মুখ্যমন্ত্রীকে নজিরবিহীন আক্রমণ ধনকড়ের

বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা কনভয় হামলার ঘটনা গণতন্ত্রের প্রতি লজ্জা। রাজ্য সরকার তথা মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে মন্তব্য করলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। তবে
সংবিধান রক্ষার দায় বজায় রাখতে গিয়ে যে ভাষায় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এবং প্রশাসনকে আক্রমণ করলেন তাতে বোধ হয় লজ্জা পাবেন রাজ্য বিজেপির সভাপতিও। শুক্রবার, বারোটা থেকে প্রায় 1 ঘণ্টা 15 মিনিট চলা রাজ্যপালের সাংবাদিক বৈঠকের পরে এ কথাই বলছে রাজনৈতিক মহল। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং প্রশাসনের শীর্ষ স্থানীয় নেতৃত্বকে আক্রমণ করে ঠিক কী কী বললেন জগদীপ ধনকর?

বৃহস্পতিবার, বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার কনভয়ে হামলার ঘটনার পরে সেই বিষয় নিয়ে যথেষ্ট অভিযোগ-চিঠি-চাপাটি করেছেন রাজ্যপাল। শুক্রবার, সেই বিষয়কে সামনে রেখেই রাজভবনের সাংবাদিক বৈঠকে বক্তব্য শুরু করেন তিনি। বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে নজিরবিহীনভাবে আক্রমণ করতে ছাড়েনি তিনি। বলেন, কেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতাদের তিনি বহিরাগত বলছেন? “তিনি ভারতীয়দের বহিরাগত বলছেন” তা নিয়ে রীতিমতো সরব হন জগদীপ ধনকড়। একজন দায়িত্বশীল মুখ্যমন্ত্রী কীভাবে এরকম ভাষা প্রয়োগ করেন বলেও প্রশ্ন তোলেন তিনি। শুধু তাই নয়, এই বিষয় নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে ক্ষমা চাওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন রাজ্যপাল। এর সঙ্গে তিনি যোগ করেন, “ক্ষমা চাইলে ওনার সম্মান বাড়বে”।

মুখ্যমন্ত্রীকে সাংবিধানিক দায়িত্ব মেনে চলার পরামর্শ দেন ধনকড়। বৃহস্পতিবার এ ঘটনা নিয়ে তিনি যে রাজ্যের মুখ্যসচিব-ডিজিপিকে তলব করেছেন সেকথাও জানান ধনকড়। তার ওপর হামলার ঘটনার রিপোর্ট তিনি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের রিপোর্ট পাঠিয়েছেন। রাজ্যপালের মতে তিনি এসব বলছেন, সংবিধান পালন করা তাঁর কাজ বলে।

রাজ্যপালের অভিযোগ, “বিরোধীদের সমস্ত কার্যকলাপ নৃশংস ভাবে বন্ধ করা হচ্ছে।
চারিদিকে এত বেনিয়মের প্রতিবাদ করতে পারছে না বিরোধীরা”।

ধনকড় অভিযোগ করেন, কয়েকজন আমলা সরকারি চাকরি না করে রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে কাজ করছেন। এমন 21 জনের নামের তালিকা তৈরি করে তিনি গোপনে মুখ্যমন্ত্রীকে পাঠাবেন বলেও জানান ধনকড়। এরপরই রাজ্যের নিরাপত্তা উপদেষ্টার কাজটা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।

রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে সরকারকে তিনি প্রচুর চিঠি লিখেছেন বলে জানান জগদীপ ধনকড়। তার কোন উত্তর পাননি বলে দাবি তাঁর। রাজ্যপালের প্রশ্নের জবাব না দিয়ে নতুন নতুন ফন্দি করা হচ্ছে অভিযোগ করে রাজ্যপাল বলেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় সেসব নিয়ে আলোচনা করা হয়। ” অথচ রাজ্যপালকে বলা হচ্ছে অপরাধী!”

বেঙ্গলি বিজনেস সামিট নিয়ে প্রশ্ন তোলেন ধনকড়। কোথায় বিনিয়োগ? কোথায় চাকরি? সে কথা কিছুই বলা হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন। কখনও কখনও সংবাদমাধ্যমের নীরবতাও তাঁকে আগে দুঃখ দেয় বলে মন্তব্য করেন রাজ্যপাল।

শুক্রবার তাঁর সাংবাদিক বৈঠক শুনে রাজনৈতিক মহলের মত, তাঁর ভাষা, মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি তাঁর শব্দচয়ন, রাজ্য প্রশাসনের উচ্চপদস্থ ব্যক্তিদের প্রতি অভিযোগ- বিজেপির প্রথমসারির নেতাদের রাজনৈতিক ভাষণ টেক্কা দেবে।

Previous articleআন্দোলনের মঞ্চ যেন আস্ত আখড়া, কৃষক সেবায় সিঙ্ঘুতে জাতীয় খেলোয়াড়রা
Next articleডায়মন্ড হারবারে নাড্ডার কনভয়ে হামলার অভিযোগে গ্রেফতার ৭