যেন ভূতের মুখে রাম নাম, শুভেন্দুর মুখে এখন বুদ্ধবাবুর প্রশংসা!

তৃণমূল থেকে বিজেপি (bjp) হয়েই ‘নতুন অবতার’ সাজতে চাইছেন শুভেন্দু অধিকারী (shuvendu adhikari)! না হলে তাঁর মুখে রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের (buddhadev bhattacharya) প্রশংসা? নন্দীগ্রাম, নয়াচরে যে বুদ্ধবাবুর শিল্পায়ন নীতির সমালোচনায় গলা ফাটিয়ে তৃণমূলের (tmc) ‘বড় নেতা’ হয়েছিলেন শুভেন্দু, আজ পুরনো দল ছেড়ে তৃণমূলকে বিঁধতে গিয়ে আশ্রয় নিতে হচ্ছে সেই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর? সিপিএম (cpm) যদিও এনিয়ে প্রবল কটাক্ষ করেছে নব্য বিজেপি নেতা শুভেন্দুকে। এই বক্তব্যকে ভোল বদলের ডিগবাজি বলে সমালোচনা করেছে তৃণমূলও।

বৃহস্পতিবার কেশপুরের এক জনসভায় দাঁড়িয়ে শুভেন্দু বলেন, “বাম আমলেও রাজ্যের উন্নতি হয়েছে। কিন্তু এই সরকারের আমলে সেরকম কোনও উন্নতি হয়নি। বুদ্ধবাবু অত্যন্ত সৎ ছিলেন। আমরা লক্ষ্মণ শেঠের মত হার্মাদদের বিরোধিতা করেছি।”

ঘটনা হল, দীর্ঘদিন ধরে তৃণমূলের সাংসদ, বিধায়ক, মন্ত্রী ও একাধিক কমিটির চেয়ারম্যানের পদে থাকা শুভেন্দু তাঁর পুরনো দলের বিরোধিতা করতে গিয়ে এখন ধারাবাহিকভাবে বামেদের প্রশংসা করে যাচ্ছেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ মনে করেন, বাম ভোট বিজেপিতে টেনে আনার তাগিদ থেকেই শুভেন্দুর এই ভোল বদল। নব্য বিজেপি নেতার গলায় এদিন যেভাবে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের প্রশংসা শোনা গিয়েছে, তা রাজ্য রাজনীতিতে নজিরবিহীন বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

প্রসঙ্গত, বাম আমলে বুদ্ধবাবুর শিল্পায়নের যে পরিকল্পনা ছিল তার অন্যতম ছিল নন্দীগ্রাম ও নয়াচরকে কেন্দ্র করে। সেই নন্দীগ্রাম ও নয়াচরে যে বা যাঁদের জন্য শিল্প হয়নি, তার মধ্যে সামনের সারিতে ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। এক সময় এই শুভেন্দুই যে নিয়ম করে বুদ্ধবাবুকে ‘গণহত্যার নায়ক’ বলে অভিহিত করতেন তা মনে করাচ্ছেন অনেকে। সেই বুদ্ধবাবুই আজ তাঁর চোখে হয়েছেন সৎ ব্যক্তি। এ যেন ভূতের মুখে রাম নাম!

প্রত্যাশিতভাবেই শুভেন্দুর এই মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করেছে সিপিএম। দলের নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, “একেই বলে ঠেলায় না পড়লে বিড়াল গাছে ওঠে না। এই বুদ্ধবাবুর আনা শিল্পকে তাড়াতে যারা অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছিলেন, তার মধ্যে শুভেন্দু অন্যতম। সেই শুভেন্দুর গলায় এখন বুদ্ধবাবুর প্রশংসা?” সুজনের কথায়, “এই প্রশংসা বুদ্ধবাবুর প্রয়োজন নেই। তিনি কী কাজ করেছেন তা রাজ্যের সব মানুষই জানেন।” অন্যদিকে তৃণমূলের পক্ষ থেকে শুভেন্দুর এই মন্তব্যকে সুবিধাবাদী রাজনীতির জ্বলন্ত উদাহরণ বলে আখ্যা দেওয়া হয়েছে।

 

Previous article২২ জানুয়ারি, শুক্রবারের বাজার দর
Next articleআজকের সোনা রুপোর দাম