‘রাম বনাম দুর্গা’ প্রসঙ্গে বেফাঁস মন্তব্যে জড়ালেন দিলীপ, নিন্দায় রাজ্য রাজনীতি

দেবী দুর্গাকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যে জড়ালেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে ‘রাম বনাম দুর্গা’ প্রসঙ্গে বেফাঁস মন্তব্য করেন বিজেপি নেতা। মা দুর্গার অস্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। বেফাঁস মন্তব্য করে বলেন, রামের পূর্বপুরুষের নাম পাওয়া যায়, দুর্গার পাওয়া যায় কিনা তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে! দিলীপ ঘোষের এই মন্তব্যের পর নিন্দায় সরব হয়েছে রাজ্যের শাসক দল থেকে শুরু করে সমগ্র বঙ্গসমাজ। অভিযোগ, এই মন্তব্য করে রাজ্য সভাপতি যেমন দেবী দুর্গার অবমাননা করেছেন, তেমনি অপমান করেছেন বাংলার নারীদেরও। পাশাপাশি গোটা বাংলার মানুষকে অসম্মানিত করেছেন বিজেপি ।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেও বলেছিলেন, আমরা দুর্গার পুজো করি। রামও দেবী দুর্গার পুজো করতেন। কিন্তু বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ হঠাৎ দেবী দুর্গার অস্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বুঝিয়ে দিলেন হিন্দুত্ববাদী দলের সদস্য হলেও হিন্দু দেবদেবী বিষয়ে কিছুই জানেন না। তাঁর কাছে শ্রী রামচন্দ্র যতখানি না পুরুষোত্তম, তাঁর থেকেও বেশি রাজনীতি। এইপ্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষের তীব্র নিন্দা করে তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘রামের যদি বংশ পরিচয় থাকে সীতার পাতাল প্রবেশের ইতিহাস আছে। মানছি রামের বংশ পরিচয় আছে। অযোধ্যার ঠিকানা যদি দিলীপবাবু জানেন তাহলে কানপুরের ঠিক একটু দূরে বিঠুরে গিয়ে দেখে আসুন, ওখানে একটি জঙ্গলের মধ্যে সীতাকে অন্তসত্ত্বা অবস্থায় যে ঘরটায় রাখা হয়েছিল সেই ঘর আছে, লব কুশের জন্মের ঘর আছে, সীতার পাতাল প্রবেশের কুয়োটা আছে। সেখানে নিত্যপুজো হয়। ওখানে রাম বললে তাড়া করবে। ওনারা যে পদ্ম পদ্ম করে চেঁচাচ্ছে , মা দুর্গার পায়ে থাকে পদ্ম আর সেই পদ্ম মা দুর্গার পায়ে দিয়ে পুজো করেছিলেন রাম। যাকে বলে অকালবোধন। নারীশক্তির প্রতীক যদি আমাদের মুখ্যমন্ত্রী হন, তাহলে দিলীপবাবু ভেবেচিন্তে বলুন কোন ফুল আর কাকে কী বলছেন। রামকে সবাই শ্রদ্ধা করেন। অকারণে রাজনীতিতে রামকে টেনে রামের মানহানি করেন। রামের গুষ্টির কেউ বেঁচে থাকলে দিলীপ ঘোষের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করতেন।’
‘রাম বনাম দুর্গার’ এই বেফাঁস মন্তব্যে রাতারাতি দিলীপ ঘোষের বিরুদ্ধে গোটা বাংলা জুড়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। যে বাংলায় মা দুর্গাকে মাতৃরূপে পুজো করা হয়, সেই বাংলায় বসেই দিলীপ ঘোষের এহেন মন্তব্যে বাঙালির ক্ষোভের স্বীকার হয়েছেন দিলীপ ঘোষ। সেটাই স্বাভাবিক। বুদ্ধিজীবী মহল বিজেপির রাজ্য সভাপতিকে অবার্চীন বলে দাবি করছেন। রামচন্দ্র কেন পুরুষোত্তম বা তিনি আদৌ পুরুষোত্তম ছিলেন কিনা তাই নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। রামচন্দ্র আদৌ রাজা ছিলেন কিনা,  রাজা হিসেবে  রামচন্দ্র জনপ্রিয় ছিলেন কিনা, দিলীপ ঘোষ অন্তত যেমনটা দাবি করছেন, তা আদৌ সত্যি কিনা, তা নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে। এদিকে দিলীপ ঘোষের মন্তব্য প্রসঙ্গে ব্রাত্য বসু বলেন, ‘ওদের পুরাণ সম্বন্ধে ধারণা নেই । ওরা শাক্ত সম্পর্কে কিছু জানে না। একজন নাগপুরিয়ান মূর্খ এজেন্টের কাছ থেকে এটাই প্রত্যাশিত।’

Previous article‘খেলা হবে’, তৃণমূলের মঞ্চে রথীন কিস্কুর গান শুনে তৃপ্তির হাসি অনুব্রতর মুখে
Next articleদীর্ঘ নিভৃতবাস কাটিয়ে প্রকাশ্যে এলেন বটে কিন্তু জমাতে পারলেন না রূপা