‘স্বাস্থ্যসাথী’ প্রকল্পের কর্পোরেট হাসপাতালের আর্জি, টাকা বাড়ানো হোক

‘স্বাস্থ্যসাথী’ প্রকল্পে রাজ্য সরকারের বেঁধে দেওয়া বিভিন্ন রোগের চিকিৎসার খরচ অত্যন্ত কম। এই প্রকল্পে চুক্তিবদ্ধ কর্পোরেট ও বেসরকারি হাসপাতালগুলি সরকারের কাছে টাকা বাড়ানোর আর্জি রাখতে চলেছে।পূর্বাঞ্চলের ১৭টি প্রথম সারির বেসরকারি হাসপাতালের সংগঠন ‘অ্যাসোসিয়েশন অব হসপিটাল্‌স অব ইস্টার্ন ইন্ডিয়া’-র প্রধান রূপক বড়ুয়া একথা জানি জানিয়ে বলেছেন, “‘স্বাস্থ্যসাথীতে বিভিন্ন রোগের চিকিৎসার যে খরচ আছে, তা এই হাসপাতালগুলির স্বাভাবিক খরচের তুলনায় খুবই কম।’’ তিনি বলেন, ‘‘এত দিন স্বাস্থ্যসাথীর উপভোক্তা কম থাকায় সরকারের বেঁধে দাওয়া খরচে কোনও রকমে চালাচ্ছিলাম। আর সম্ভব নয়।’’

আরও পড়ুন : ‘দুয়ারে সরকার’ এবার সত্যিই গৃহস্থের দরজায়

স্বাস্থ্যসাথী-র কার্ড করানোর জন্য যত আবেদন জমা পড়ছে, ততই দুশ্চিন্তা বাড়ছে প্রথম সারির বেসরকারি হাসপাতালগুলির৷ তাদের বক্তব্য, বরাদ্দ টাকায় লক্ষ লক্ষ লোকের চিকিৎসা করতে হলে হাসপাতাল বন্ধ করে দিতে হবে৷

রূপকবাবু বলেছেন, ‘‘এত দিন কম সংখ্যক মানুষ এই কার্ড নিয়ে পরিষেবা নিতে আসতেন। অধিকাংশ হাসপাতাল সরকারের বেঁধে দেওয়া খরচে পরিষেবা দিত। কিন্তু এখন তো স্বাস্থ্যসাথীর রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে৷ সেই অবস্থায় আমরা কী করব?’’

এক কর্পোরেট হাসপাতালের প্রশাসনের সঙ্গে যুক্ত ডাঃ কুণাল সরকার বলেছেন, ‘‘স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পটি খুবই ভাল। সরকারের বেঁধে দেওয়া খরচ খুব কম৷

তবে স্বাস্থ্যসাথীর টাকা দিতে সরকার দেরি করে না। কিন্তু প্রকল্পের আওতায় বহু মানুষ চলে এলে যাঁদের কার্ড থাকবে না, তাঁরা হাসপাতালে ভর্তির ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়বেন। সাধারণ অসুখের রোগীরা শয্যা পাবেন না। সব শয্যা শুধু আশঙ্কাজনক রোগীতেই ভর্তি থাকবে। স্বাস্থ্যসাথীর টাকা না বাড়ালে তার প্রভাব পড়তে পারে হাসপাতালে চিকিৎসার মানের উপরেও।’’ স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তীর বক্তব্য, ‘‘সাধারণ মানুষের উপকারের জন্যই এই স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প৷ এতে কিছু কর্পোরেট হাসপাতালের স্বার্থে ঘা লাগলেও গ্রামের অনেক ছোট হাসপাতাল স্বাস্থ্যসাথীর মাধ্যমেই টিকে আছে।”

আরও পড়ুন : ‘স্বাস্থ্যসাথী’তে আবেদনের ঢল, কার্ডের বদলে বিমাপত্র দেওয়ার ভাবনা নবান্নের!

রাজ্যে স্বাস্থ্যসাথী-র আওতায় বেসরকারি হাসপাতাল ১০৬১টি। যার মধ্যে কর্পোরেট হাসপাতাল ২১টি। এখনও পর্যন্ত ১১ লক্ষেরও বেশি স্বাস্থ্যসাথীর আবেদন জমা পড়েছে। এত দিন রাজ্যের ১.৪৩ লক্ষ পরিবারের প্রায় সাড়ে সাত কোটি মানুষ এই প্রকল্পের আওতায় ছিলেন। আগামীতে আসবে আরও প্রায় ৬০ লক্ষ পরিবার। অর্থাৎ মোট উপভোক্তা বাড়বে কয়েক কোটি।

Previous articleনাড্ডার পর এবার বঙ্গে গেরুয়া ঝড় তুলতে ডিসেম্বরেই শহরে অমিত শাহ
Next articleরাজনৈতিক অপসংস্কৃতি: পরিকল্পিত হামলা, অভিষেকের বাসভবনে কালি