রহস্যমৃত্যু আলিপুরের শিল্পপতির মেয়ে রসিকা জৈনের। ২০১৯ সালে দেখাশোনা করেই মেয়েকে বিয়ে দিয়েছিলেন আলিপুরের রাজা সন্তোষ রোডের নামকরা ব্য়বসায়ী। কিন্তু ২ বছর কাটতে না কাটতেই তাঁদের ছেড়ে চলে গেলেন রসিকা। তাঁর ডেথ সার্টিফিকেটে লেখা হল ‘ফল ফ্রম হাইট’। অর্থাৎ উঁচু থেকে পড়ে মৃত্য়ু হয়েছে তাঁর। তারপর থেকে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে খুন-দুর্ঘটনা নাকি আত্মহত্যা?
ছোট থেকেই অত্যন্ত মেধাবী ছিলেন রসিকা। বিদেশে থেকে ডিগ্রিও এনেছেন। ২০১৯ সালে দেখাশোনা করেই বিয়ে হল তাঁর। পাত্র আলিপুরের ডিএলখান রোড এলাকার আর এক নাম-করা ব্যবসায়ী পরিবারের ছেলে কুশল আগরওয়াল। এরপর ২০২০ সালে তাঁদের এক বছরের বিবাহবার্ষিকীও ধুমধাম করে অনুষ্ঠিত হয়। এর ঠিক পরেই শুরু হয় লকডাউন। লকডাউনের ঘরবন্দি অবস্থায় রসিকা জানতে পারলেন তাঁর স্বামী কুশল মাদকাসক্ত। এছাড়াও নানা অশান্তি ছিল বলেই দাবি করেছে রসিকার পরিবার। তাঁরা জানিয়েছেন, শ্বশুরবাড়িতে রসিকার নানা বিষয়ে মানিয়ে চলতে অসুবিধা হচ্ছে বলেই একাধিকবার তিনি অভিযোগ করেন।
আরও পড়ুন-ধর্ষিতাকে বিয়ে করার পরামর্শ ধর্ষককে, বোবদের মন্তব্যে ক্ষুব্ধ বৃন্দা কারাট
এ বিষয়ে রসিকার ভাই ঋষভ জৈন বলেন, দিদি তাঁকে ডিজিটাল ওয়ালেটে টাকা দিতে বলতেন। খাবার ‘বুক’ করে পাঠিয়ে দিতে বলতেন। তিনি আরও বলেন, ওঁর শ্বশুরবাড়িতে খুব চিৎকার-চেঁচামেচি হত। ওঁরা দিদিকে টাকা-পয়সা দেওয়াও বন্ধ করে দিয়েছিলেন।
এখানে প্রশ্ন উঠেছে রসিকা শ্বশুরবাড়িতে নির্যাতিতা হচ্ছেন জেনেও বিষয়টির কোনও নিষ্পত্তিতে যাননি কেন রসিকা-পরিবারের সদস্যেরা? রসিকার বাবা-মা জানিয়েছেন, বাড়ির এমন একটা খবর প্রকাশিত হলে তাঁদের সামাজিক বা পারিবারিক সম্মান ক্ষুণ্ণ হতে পারে। তাঁরা চেয়েছিলেন লোক জানাজানি না করে বিষয়টি নিজেদের মধ্যে মিটিয়ে নিতে। কিন্তু সময় পাওয়া গেল না। রসিকার পরিবারের দাবি, প্রভাব খাটিয়ে রসিকার মৃত্যুর আসল ব্যাপারটি চাপা দিতে চাইছে রসিকার শ্বশুরবাড়ি লোকেরা। রসিকার বাবা জানিয়েছেন, মৃত্যুর আগে রসিকা তাঁকে একটি হোয়াটসঅ্যাপ করেন। সেখানে তাঁর শ্বশুরবাড়ির বেশ কয়েকজনের বিষয়ে ছিল বেশ কিছু অভিযোগ।
বুধবার বিকেলে রসিকার আলিপুরের বাড়িতে পুলিশ পৌঁছেছে। কথা বলছেন তাঁর বাড়ির সদস্যদের সঙ্গে।