বিজেপিতে শান্তনু-বিশ্বজিৎ দ্বন্দ্ব চরমে, বনগাঁ উত্তরের বিধায়কের দল ছাড়ার জল্পনা তুঙ্গে

আমন্ত্রণ থাকা সত্বেও বৃহস্পতিবার ঠাকুরনগরে(thakurnagar) অমিত শাহের সভায় উপস্থিত হতে গিয়ে যথেষ্ট বেগ পেতে হয় বনগাঁ উত্তরের বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাসকে(Biswajit Das)। প্রায় ৩০ মিনিট বাইরে দাঁড়িয়ে থাকার পর শেষ পর্যন্ত শুভেন্দু অধিকারীর(Suvendu Adhikari) হস্তক্ষেপে সভায় যোগ দিতে পারেন তিনি। এই ঘটনায় বিজেপির(BJP) অন্দরের কোন্দল কার্যত প্রকাশ্যে চলে আসে। জল্পনা বাড়তে থাকে এবার হয়তো ক্ষুব্দ বিশ্বজিৎ যোগ দিতে পারেন তৃণমূলে(TMC)। সেই ঘটনার পর শুক্রবার সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে ক্ষোভ উগরে দিলেন বিশ্বজিৎ। সরাসরি শান্তনু ঠাকুরের(Shantanu Thakur) বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে তিনি বলেন, ‘মতুয়াদের নিয়ে রাজনীতি করা হচ্ছে।’

বৃহস্পতিবার অমিত শাহের সভায় প্রবেশ করতে গিয়ে এভাবে বাধা পাওয়ার পর অপমানিত বিশ্বজিৎ এদিন ক্ষোভ উগরে দিলেন সংবাদমাধ্যমের সামনে। শুক্রবার শান্তনু ঠাকুরের বিরুদ্ধে রীতিমত সুর চড়িয়ে তিনি বলেন, ‘উনি ব্ল্যাকমেল করে জেলা করলেন। এরপর তিনি তাঁর কার্যকলাপ শুরু করলেন। দলকে ব্ল্যাকমেল করছেন শান্তনু ঠাকুর।’ পাশাপাশি সিএএ (CAA) নিয়ে বলেন, ‘করোনা টিকাকরণ শেষ হতে ৫ বছর লাগবে। মতুয়ারা কি সেদিন নাগরিকত্ব পাবে?মতুয়াদের নিয়ে রাজনীতি করা হচ্ছে।’ শান্তনু ঠাকুরকে তোপ দেগে তিনি আরো বলেন, ‘মতুয়া কার্ডের নাম করে উনি অনেক কিছু করছেন উনি। আজ বলব না।’ পাশাপাশি জল্পনা উস্কে তিনি জানান, ‘আমি আমার ভবিষ্যতের কথা পরে জানাব।’ বিশ্বজিতের এহেন অভিযোগের পর ফের জল্পনা শুরু হয়েছে তবে কি এবার তৃণমূলে যোগ দেবেন বনগাঁ উত্তরের বিধায়ক?

অবশ্য এই জল্পনা সূত্রপাত হয়েছিল বিধানসভার অলিন্দে। বিধানসভা অধিবেশনের শেষ দিনে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে হঠাৎই সাক্ষাৎ করেন বিশ্বজিৎ দাস ও সুনীল সিং। মমতার পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করার পাশাপাশি, পরে তারা কথা বলতে যান মুখ্যমন্ত্রী ঘরে। বন্ধ ঘরে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ আলোচনা হয় দুজনের। বিষয়টি নিতান্ত সৌজন্য সাক্ষাৎ বলে বিশ্বজিৎ দাবি করলেও রাজনৈতিক জল্পনা তাতে মেটেনি। অস্বস্তিতে পড়তে হয় রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বকে। নড়েচড়ে বসে রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। দফায় দফায় তার সঙ্গে বৈঠক করেন মুকুল কৈলাসরা। সব শেষে ঠাকুরনগরের সভায় আমন্ত্রণ থাকা সত্ত্বেও বিশ্বজিৎকে বাধা দেওয়ার ঘটনা এটাই প্রমাণ করে, তাঁর কর্মকাণ্ডে মোটেই সন্তুষ্ট নয় গেরুয়া শিবির। অবশ্য বিজেপির তরফ থেকে তাকে আমন্ত্রণ জানানো হলেও মতুয়া সম্প্রদায় তরফে শাহী সভায় আমন্ত্রণ জানানো হয়নি বিশ্বজিৎকে। আর এই গোটা ঘটনার পিছনে শান্তনু ঠাকুর রয়েছেন বলেই জানা যাচ্ছে বিজেপি সূত্রে।

আরও পড়ুন:রাজ্যের অনুমতি ছাড়াই কয়লা কাণ্ডে তল্লাশি চালাতে পারবে সিবিআই, নির্দেশ হাইকোর্টের

অন্যদিকে বিশ্বজিতের এই অপমানে বনগাঁয় বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব রীতিমতো বেআব্রু হয়ে পড়ে। অমিত শাহ আসার আগে বিজেপির অনেক নেতা, সাংসদরা বক্তব্য রাখলেও বিশ্বজিৎকে সুযোগ দেওয়া হয়নি। এই নিয়ে সরব হয়েছেন বাগদার বিজেপি বিধায়ক দুলাল বর। বিশ্বজিৎকে এই ‘অপমান’-এর জন্য শান্তনুকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন দুলাল। যদিও এত কিছু ঘটে যাওয়ার পর এ নিয়ে শান্তনু ঠাকুরকে প্রশ্ন করা হলে বিড়ম্বনা এড়াতে সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খোলেননি শান্তনু। তবে পরিস্থিতি যা তাতে নির্বাচন পূর্বে গেরুয়া শিবিরের অন্দরে যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ক্রমশ তীব্র হয়ে উঠেছে তা কার্যত স্পষ্ট।

Advt

Previous articleরাজ্যের অনুমতি ছাড়াই কয়লা কাণ্ডে তল্লাশি চালাতে পারবে সিবিআই, নির্দেশ হাইকোর্টের
Next articleবামেদের ১২ ঘণ্টার হরতালে মিশ্র সাড়া উত্তরবঙ্গে