শিলিগুড়ি পুরনিগমের প্রতি বঞ্চনার অভিযোগ জানালে বাধা দিত জিতেন্দ্র, ক্ষুব্ধ অশোক

এবার ক্ষুব্ধ রাজ্যের একমাত্র বামফ্রন্ট পরিচালিত পুর নিগমের প্রশাসক মণ্ডলীর চেয়ারম্যান অশোক ভট্টাচার্য (Ashok Bhattacharya)। অভিযোগ সদ্য তৃণমূল ত্যাগী জিতেন্দ্র তেওয়ারির বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবারই তৃণমূল কংগ্রেস (Trinamool Congress) ও আসানসোল পুরনিগমের প্রশাসক পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন জিতেন্দ্র তেওয়ারি। অশোকের অভিযোগ, যতবার রাজ্য সরকারের কাছে শিলিগুড়ি পুরনিগমের প্রতি বঞ্চনার অভিযোগ করেছেন ততবারই আটকে দিয়েছেন আসানসোল পুরনিগমের প্রাক্তন মেয়র জিতেন্দ্র তেওয়ারি (Jitendra Tiwari)।

অশোক ভট্টাচার্য ফেসবুকে (Facebook) লিখেছেন, “আসানসোলের মেয়র পদে পাঁচ বছর ছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের জিতেন্দ্র তেওয়ারি। তিনি আবার একজন বিধায়কও। তিনি এতদিন পর্যন্ত ছিলেন আসানসোলের প্রশাসনিক মন্ডলীর সভাপতি। আজ তিনি সেই পদ থেকে পদত্যাগ করলেন। অভিযোগ রাজ্য সরকারের আসানসোলের প্রতি বঞ্চনা । বিগত পাঁচ বছর তাঁকে কোনো দিন আসানসোলের প্রতি তৃণমূল সরকারের বঞ্চনার কথা বলতে শুনি নি।বিধানসভায় শিলিগুড়ির বিধায়ক হিসেবে আমি যত বার যুক্তি ও তথ্য দিয়ে সরকারের শিলিগুড়ির প্রতি বঞ্চনার কথা তুলে ধরেছি তত বার জিতেন বাবু আমার বক্তব্যের বিরোধিতা করে বলেছিলেন মমতা ব্যানার্জির(Chief Minister Mamata Bandyopadhyay) সরকার কাউকে বঞ্চনা করে না। আমার সমস্ত অভিযোগ গুলি নাকি ভিত্তিহীন!আজ তিনি বঞ্চনার কথা বলছেন এতো দিন কেন বলেন নি?”

এরপর তিনি আরও বলেন, “তৃণমূল কংগ্রেস সরকার শুধু শিলিগুড়িকেই বঞ্চিত করেনাই, বিরোধী হলেই তাদের প্রতি করে এসেছে অসম্মান ও অমর্জাদা। আমরা আমাদের প্রাপ্য আদায়ে প্রথম দিন থেকে লড়াই করে চলেছি, আজও করছি । কোরে যাবো । আমরা মনে করি কেন্দ্র কে যেমন রাজ্যের ন্যায় সঙ্গত পাওনা দিতে হবে, তেমনি রাজ্য কে দিতে হবে পৌরসভার সমস্ত প্রাপ্য । এই দাবি কোনো দয়ার দান নয়, এই দাবি সাংবিধানিক । জিতেন বাবুর দাবির সাথে এসব দাবির কোনো সম্পর্ক নেই । তার বিষয় ব্যাক্তিগত সঙ্কীর্ণ রাজনৈতিক। এর সাথে মানুষের স্বার্থের কোনো সম্পর্ক নেই। বিজেপির কাছে আমার প্রশ্ন আপনাদের আঠারো জন সাংসদ রয়েছেন, তারা আজ পর্যন্ত রাজ্যের কোন দাবি নিয়ে কেন্দ্রের কাছে তদ্বির করেছেন কী?

এর পরে আরও একটি পোস্ট করেন অশোক ভট্টাচার্য। এতে তিনি লিখেছেন, “শিলিগুড়ি (Siliguri) গত পাঁচ বছর ধরে বলে এসেছে রাজ্যের সরকার শিলিগুড়িকে তার প্রাপ্য অর্থ থেকে বঞ্চিত করেছে । এই বঞ্চনার একটি তালিকা আমি বহু বার শুধু পুর বোর্ড সভাতেই দেই নাই, এই তালিকা প্রকাশ্যে জনসমক্ষে দিয়েছি। সর্ব শেষে আমি রাজ্যের পুরমন্ত্রীর কাছে রাজ্যের বিভিন্ন পৌরসভা গুলিকে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় প্রকল্পের কাকে কত টাকা দেওয়া হয়েছে তার একটি স্বেতপত্র প্রকাশের দাবি জানিয়েছি। কী ভাবে শিলিগুড়িকে বঞ্চিত করা হয়েছে এপ্রসঙ্গে কয়েকটি উদাহরণ আবার টেনেছেন তিনি। তিনি বলেন “কেন্দ্রীয় সরকারের নগরোন্নয়ন মন্ত্রকের সবচাইতে বড় কর্মসূচি আম্রুত । এই প্রকল্পে গত বছর পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে (West Bebgal) মোট ছয় হাজার কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদিত হয়েছে । কিন্তু শিলিগুড়ি পেয়েছে মাত্র ষাট লক্ষ টাকা । আমরা প্রকল্প প্রস্তাব পাঠিয়ে ছিলাম শিলিগুড়ির জন্যে পানীয় জল, নিকাশি, বর্জ্য পদার্থ ব্যাবস্থাপনা ইত্যাদির। একটি প্রকল্প প্রস্তাবও রাজ্য সরকার কেন্দ্রের কাছে পাঠায় নি।”

 

এখানেই শেষ করেননি তিনি। আরও লিখেছেন, “এভাবে শিলিগুড়ির মতো একটি জাতীয় গুরুত্ব পূর্ণ শহর কে বঞ্চিত করা হয়েছে । এমন কী বহু রাজ্য প্রকল্প থেকেও শিলিগুড়ি কে বঞ্চিত করা হয়েছে । শিলিগুড়ি শুধু রাজ্যের নয় জাতীয় ক্ষেত্রেও একটি গুরুত্ব পূর্ণ শহর । এই শহরটির অবস্থান গত গুরুত্বও অপরিসীম । এই সব বঞ্চনা হয়েছে রাজনৈতিক কারণে । শিলিগুড়িতে রাজ্যের শাসক দল জয়ী হতে পারেনি বলেই এই বঞ্চনা । অথচ রাজনৈতিক কারণে কেন্দ্রের উচিৎ নয় রাজ্য কে বঞ্চনা করা । আবার রাজ্যেরও বঞ্চনা করা উচিৎ নয় রাজনৈতিক কারণে কোনো পৌরসভা কে। আসানসোল যা পেয়েছে শিলিগুড়ি তার ছিটেফোটাও পাইনি । বিধানসভা য় জিতেন বাবু এই সরকারের নগরোন্নয়ন নীতির অনেক প্রশংসা করে বক্তৃতা দিয়েছেন। আজ উল্টো সুর।”

আরও পড়ুন-দলীয় নেতৃত্বকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে বাবুল সুপ্রিয় বললেন, জিতেন্দ্রর বিজেপিতে যোগ মানব না

Previous articleশুক্রবারই রাজ্যে অমিত শাহ, নিরাপত্তা নিয়ে ডিজিকে চিঠি CRPF-এর
Next articleস্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসবেন, খাবেন, তাই সাজ-সাজ রব সনাতনের বাড়িতে