ভারত ছেড়ে বাংলা- মহারাষ্ট্র ‘স্বাধীন’ হোক, মমতা-উদ্ধবকে চিঠি এক খালিস্তানি সংগঠনের

এক বিচিত্র দাবি নিয়ে আসরে এক খালিস্তানপন্থী সংগঠন ‘শিখ ফর জাস্টিস’৷

এই সংগঠনের বক্তব্য, নিজেদের সংস্কৃতি, ভাষা ও ঐতিহ্যকে বাঁচাতে এখনই ভারত থেকে আলাদা হয়ে পৃথক রাষ্ট্র ঘোষণা করুক পশ্চিমবঙ্গ ও মহারাষ্ট্র। প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালে এই সংগঠন, ‘শিখ ফর জাস্টিস’ (SFJ) -কে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। সর্বভারতীয় প্রায় সব সংবাদমাধ্যমে এই খবর প্রকাশিত হয়েছে৷

শুধুই দাবি তোলা নয়, এই দাবি জানিয়ে ‘শিখস ফর জাস্টিস’ (Sikhs for Justice) সংগঠনের তরফে চিঠিও গিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) ও মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরের (Udhav Thakre) কাছে। চিঠিতে বলা হয়েছে, নিজেদের সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, ভাষা ও অস্তিত্ব বাঁচাতে হলে আর ভারতের অংশ হিসেবে না থেকে পৃথক রাষ্ট্র গঠনের দাবি তোলা উচিত এই দুই রাজ্যের।

তৃণমূল কংগ্রেসের (TMC) প্রধান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং শিবসেনা-প্রধান (ShivSena) উদ্ধব ঠাকরকে ভারত থেকে বেরিয়ে এসে পশ্চিমবঙ্গ ও মহারাষ্ট্রকে পৃথক রাষ্ট্র ঘোষণা করার “পরামর্শ” দিয়ে ‘শিখ ফর জাস্টিস’ সংগঠনের শীর্ষ নেতা গুরপতওয়ন্ত সিং পান্নুম ( Gurpatwant singh Pannun) বলেছেন, “এই দুই রাজ্য সংস্কৃতিগত দিক থেকে সমৃদ্ধ। তাই ভারতের অংশ হিসেবে না থেকে তাদের নিজেদের রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করা উচিত”৷ পান্নুমের দাবি, খুব দ্রুত এই পদক্ষেপ নেওয়া উচিত বাংলা ও মহারাষ্ট্রের৷
এখনই দুই মুখ্যমন্ত্রীর উচিত কেন্দ্রের সঙ্গে কথা বলে আলাদা হয়ে যাওয়া। বাংলার সভ্যতা, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, ভাষা ও অস্তিত্ব বাঁচাতে ভারত থেকে বাংলাকে আলাদা করে নেওয়ার চেষ্টা করা উচিত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। মহারাষ্ট্রেরও উচিত নিজেদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে বাঁচাতে আলাদা হয়ে যাওয়া।
ওই শিখ নেতা বলেছেন, “বাংলা ও মহারাষ্ট্রের সংস্কৃতির সুবিধা নিচ্ছে রাষ্ট্র৷ সেই সুযোগ দেওয়া আর উচিত নয়”। ওই চিঠিতে বলা হয়েছে,
“পাঞ্জাবের মতোই, ১৯৪৪ সাল থেকে পশ্চিমবঙ্গ ও মহারাষ্ট্রের প্রাকৃতিক সম্পদকে কাজে লাগানো হচ্ছে এবং পশ্চিমবঙ্গ ও মহারাষ্ট্রের আদিবাসীদের জাতি, ভাষা, সংস্কৃতি এবং পরিচয়ও ভারত সরকারের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে”৷

‘শিখ ফর জাস্টিস’ অতীতেও বিচিত্র কিছু দাবি তুলে শিরোনামে এসেছিল। এই সংগঠনটি কেন্দ্রের কৃষি আইনের বিরুদ্ধে কৃষকদের আন্দোলন তীব্র করার চেষ্টা করেছিল। বিষয়টি বিদেশে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য লন্ডনে কৃষক সমাবেশ করার পরিকল্পনাও করেছিল।
পান্নুম এক সময়ে বলেছিলেন, “খালিস্তান হল শিখদের রাজনৈতিক দুর্গ”। শিখ ফর জাস্টিসের ওই নেতাকে এক ভিডিওতে বলতে শোনা গিয়েছে, “ভারত সরকার অন্যায়ভাবে তাদের আন্দোলনকে দমন করার চেষ্টা করেছে”। তিনি বলেছেন, এসএফজে বুলেট নয়, ব্যালটে বিশ্বাসী। ২০২০-এর আগস্টে খালিস্তান সমর্থক এই সংগঠনটি এক সমাবেশে শিখদের জন্য পৃথক দেশের দাবিও জানিয়েছিল। ২০২০ সালে লালকেল্লায় স্বাধীনতা দিবসে খালিস্তানি পতাকা তোলার হুমকি দিয়েছিল এই সংগঠন। যদি কেউ স্বাধীনতা দিবসে লালকেল্লায় খালিস্তানের পতাকা উত্তোলন করতে পারে, তাহলে তাকে ১ লক্ষ ২৫ হাজার মার্কিন ডলার দিয়ে পুরস্কৃত করা হবে,এমন বিজ্ঞাপনও দিয়েছিল শিখ ফর জাস্টিস।

এদিকে, রাজনৈতিক মহল পাকিস্তানের আইএসআই সমর্থিত SFJ সংগঠনটির এই দাবিকে ভারত- বিরোধী পদক্ষেপ বলে চিহ্নিত করেছে।

Previous articleচৌরঙ্গিতে নয়নার বিরুদ্ধে বিজেপির সজল, আজ যোগদান
Next articleগাড়ি দুর্ঘটনার কবলে টাইগার উডস, পায়ে বড়সড় চোট