বাংলার ৩ IPS-কে ডেপুটেশনে পোস্টিংয়ের কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তকে “নির্লজ্জ” বললেন কেজরিওয়াল

নবান্নের (Nabanna) আপত্তি সত্ত্বেও তিন আইপিএস (IPS) অফিসারকে কেন্দ্রীয় ডেপুটেশনে পোস্টিংয়ে পাঠাল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক । যার জেরে বৃহস্পতিবার তুমুল ক্ষোভ উগরে দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banarjee)। নিজের অফিসিয়াল টুইটার হ্যান্ডেলে ক্ষোভের কথা জানিয়ে গর্জে ওঠেন মমতা। এই সিদ্ধান্তকে চূড়ান্ত অসাংবিধানিক আখ্যা দিয়ে বলেন, “এটা কোনওভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।”

এবার আইপিএস ডেপুটেশনে বদলি বা পোস্টিং ইস্যুতে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে দাঁড়ালেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল (Arvind Kejriwal)। নিজের টুইটার দোলে কেন্দ্রীয় সরকারের এমন সিদ্ধান্তকে “নির্লজ্জ” বলে আখ্যা দেন তিনি। কেজরিওয়াল টুইটে লেখেন, “পশ্চিমবঙ্গের প্রশাসনিক এমন নির্লজ্জ হস্তক্ষেপকে আমি তীব্র ধিক্কার জানাই। নির্বাচনের ঠিক আগে রাজ্যের পুলিশ আধিকারিকদের বদলি করার অর্থ সংবিধানবিরোধী হবে যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোতে আঘাত হানা। এবং একটা অস্থির পরিস্থিতি তৈরি করা।”

উল্লেখ্য, নবান্নের আপত্তি সত্ত্বেও বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডার কনভয়ের দায়িত্বে থাকা তিন আইপিএস আধিকারিককে সেন্ট্রাল ডেপুটেশনে পোস্টিং দিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। প্রেসিডেন্সি রেঞ্জের ডিআইডি প্রবীণ ত্রিপাঠীকে এসএসবি বা সশস্ত্র সীমা বলে ৫ বছরের জন্য ডেপুটেশনে যেতে বলা হয়েছে। এডিজি রাজীব মিশ্রকে ইন্দো-টিবেটান বর্ডার পুলিশের আইজি পদে পাঁচ বছরের ডেপুটেশনে এবং ডায়মন্ড হারবারের পুলিশ সুপার ভোলানাথ পাণ্ডেকে ব্যুরো অফ পুলিশ রিসার্চে তিন বছরের ডেপুটেশনে যেতে বলা হয়েছে।

এরপরই তীব্র আপত্তি জানিয়ে তিনটি টুইট করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। লেখেন, রাজ্যের আপত্তি সত্ত্বেও তিন আইপিএস অফিসারকের কেন্দ্র যে ভাবে সেন্ট্রাল ডেপুটেশনে পাঠাচ্ছে তাকে ক্ষমতার জঘণ্য অপব্যবহার ছাড়া আর কিছু বলা যাবে না। আইপিএস ক্যাডার রুল ১৯৫৪ জরুরি ধারা প্রয়োগ করে তাঁদের বদলি করা হয়েছে। রাজ্যের এক্তিয়ারে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে হস্তক্ষেপ করে পশ্চিমবঙ্গের অফিসারদের মনোবল ভেঙে দেওয়া হচ্ছে। ভোটের ঠিক আগে এই পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর মৌলিক শর্তকে লঙ্ঘন করছে। এটা অসাংবিধানিক এবং এটা মেনে নেওয়া যায় না কোনওভাবেই।

তিনি আরও বলেছেন, রাজ্যের প্রশাসনিক ব্যবস্থাকে এভাবে চালানোর জন্য কেন্দ্রের চেষ্টাকে আমরা বরদাস্ত করব না। অগণতান্ত্রিক ও বিস্তারবাদী শক্তির সামনে বাংলা কোনওদিন মাথা নত করবে না।

আরও পড়ুন:দলের কোন্দল মেটাতে ‘বিক্ষুব্ধ’ ২৩ নেতার সঙ্গে বৈঠকে সোনিয়া

প্রসঙ্গত, নির্বাচনের আগে রাজ্যের আমলা ও পুলিশ আধিকারিকদের বার্তা দিতেই এই পদক্ষেপ করেছে কেন্দ্র, এমনটাই মত বিশেষজ্ঞদের। রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে বারবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে রাজ্যের বিজেপি নেতারা নালিশ করেছেন। তারই ফলশ্রুতি হিসাবে এই পদক্ষেপ। এবার এই পদক্ষেপের জেরে রাজ্য-কেন্দ্র সংঘাত আরও জোরদার হল। এবং এই ইস্যুতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে দাঁড়ালেন কট্টর বিজেপি বিরোধী দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল।

Previous articleদলের কোন্দল মেটাতে ‘বিক্ষুব্ধ’ ২৩ নেতার সঙ্গে বৈঠকে সোনিয়া
Next articleইস্তফা দিলেও শ্যামাপ্রসাদকে দলে জায়গা দিতে নারাজ বিজেপি