‘স্বাস্থ্যসাথী’তে ভরসা রাজ্যবাসীর, ২১দিনে ২ কোটি টাকার চিকিৎসা

বেসরকারি হাসপাতাল মানেই চিকিৎসার খরচ সাধারণের নাগালের বাইরে। এর সঙ্গে প্যাথলজিক্যাল টেস্টের খরচ মিলিয়ে অঙ্কটা যেখানে গিয়ে দাঁড়ায়, তা মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে। এমন সব সমস্যার মুশকিল আসান করতে রাজ্যে চালু হয়েছে স্বাস্থ্যসাথী হেলথ স্কিম (Swasthya Sathi Health Scheme)।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণা অনুযায়ী ১ ডিসেম্বর শুরু হয়েছে এই প্রকল্প । রাজ্যের মানুষের হাতে ইতিমধ্যেই পৌঁছে গিয়েছে স্বাস্থ্যসাথী স্মার্ট কার্ড। তাতেই লোকে সুবিধা পেতে শুরু করেছে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে । স্বাস্থ্য ভবনের সূত্রে জানা গিয়েছে , দুয়ারে সরকার অভিযানে যাঁরা কার্ড পেয়েছেন এমন ১২৯৭ জন ইতিমধ্যেই বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা পেয়েছেন। তাঁদের চিকিৎসার মূল্য ২ কোটি ২৮ লক্ষ টাকা।
স্বাস্থ্য কর্তাদের দাবি, স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পটি যে রাজ্যের সবার আস্থা অর্জনে সক্ষম হয়েছে, তার প্রমাণ এই পরিসংখ্যান। হাতে কার্ড পেয়েই বেসরকারি হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা করাচ্ছেন তাঁরা। পুরো খরচ বহন করছে সরকার।

স্বাস্থ্য ভবনের পরিসংখ্যান বলছে , দুয়ারে সরকার অভিযানে ৬৫ লক্ষ মানুষ কার্ড পাওয়ার জন্য আবেদন করেছিলেন। তার মধ্যে প্রাথমিকভাবে ৫২ লক্ষ আবেদন বিবেচিত হয়েছে। ১ জানুয়ারি পর্যন্ত ১৫ লক্ষ কার্ড বিলি করে দেওয়া হয়েছে। জানুয়ারিতে সব মিলিয়ে ৩০-৩৫ লক্ষ কার্ড বিলি করে দেওয়া সম্ভব হবে বলে প্রশাসন মনে করছে।বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গিয়েছে , সদ্য যারা কার্ড পেয়েছেন তাদের জন্য প্রতিদিন অন্তত ৫০ লক্ষ টাকার চিকিৎসা মূল্য বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল সরকার বা বিমা সংস্থার কাছে চাওয়া হচ্ছে। স্বাস্থ্য দফতরের পরিসখ্যান বলছে, দুয়ারে সরকার কার্ড প্রাপকেরা প্রতিদিন অন্তত ৫০ লক্ষ টাকার চিকিৎসা পাচ্ছেন। সরকারি প্রকল্পের সাফল্য দাবি করে স্বাস্থ্য কর্তারা জানাচ্ছেন, পুরনো কার্ড প্রাপকদের সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা যেমন চলছিল তেমন চলছেই। ৩১ ডিসেম্বরও স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে ৪ কোটি ৩৯ লক্ষ টাকার চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। বেসরকারি হাসপাতাল-নার্সিংহোম ছাড়াও সরকারি হাসপাতালগুলিতেও এই প্রকল্পের অধীনে চিকিৎসা করার প্রবণতা বাড়ছে ।

মুখ্যমন্ত্রী আগেই জানিয়েছেন , বাংলার সাড়ে ৭ কোটি মানুষের কাছে প্রকল্প পৌঁছে দেবে রাজ্য সরকার। কারণ, সরকার হাসপাতালে সব চিকিৎসা এমনিতে বিনামূল্যে দেওয়া হয়। স্বাস্থ্যসাথী কার্ড থাকলে সরকারি হাসপাতালও সেই মূল্যের চিকিৎসা বিমা সংস্থাগুলির কাছ থেকে আদায় করে। এখনও পর্যন্ত ২১দিনে ১২৯৭ জনের ২ কোটি টাকার চিকিৎসা করা হয়েছে ।

এমনকি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প নরেন্দ্র মোদির আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পের চেয়ে অনেক বেশি জনমুখী বলে দাবি করেছে তৃণমূল। রাজ্যের শাসকদলের বক্তব্য, আমজনতাকে স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার মাপকাঠিতে স্বাস্থ্যসাথী অনেক এগিয়ে আয়ুষ্মান ভারতের চেয়ে। তৃণমূল এই দাবির পক্ষে বিস্তারিত তথ্য ও পরিসংখ্যান তুলে ধরেছে।

এই প্রকল্পে বিমার ঊর্ধ্বসীমা ৫ লক্ষ টাকা। তবে পরিবারের সদস্যদের মাথাপিছু ৫ লক্ষ টাকা বিমার সুবিধা পাওয়া যাবে না। পরিবারপিছু মিলছে ৫ লক্ষ টাকার ক্যাশলেস চিকিৎসার সুযোগ।

আরও পড়ুন-জমি-বিতর্ক: বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষকে আইনি নোটিশ অমর্ত্য সেনের

Advt

Previous articleরাতে ভালো ঘুমিয়েছেন মহারাজ! খেয়েছেন চিকেন স্টু- টোস্ট-ফল
Next articleভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে ফের সুড়ঙ্গের সন্ধান