একুশের ময়দানে ফের পাহাড় ইস্যু! ‘স্থায়ী সমাধান’ চেয়ে শাহর দফতরে রাজু বিস্তা

গোর্খাল্যান্ডের(Gorkhaland) দাবিতে দীর্ঘদিন ধরেই সরব পাহাড়ের জনতা। একাধিকবার এই ইস্যুতে রক্তাক্ত হয়েছে দার্জিলিং(Darjeeling)। রাজ্যে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে ফের একবার সেই দাবিকে খুঁচিয়ে তুলে মাঠে নামলেন দার্জিলিংয়ের বিজেপি সংসদ রাজু বিস্তা(Raju Bista)। আজ বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জি কিষাণ রেড্ডির(G kishan Reddy) কাছে গিয়ে পাহাড়ের স্থায়ী রাজনৈতিক সমাধানের দাবিতে প্রস্তাব পেশ করলেন দার্জিলিংয়ের সংসদ সহ পাহাড়ের একাধিক জননেতা। তাঁদের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গ বিজেপির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়। সরকারের কাছে নিজেদের প্রস্তাব পেশ করার পর সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের(Mamata Banerjee) বিরুদ্ধে সরব হয়ে ওঠেন দার্জিলিংয়ের ওই বিজেপি সংসদ।

এদিন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের একাধিক আধিকারিক ও প্রতিমন্ত্রী জি কিসান রেড্ডির সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনার পর সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে দার্জিলিংয়ের সংসদ জানান, ‘২০১৯ সালে যে সমস্ত রাজনৈতিক দল আমাদের সঙ্গে ছিল। আজ তারা এখানে উপস্থিত হয়েছিল। মূলত দু’টি বিষয়ের ওপর সরকারের সঙ্গে আমাদের আলোচনা হয়েছে। প্রথমত, পাহাড়ে যে ১১ টি জনজাতি এখনো তপশিলি জাতির স্ট্যাটাস পায়নি তাদের দ্রুত সেই স্ট্যাটাস দেওয়ার জন্য আবেদন করা হয়েছে। সরকার বিষয়টি যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছে। এবং দ্বিতীয়ত, পাহাড়ের স্থায়ী রাজনৈতিক সমাধান। গোর্খাদের এই দাবি দীর্ঘদিনের। তবে গোর্খারা যা চায় সেটা হলো সংবিধানের ভিত্তিতে স্থায়ী রাজনৈতিক সমাধান।’

এরপরই তিনি বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জিটিএ-১ দিয়েছেন, জিটিএ-২ দিয়েছেন, এখন জিটিএ-৩ দিতে চাইছেন। আমাদের জনতা তা খারিজ করছে। আমরা আজ সরকারের কাছে সংবিধানের ভিত্তিতে রাজনৈতিক সমাধান চেয়েছি পাহাড়ের। আগামী দিনে এর সমাধান অবশ্যই বের হবে।’

এর পাশাপাশি পাহাড়ের রাজনীতি প্রসঙ্গে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তীব্র আক্রমণ চালিয়ে রাজু বলেন, ‘আমি আপনাদের একটা কথা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিতে চাই। দার্জিলিং, তরাই এবং ডুয়ার্সের জনতা বিজেপির সঙ্গে কালও ছিল আজও আছে। গোর্খা মরে যাবে তবু তৃণমূলকে ভোট দেবে না। ২০১৭ সালে এই তৃণমূলের মুখ্যমন্ত্রী প্রকাশ্য রাস্তায় ১১ জন গোর্খাকে হত্যা করেছিল। এটা আমরা কখনোই ভুলবো না। গত ১০ বছরে তৃণমূল যে অন্যায় অত্যাচার করেছে পাহাড়ের জনতা সেটা ভুলবে না। পাহাড়ে আজ গণতন্ত্র নেই। সংবিধান মেনে কোনও কাজ হয় না। ২০১১ সাল থেকে আজ পর্যন্ত কোনও নির্বাচন ছাড়াই জিটিএ চলছে। দার্জিলিং পুরসভা প্রশাসন দ্বারা চালানো হচ্ছে। ২০০৫ সালের পর থেকে এখনও কোনও পঞ্চায়েত নির্বাচন হয়নি। এইসব কখনোই ভুলবে না পাহাড়ের মানুষ।’

তবে রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপি সংসদ রাজু বিস্তার এহেন উদ্যোগে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। লোকসভা নির্বাচনের আগে পাহাড়কে গোর্খাল্যান্ডের স্বপ্ন দেখিয়েছিল বিজেপি। সে স্বপ্ন অচিরেই চুরমার হয়েছে। বিজেপিকে ‘বিশ্বাসঘাতক’ বলে ইতিমধ্যেই তাদের সঙ্গ ছেড়েছেন বিমল গুরুং। আনুগত্য দেখিয়েছেন তৃণমূলের প্রতি। এমন পরিস্থিতিতে নির্বাচনকে মাথায় রেখে ‘কুমির ছানা’ দেখানোর মত ঘুরিয়ে ফিরিয়ে সেই গোর্খাল্যান্ডকে হাতিয়ার করে পাহাড়বাসীর মন জয় করতে উদ্যোগী হল গেরুয়া শিবির।

আরও পড়ুন- শুধু শুভেন্দু কেন, আমি চলে গেলেও মমতার দলের ক্ষতি হবে না: সুব্রত

Previous articleভারতের হয়ে অর্ধশতরান বিরাট কোহলির, ব‍‍্যর্থ ওপেনার জুটি
Next articleবাংলার রাজ্যপালের মন্তব্যে উষ্মা সিপিএম নেত্রীর