রাজপরিবার থেকে চিরবিদায় নিলেন হ্যারি-মেগান

আর কখনও ব্রিটিশ রাজপরিবারের চৌহদ্দিতে থাকবেন না মেগান ও হ্যারি। তাঁরা জানিয়েছেন, রাজপরিবারের সক্রিয় সদস্য হিসেবে তাঁরা আর ফিরতে রাজি নন। বাকিংহামও সেই সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছে। সেই অনুযায়ী যাবতীয় রাজকীয় এবং সামরিক দায়দায়িত্ব এবং উপাধি থেকে তাঁদের অব্যাহতি নিতে বলা হয়েছে। বাকিংহাম তার বিবৃতিতে সাফ জানিয়ে দিয়েছে, হ্যারি-মেগানরা রাজকীয় সুযোগসুবিধা আর পাবেন না। তাঁরা নিজেদের রাজকীয় প্রতিনিধি হিসেবেও দাবি করতে পারবেন না। রানি নিজে নাতি-নাতবউয়ের এই সিদ্ধান্ত দুঃখজনক বলে মনে করছেন ।

গত বছর মার্চেই বাকিংহাম রাজপরিবারের সঙ্গে কোনওরকম আলোচনা ছাড়াই নিজেদের পৃথক করেছিলেন প্রিন্স হ্যারি এবং তাঁর স্ত্রী মেগান। এক বছর পর্যালোচনার পরে তাঁদের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানোর কথা ছিল। তাঁদের এই সিদ্ধান্তে বিস্মিত হয়েছিলেন সবাই।
এই দম্পতি জানিয়েছিলেন, তাঁরা স্বকীয়তায় বেঁচে থাকতে চান। যদিও এই বিচ্ছেদ প্রক্রিয়া খুব নিস্তরঙ্গ ছিল না। বাকিংহাম সূত্রে জানা গিয়েছে , স্পটিফাই বা নেটফ্লিক্সের সঙ্গে চুক্তিতে কিংবা ওপরা উইনফ্রে-র শো-এ হ্যারি-মেগানরা নিজেদের রাজকীয় পরিচয় ব্যবহার করতে পারবেন কি না, সেটাই এখন প্রশ্ন।
যদিও তাদের এই সিদ্ধান্তে কমনওয়েলথের নানা সংগঠন এবং ন্যাশনাল থিয়েটারে মেগানের প্রাতিষ্ঠানিক দায়িত্বও আর থাকছে না। বাকিংহাম সরাসরি বলেছে, ‘‘হ্যারি-মেগানের জীবন এখন আর প্রাতিষ্ঠানিক জনসেবার উপযুক্ত নয়।’’
হ্যারি ও মেগান রাজদায়িত্বে ফিরছেন না—বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ ডিউক অব সাসেক্স ও ডাচেস অব সাসেক্সকে তাঁদের রাজকীয় উপাধি এবং রাজপরিবার থেকে পাওয়া সুযোগ-সুবিধা ত্যাগ করার নির্দেশ দিয়েছেন।
প্রসঙ্গত , রাজকীয় দায়িত্ব ছাড়ার পর গত বছর থেকে হ্যারি ও মেগান যুক্তরাষ্ট্রে থাকা শুরু করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রে তাঁদের এই পাড়ি জমানোকে ব্রিটিশ গণমাধ্যমগুলো ‘মেক্সিট’ নামে আখ্যায়িত করেছে।
রাজকীয় দায়িত্ব ছাড়ার ঘোষণা করার পর ২০২০ সালের জানুয়ারিতে রানির সঙ্গে জরুরি বৈঠকে বসেন হ্যারি, মেগান, হ্যারির বাবা প্রিন্স চার্লস ও বড় ভাই প্রিন্স উইলিয়াম। বৈঠকে হ্যারি এবং মেগান রাজপরিবারের উপাধি ‘রয়েল হাইনিস’ ও ‘সাসেক্স রয়াল’ ত্যাগ করতে রাজি হন। তবে রাজপরিবারের জ্যেষ্ঠ সদস্য হিসেবে হ্যারি ও মেগান তাঁদের নেওয়া সিদ্ধান্ত এক বছর পর পর্যালোচনা করে দেখার প্রতিশ্রুতি দেন। এরই ধারাবাহিকতায় তাঁরা এখন স্থায়ীভাবে ওই দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন।
বাকিংহাম প্যালেস বলেছে, হ্যারি-মেগান রানির কাছে জানিয়ে দিয়েছেন। তাঁরা ব্রিটিশ রাজপরিবারের সদস্যের দায়িত্বে আর কখনো ফিরবেন না। রানিও লিখিতভাবে তাঁদের এ বিষয় নিশ্চিত করেছেন। রাজপরিবারে হ্যারি-মেগান দম্পতির দায়িত্ব ও প্রাপ্ত সুযোগ-সুবিধা এই পরিবারের অন্য সদস্যদের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হবে।অবশ্য রাজপরিবারে হ্যারি ও মেগানের আনুষ্ঠানিক পদবি ডিউক ও ডাচেস অব সাসেক্স বহাল থাকবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা ।
এ ছাড়া হ্যারি ব্রিটিশ সিংহাসনের ষষ্ঠ উত্তরাধিকার হিসেবে থেকে যাবেন এবং সিংহাসনে অধিষ্ঠিত হওয়ার নিয়মে কোনো পরিবর্তন হবে না বলেই মনে করা হচ্ছে।

Advt

Previous articleপ্রতিহিংসার রাজনীতির অঙ্কেই ভোটের মুখে অভিষেকের স্ত্রীকে নোটিস সিবিআইয়ের
Next articleএক রুটেই কালীঘাট- দক্ষিণেশ্বর, মঙ্গলেই গড়াবে মেট্রোর চাকা