কৃষকদের বকেয়া মেটাতে হবে রাজ্যকেই, নতুন দাবিতে সরব শুভেন্দু

“ভোটের মুখে চাপে পড়ে কেন্দ্রের কিষাণ সম্মান নিধি প্রকল্প বাংলায় চালু করতে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ ওই প্রকল্প চালু হলেই বাংলার কৃষকদের হাতে গত দু’বছরের বকেয়া ১৪ হাজার টাকাও রাজ্যকে দিতে হবে৷ এই দাবিতে এবার শুরু হবে আন্দোলন”৷

রাজ্যকে চাপে ফেলতে বুধবার সবংয়ের তেমাথানি’র সভায় নতুন এই দাবি নিয়ে রাজ্যজুড়ে কৃষক আন্দোলনের ডাক দিলেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী ৷ শুভেন্দু বলেন, “তৃণমূল সরকার পরিকল্পিতভাবে গত দু’বছর কৃষকদের বঞ্চিত করেছে কিষাণ সম্মান নিধির টাকা থেকে৷ ভোটের জন্য আজ মুখ্যমন্ত্রী চালু করতে চাইছেন প্রধানমন্ত্রীর এই প্রকল্প৷ চালু করলেই হবেনা, একইসঙ্গে দু’বছরের বকেয়া টাকাও দিতে হবে কৃষকদের৷ না দিলেই রাজ্য শুরু হবে কৃষক আন্দোলন৷

বিজেপি নেতা হিসেবে পশ্চিম মেদিনীপুরে এর আগে দু’টি সভা করেছেন শুভেন্দু। এদিন তৃতীয় সভাটি করলেন তৃণমূল সাংসদ মানস ভুঁইয়ার ‘গড়’ সবং-এ৷

বক্তব্যের শুরুতেই এদিন শুভেন্দু ‘ক্ষমা’ চেয়ে নেন জেলার বিজেপিনেত্রী অন্তরা ভট্টাচার্যের কাছে৷ শুভেন্দু বলেন, “অন্তরাদেবীর কাছে ক্ষমা চাইছি৷ আমার জন্যই গত উপনির্বাচনে উনি জিততে পারেননি৷ মানস ভুঁইয়া ধরাধরি করে স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের বঞ্চিত করে নিজের পত্নী গীতা ভুঁইয়াকে প্রার্থী করে নেন৷ এই প্রার্থী নিয়ে তৃণমূলে ক্ষোভ ছিলো৷ আমার জন্যই ওই সাংসদের স্ত্রী বিধায়ক হতে পেরেছেন৷ তাই আমি অন্তরা দেবীর কাছে ক্ষমা চাইছি৷ আমি না থাকলে উনি বিজেপির বিধায়ক হয়ে যেতেন৷” প্রসঙ্গত, সবংয়ের উপনির্বাচনে বিজেপির প্রার্থী ছিলেন
অন্তরা ভট্টাচার্য৷ এদিন শুভেন্দু মুক্তকন্ঠে প্রশংসা করেন ওই জেলার এক সময়ের পুলিশ কর্তা, বর্তমানে রাজ্য বিজেপির সহ সভাপতি ভারতী ঘোষের৷ বলেন,”কেশপুরে ভোট লুঠ করেছে বলেই ভারতী ঘোষ দিল্লি যেতে পারেননি”৷ শুভেন্দু বলেন, “অন্তরাদেবী এবং ভারতী ঘোষকে কথা দিচ্ছি একুশের বিধানসভা ভোটে এই দু’জনই জয়ী হবেনই৷ দায়িত্ব নিয়েই বলছি৷”

বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর শুভেন্দু বিগত প্রতিটি সভায় যে সুরে তৃণমূলকে তোপ দেগেছেন, এদিনও তার অন্যথা হয়নি৷
শুভেন্দু অধিকারী এদিন বলেন, “আজ তৃণমূল আমাকে বিশ্বাসঘাতক বলছে৷ তৃণমূল আমাকে প্রতিষ্ঠা দিয়েছে৷ আজ আমি সেই দল ছেড়েছি৷ আরে, কংগ্রেস এবং রাজীব গান্ধী প্রতিষ্ঠা দিয়েছিলো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে৷ উনি সেদিন রাজীব গান্ধীর সঙ্গে বেইমানি করে ‘গডসের দলের’ হাত ধরেছিলেন কেন ?”

শুভেন্দুর সঙ্গেই বিজেপিতে যাওয়া জেলা কর্মাধ্যক্ষ অমূল্য মাইতি এদিনের সভা পরিচালনা করেন৷ শুভেন্দু ঘোষণা করেন, “আগামী ৮ জানুয়ারি বিজেপি নন্দীগ্রামে লক্ষাধিক মানুষের জমায়েত করে উৎখাত করে দেবে তৃণমূলকে”৷ একইসঙ্গে জানান, কেশপুরে ১৬ তারিখে হবে বিজেপির ঐতিহাসিক সমাবেশ৷

ওদিকে, শুভেন্দুর এদিনের সভার পাল্টা সভা ডেকেছে তৃণমূলও। কাল, বৃহস্পতিবার ওই একই স্থানে সভা হবে বলে জানিয়েছেন জেলা তৃণমূলের সভাপতি অজিত মাইতি৷

Previous articleঅস্ট্রেলিয়ার কোভিড প্রটোকল নিয়ে মুখ খুললেন রাহানে
Next articleকেন্দ্রের পদ ছাড়াও যায়, নাম না করে শুভেন্দুকে খোঁচা কুণালের