মালদা জেলা নেতাদের একাংশের ভূমিকা নিয়ে ক্ষুব্ধ কালিয়াচক তৃণমূল নেতৃত্ব

কেন্দ্রের কৃষি আইন(Farm Law) প্রত্যাহারের দাবিতে কর্মসূচি ও কর্মিসভার মধ্যেই মালদার দলীয় নেতাদের একাংশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিল কালিয়াচক তৃণমূল নেতৃত্ব । এমনকি দক্ষিণ মালদার কংগ্রেস(Congress) দলের সাংসদ এবং সংশ্লিষ্ট এলাকার বিধায়কের চরম সমালোচনা করেছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতারা(TMC leader)।

শনিবার বিকালে কালিয়াচক ১ ব্লকের জালালপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বড়নগর ডাঙ্গার মাঠে তৃণমূলের উদ্যোগে কর্মী সভাটি অনুষ্ঠিত হয় । সেখানেই কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের(BJP government) কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে বক্তব্য রাখতে গিয়ে কালিয়াচকের বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার অঞ্চল কমিটি গঠন নিয়ে একরাশ ক্ষোভ উগরে দেন উপস্থিত নেতারা। এদিনের এই সভায় উপস্থিত হয়েছিলেন কালিয়াচক ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আতিউর রহমান, ছিলেন পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য হাসেম আলী, উত্তম চৌধুরী, স্থানীয় তৃণমূল নেতা আবু সুফিয়ান, মিরাজুল বসনি সহ অন্যান্যরা।

এদিন বক্তব্য রাখতে গিয়ে তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য হাসেম আলী দলের মালদার নেতাদের একাংশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দেন। তিনি বলেন, অসময়ে এবং মানুষের বিপদের সময় মালদার একাংশ নেতারা পাশে থাকেন না। ঝড়, জল বৃষ্টিতেই এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য থেকে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিকে কাজ করতে হচ্ছে এবং মানুষের পাশে থাকতে হচ্ছে। কিন্তু যারা অন্য দল থেকে তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন, তাদের অঞ্চল কমিটির মধ্যে রাখা হয়েছে। এবং তাদের বিশেষ করে সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে। এরকম ভাবে চলতে থাকলে মানুষ মেনে নেবে না। এতে করে আমাদের দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। আমরা দলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের(Mamata Banerjee) আদর্শ এবং নীতি নিয়ে দল করছি। আগামী দিনেও সেই আদর্শ মেনে মুখ্যমন্ত্রীর অনুপ্রেরণায় দল করে যাব।

স্থানীয় তৃণমূল নেতা আবু সুফিয়ান বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় যতগুলো প্রকল্প করেছেন, সবই সাধারণ মানুষের জন্য। অথচ লকডাউন থেকে বন্যা, বিভিন্ন দুর্যোগে একবারের জন্যও এলাকার কংগ্রেস দলের সাংসদ এবং বিধায়কদের দেখা যায়নি। অথচ তারা এখন আগামী নির্বাচনের বিধানসভা নির্বাচনের জন্য মানুষকে ভুল বোঝাচ্ছে। পাশাপাশি এতদিন যারা তৃণমূলের হয়ে কাজ করে গেলেন, তাদের অধিকাংশকেই বঞ্চিত রেখে অন্য দল থেকে আসা নেতাদের প্রতি বিশেষ পদ দেওয়া হচ্ছে। এরকম ভাবে চলতে থাকলে দলীয় কর্মীদের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছে। আমরা চাই এলাকায় সংঘবদ্ধভাবে দলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের জন্য কাজ করতে।

আরও পড়ুন:শোভন-সহ দলত্যাগীদের চড়া সুরে আক্রমণ কুণালের

কালিয়াচক ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আতিউর রহমান বলেন, কেন্দ্রের কৃষি আইন নিয়ে দিল্লি এখন উত্তাল। এই বিল প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েই দলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সৈনিক হিসেবে আমরা কালিয়াচক ব্লক জুড়ে সভা-সমিতি করছি। এদিনও কর্মিসভা করা হয়েছে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, কালিয়াচকের বিভিন্ন অঞ্চলে মনমতো নেতাদের বিভিন্ন পদে বসানো হয়েছে। অথচ যারা এতদিন ধরে সক্রিয়ভাবে দল করে আসছে, সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধিতে বিশেষ ভুমিকা নিয়েছে, তাঁদের কোন গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না। এতে করে জনের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। পুরো বিষয়টি রাজ্য নেতৃত্বকে জানিয়েছি। আমরা চাই সঙ্গবদ্ধ হয়ে এলাকায় তৃণমূলকে আরো শক্তিশালী করতে। এবং আগামী বিধানসভা নির্বাচনে সুজাপুর বিধানসভা কেন্দ্র জয় করে মুখ্যমন্ত্রীকে উপহার হিসেবে দিতে।

Advt

Previous articleশোভন-সহ দলত্যাগীদের চড়া সুরে আক্রমণ কুণালের
Next articleরাজ্য উন্নয়নে সঠিক দায়িত্ব পালন করছে না বলে অভিযোগ কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর