ছিল তৃণমূল কংগ্রেসের রাজনৈতিক জনসভা। বাঁকুড়ার (bankura) ওন্দা বিধানসভা কেন্দ্রের রামসাগর এলাকায়। সেখানে দাঁড়িয়ে জনসভার ভাষণের পাশাপাশি যেন এক রাজনৈতিক কর্মশালার বক্তৃতা দিলেন তৃণমূল মুখপাত্র ও প্রাক্তন সাংসদ কুণাল ঘোষ। শুধু তৃণমূল (tmc) কর্মী-সমর্থকরাই নন, কুণালের বক্তৃতার অন্যতম লক্ষ্য ছিলেন বিজেপি (bjp) কর্মী-সমর্থকরাও। প্রচারে যে যে ইস্যুতে বিজেপি তৃণমূলকে আক্রমণ করছে, সেগুলির জবাব দেওয়ার পাশাপাশি গেরুয়া শিবিরের অভিযোগগুলি যুক্তি দিয়ে খণ্ডন করলেন কুণাল ঘোষ (kunal ghosh)।

বুধবার ওন্দার যে এলাকাটিতে তৃণমূল জনসভার আয়োজন করেছিল সেটি মূলত বিজেপির ঘাঁটি বলে পরিচিত। আজ নয়, সেই ১৯৯৫ সাল থেকেই। এমন এলাকাকে সচেতনভাবেই নিজেদের রাজনৈতিক প্রচারের জন্য বেছে নিয়েছিল রাজ্যের শাসক দল। জনসভার অন্যতম বক্তা ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য ও দলীয় মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। বিজেপির বিরুদ্ধে ধারালো আক্রমণ শানান সুবক্তা চন্দ্রিমা। অন্যদিকে কুণাল প্রত্যাশিত জনসভার বক্তৃতার পাশাপাশি রামসাগর এলাকার রাজনৈতিক অবস্থানের কথা মাথায় রেখে বিরোধী দল বিজেপির সাধারণ কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশ করে নিজের রাজনৈতিক যুক্তি পেশ করেন। প্রসঙ্গত, ২০১৯-এর ভোটে বিষ্ণুপুর লোকসভা কেন্দ্রে এই এলাকা থেকে লিড পেয়েছিল বিজেপি। কুণাল বলেন, বিজেপি কর্মীরা তৃণমূলের শত্রু নন, রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী। সেই শিষ্টাচার মেনেই বিপক্ষের কর্মী- সমর্থকদের সঙ্গে সংযোগ গড়ে তুলে নিজেদের রাজনৈতিক বক্তব্য বোঝাতে হবে, পাল্টা অভিযোগ এলে ধৈর্য ধরে তা শুনতে হবে, প্রয়োজনে নতমস্তকে ভুল স্বীকার করতে হবে। কেউ কোনও প্ররোচনা তৈরি করলে তাতে পা না দিয়ে তৎক্ষণ পুলিশ-প্রশাসনকে জানাতে হবে। এদিনের বক্তৃতায় লোকসভা আর বিধানসভা ভোটের পার্থক্য তুলে ধরেন কুণাল। বলেন, লোকসভা ভোটে আপনাদের অনেকের কাছে নরেন্দ্র মোদিকে জেতানোর তাগিদ ছিল। কারণ কংগ্রেস কোনও বিকল্প দিতে পারেনি। আর এটা রাজ্যের বিধানসভা ভোট। এখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কোনও বিকল্পের সন্ধান দিতে পারেনি বিজেপি। মোদি তো আর রাজ্য চালাবেন না! উদাহরণ দিতে গিয়ে দিল্লির লোকসভা আর বিধানসভা ভোটের সম্পূর্ণ উল্টো ফলের চিত্রটি তুলে ধরেন কুণাল ঘোষ। বিজেপি কর্মীদের উদ্দেশে তাঁর প্রশ্ন ছিল, কাদের জেতানোর কথা ভাবছেন আপনারা? শুভেন্দু অধিকারী, মুকুল রায় সহ যেসব নেতার বিরুদ্ধে পরিবারতন্ত্র, বিরোধীদের গণতন্ত্র হরণ, সিন্ডিকেটরাজ, নারদা ঘুষকাণ্ডের মত ইস্যুতে প্রচার চালিয়েছেন এখন তো তাঁরা আপনাদের দলে? কেউ কেউ তদন্ত থেকে বাঁচতে আবার কেউ অন্য কোনও লোভে দলবদল করে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। এদের সঙ্গে বিজেপির রাজনৈতিক আদর্শের সম্পর্ক কোথায়? এরা তো বিজেপিকে তৃণমূলের বি-টিম বানিয়ে ফেলেছেন! আত্মমর্যাদাসম্পন্ন দীর্ঘদিনের বিজেপি সমর্থকরা এদের জন্য কেন তৃণমূলকে দূরে ঠেলে দেবেন?

আরও পড়ুন- অ্যাডামাস বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ সমাবর্তন, থাকছেন দুই নোবেলজয়ী অধ্যাপক
