দুই প্রাক্তন মন্ত্রীর ওপরই আস্থা রেখে মালদহে বাজিমাৎ করতে চায় তৃণমূল

মালদহের দুই প্রাক্তন মন্ত্রীর ওপরই আস্থা রাখলো তৃণমূল। রাজ্যের প্রাক্তন দুই মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু চৌধুরী এবং সাবিত্রী মিত্রকে ইংরেজবাজার এবং মানিকচক বিধানসভা কেন্দ্রে প্রার্থী করে এবার নির্বাচনী লড়াইয়ে নতুন সমীকরণ তৈরি করার পরিকল্পনা নিয়েছে তৃণমূল নেতৃত্ব। পাশাপাশি ইংরেজবাজারের বর্তমান বিধায়ক নিহার ঘোষকে চাচল বিধানসভা কেন্দ্রে প্রার্থী করা হয়েছে। এছাড়াও এবারে মালদহের ১২ টি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে চারটি কেন্দ্রে নতুন মুখ আনা হয়েছে। সেগুলি হল – বৈষ্ণবনগর কেন্দ্রের চন্দনা সরকার, সুজাপুরে আব্দুল গনি, গাজোলে বাসন্তী বর্মন, হবিবপুরে সরলা মুর্মু। এবারে মালদহের ১২ টি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে পাঁচ জন মহিলা প্রার্থী হয়েছেন।

তবে এদিন ইংরেজবাজার বিধানসভা কেন্দ্রে কৃষ্ণেন্দু চৌধুরীর নাম ঘোষণা হতেই উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েন দলের কর্মী, সমর্থকেরা। রীতিমতো মালদহ শহরের নেতাজি সুভাষ রোড এলাকায় আতশবাজি পুড়িয়ে শুভেচ্ছা জানান তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে । দলের একাংশের দাবি, বিজেপিকে ঠেকাতে যোগ্য প্রার্থী দিয়েছে তৃণমূল নেতৃত্ব।

দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এবারের বিধানসভা নির্বাচনে হবিবপুরের প্রার্থী হয়েছেন সরলা মুর্মু। তিনি বর্তমানে মালদা জেলা পরিষদের নির্বাচিত সদস্য রয়েছেন। গাজলের প্রার্থী হয়েছেন বাসন্তী বর্মন। বাসন্তীদেবীর এক আত্মীয় গাজোল ব্লকের তৃণমূল দলের সভাপতি পদে রয়েছেন। চাচলে প্রার্থী হয়েছেন নিহার রঞ্জন ঘোষ। তিনি ইংরেজবাজারের বিধায়ক রয়েছেন। হরিশ্চন্দ্রপুরের প্রার্থী হয়েছেন তাজমুল হোসেন, তিনি তৃণমূলের প্রাক্তন বিধায়ক ছিলেন। মালতিপুরের প্রার্থী করা হয়েছে আব্দুর রহিম বক্সীকে তিনিও প্রাক্তন বিধায়ক । একইভাবে রতুয়া বিধানসভা কেন্দ্রের প্রার্থী হয়েছেন সমর মুখার্জী, বর্তমানে তিনি তৃণমূলের বিধায়ক পদে রয়েছেন। মানিকচকের প্রার্থী হয়েছেন সাবিত্রী মিত্র, মালদা বিধানসভা কেন্দ্রের প্রার্থী হয়েছেন উজ্জল চৌধুরি, ইংরেজবাজার কেন্দ্রের প্রার্থী হয়েছেন কৃষ্ণেন্দু চৌধুরী, মোথাবাড়ি কেন্দ্রের প্রার্থী হয়েছেন সাবিনা ইয়াসমিন, সুজাপুর কেন্দ্রের প্রার্থী হয়েছেন আব্দুল গনি এবং বৈষ্ণবনগর কেন্দ্রের প্রার্থী হয়েছেন চন্দনা সরকার। তিনি মালদা জেলা পরিষদের বর্তমানে সহকারি সভাপতি পদে রয়েছেন।

এদিকে রাজ্যের দুই প্রাক্তন মন্ত্রী ছিলেন মালদহ মানিকচক বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক সাবিত্রী মিত্র এবং ইংরেজবাজারের বিধায়ক কৃষ্ণেন্দু চৌধুরী। গত বিধানসভা নির্বাচনে তারা পরাজিত হন। কিন্তু তাদের মধ্যে আগাগোড়াই বাকবিতণ্ডা ছিল তুঙ্গে। মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং মালদা শহরে এসে এই দুই নেতানেত্রীদের সতর্ক করে গিয়েছিলেন। তার পরেও প্রাক্তন দুই মন্ত্রীর উপর আস্থা রেখেছে রাজ্য তৃণমূল নেতৃত্ব। তাই নতুন করে তাদের প্রার্থী করে নির্বাচনী লড়াইয়ে বাজিমাত করতে চাইছে রাজ্য নেতৃত্ব।

শুক্রবার ইংরেজবাজার বিধানসভা কেন্দ্রের নিজের নাম ঘোষণা হতেই সাংবাদিকদের সামনে তৃণমূল প্রার্থী কৃষ্ণেন্দু চৌধুরী বলেন, আমি এর আগে তিনবারের বিধায়ক পদের দায়িত্ব সামলেছি। তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ , উনি আমাকে এই কেন্দ্রের প্রার্থী করেছেন। এখন আমার কাছে এই আসনে নির্বাচিত হয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে উপহার হিসেবে দিতে চাই। বিজেপি, সিপিএম-কংগ্রেসকে পরাজিত করে মানুষ উন্নয়নের পক্ষে রায় দেবে।

আরও পড়ুন- রবিবারের ব্রিগেডে বড় চমক, মোদির সভায় থাকছেন মিঠুন!

অন্যদিকে চাচলে তৃনমূলের বিধানসভা কেন্দ্রের প্রার্থী হয়েছেন ইংরেজবাজারের বর্তমান বিধায়ক নিহার ঘোষ। তিনি বলেন, দলনেত্রী যা ভালো বুঝেছেন সেটাই করেছেন। আমার কাছে চাচোল নতুন জায়গা নয় । বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচিতে আমি ওই বিধানসভা কেন্দ্রে গিয়েছি। চাচলে এবারের লড়াইটা অন্যরকম হবে। সেখানে ১০০ শতাংশ তৃনমূল জয়ী হবে বলে আশা করছি।

নতুন প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন বৈষ্ণবনগরের চন্দনা সরকার, হবিবপুরের সরলা মুর্মু তাদের বক্তব্য, মুখ্যমন্ত্রীর উন্নয়নের পক্ষে মানুষ রায় দেবে। সাম্প্রদায়িক দল বিজেপির কথায় প্ররোচিত হবে না মানুষ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে ভাবে উন্নয়ন করেছেন, সেদিকে তাকিয়েই এবারের নির্বাচন হবে। এবারে মালদহের ফল অনেকটাই ভাল হবে বলে আশা রাখছি।

মালদহ তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা রাজ্যসভার সাংসদ মৌসুম নূর জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রী মালদহের বারোটি বিধানসভা কেন্দ্রের প্রার্থী ঘোষণা করেছেন। নবীন-প্রবীণ সকলকে মিলিয়ে প্রার্থী তালিকা তৈরি করা হয়েছে। এজন্য আমরা এখন থেকেই নির্বাচনে লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত। এবার মালদার সবকটি আসন মুখ্যমন্ত্রীকে উপহার হিসেবে তুলে দিতে চাই।

আরও পড়ুন- প্রার্থী হওয়ার পর কী প্রতিক্রিয়া তারকাদের?

Advt

Previous articleএনআইএ-র আবেদন খারিজ হাইকোর্টে, আপাতত স্বস্তিতে ছত্রধর
Next articleব্রেকফাস্ট নিউজ