিনদিন আটকে রেখে গণধর্ষণ, পুলিশের তৎপরতায় দ্রুত গ্রেফতার ২

বহরমপুরে এক আদিবাসী মহিলার উপর ভয়াবহ নির্যাতনের (Sextual harassments) অভিযোগ। তাঁকে জোর করে তুলে নিয়ে গিয়ে একটি ফাঁকা...

মার্লিন গ্রুপের উদ্যোগে কলকাতায় জাতীয় বধির ক্রিকেট চ্যাম্পিয়নশিপের জমকালো উদ্বোধন

শীতের কলকাতায় জমজমাট ক্রিকেট, তবে এই  ক্রিকেট ম্যাচ একটু আলাদা, ২২ গজের নিয়ম এক, কিন্তু যারা খেলতে নেমেছেন...

বাংলায় আবার নিশ্চয়ই মমতার সরকার হবে, বাঙালিরাই দেশের ভবিষ্যৎ বলে দেয়: সংসদ চত্বরে সরব জয়া

তৃণমূল সুপ্রিমো তথা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) সঙ্গে দীর্ঘদিন সুসম্পর্ক সমাজবাদী পার্টির (SP) রাজ্যসভার (RajyaSabha) সাংসদ...

মেসি ইভেন্টের আর্থিক তদন্তে ইডি, শতদ্রুর বাড়িতে পুলিশের হানা

মেসি ইভেন্টে বিশৃঙ্খলা কাণ্ডে তদন্তে ইডি(ED )। শতদ্রু দত্তের অ্যাকাউন্টে কোটি কোটি টাকার লেনদনের তদন্ত করবে কেন্দ্রীয় সংস্থা।...