নারী সুরক্ষায় ‘সেফ সিটি’-র তকমা তিলোত্তমার

নারী সুরক্ষায় শেষ দু’বছরে দেশের সবচেয়ে ‘সেফ সিটি’-র শিরোপা পেল শহর কলকাতা। ‘ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরো’(NCRB) দু’বছর (২০১৮ ও ২০১৯) কলকাতাকে দেশের ‘সেফ সিটি’-র তকমা দিয়েছে। অন্য শহরের তুলনায় এই শহরের নারী নিরাপত্তা যে অনেকটাই ভাল, তা বারবারই উঠে এসেছে ‘ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরো’-র পরিসংখ্যানেও। অনান্য রাজ্যের তুলনায় নারী সুরক্ষায় অনেকটাই এগিয়ে এই শহর । তাই নিরাপত্তার দিক থেকে রাজ্যের শাসকদলের দাবিতে শিলমোহর, ভোটের আগে অ্যাডভানটেজ তৃণমূল বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা । পার্ক স্ট্রিট, কামদুনিকাণ্ড পার করে ‘সেফ সিটি’-র মুকুট পাওয়ায় স্বস্তিতে শাসকদল।

দশ বছর আগে রাজ্যে ক্ষমতায় এসেছিল তৃণমূল সরকার। কিন্তু শুরুটা খুব একটা মসৃণ ছিল না। ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারিতেই  ঘটে ‘পার্ক স্টিট ধর্ষণ-কাণ্ড’। তবে মুখ্যমন্ত্রী শুরুতেই জোরকদমে এই তদন্তকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সবরকমভাবে সাহায্য করেন।পার্ক স্ট্রিট ধর্ষণ কাণ্ডে অভিযুক্তদের একাংশ শাস্তি পায়। পরের বছরই ঘটে যায় কামদুনি-কাণ্ড। যা তৃণমূল জমানার আরও একটি চ্যালেঞ্জ। কামদুনি ঘটনার পরে ওই গ্রামে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কামদুনিকাণ্ডে দোষীদের শাস্তিতেও কোনও ত্রুটি রাখেননি মুখ্যমন্ত্রী।

বর্তমানে এধরণের ঘটনায় দ্রুত গ্রেফতার এবং চার্জশিটও হয়েছে। ২০১৮ সালে দোষীদের তিন দিনের মাথায় ধর্ষণে অভিযুক্তদের গ্রেফতার এবং দ্রুত চার্জশিট দিয়ে ‘নজির’ গড়ার জন্য কেন্দ্রের পুরস্কারে স্বীকৃতি পেয়েছে ধূপগুড়ি থানার পুলিশ। মধ্যমগ্রামের ট্যাক্সিচালকের নাবালিকা মেয়েকে গণধর্ষণের অপরাধে দোষী পাঁচ যুবকের ২০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড হয়। পাশাপাশি হাওড়ার আমতার মুক্তিরচক গ্রামের এক মহিলা ও তাঁর জেঠশাশুড়িকে গণধর্ষণের অভিযুক্ত স্থানীয় তৃণমূল নেতা বরুণ মাখাল ও রঞ্জিৎ মণ্ডল-সহ ১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা চলছে। এধরণের বহু ‘নজিরবিহীন’ ঘটনার সাক্ষী থেকে রাজ্যবাসী।

যেখানে এখনও যোগী রাজ্যে নিত্যদিন নারীদের লালসার স্বীকার হতে হয়, সেখানে পশ্চিমবঙ্গবাসী অনেকটাই সুরক্ষিত, বলছে NCRB।  অন্য শহরের তুলনায় এই শহরের নারী নিরাপত্তা যে অনেকটাই ভাল, তা বারবারই উঠে এসেছে তার NCRB-র পরিসংখ্যানেও। কেন্দ্রীয় সরকারে অধীনে থাকা দিল্লি পুলিশের সঙ্গে কলকাতার তুলনা করে ওই পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৯ সালে এই শহরের ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ১৪টি। আর দিল্লিতে ১২৩১টি। তার আগের বছর এই সংখ্যা যথাক্রমে ১৫ ও ১১৬৮। শুধু দিল্লিই নয়, মুম্বই, বেঙ্গালুরু শহরকেও নারীদের উপর অপরাধের সংখ্যায় অনেক অনেক পিছনে ফেলে দিয়েছে কলকাতা। দেশের নিরাপত্তায় সেরা এই তকমা ভরসা বাড়িয়েছে রাজ্যের মহিলাদের। রাত-বিরেতে কলকাতা-সহ রাজ্যের সব শহরে মহিলাদের চলাফেরা বেড়ে যাওয়াই তার উদাহরণ। এনিয়ে পুলিশ কর্তাদের বক্তব্য, রাজ্যে থানার সংখ্যা বাড়ানো এবং নতুন নতুন মহিলা থানা করার ফল মিলেছে হাতেনাতে।

Advt

 

Previous article২৪শেই ঘোষণা ভোটের নির্ঘন্ট? কমিশন সূত্রে তেমনই ইঙ্গিত
Next articleজোট চুলোয় যাক, নিজ গড়ে আব্বাসকে একটি আসনও ছাড়তে নারাজ কংগ্রেস