শুভেন্দু’র হয়ে প্রচারে নামছেন শিশির অধিকারী, তৃণমূল ত্যাগের জল্পনা তুঙ্গে

নন্দীগ্রাম কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারীর পক্ষে প্রচারে নামছেন তৃণমূল সাংসদ শিশির অধিকারী! শুভেন্দু-ঘনিষ্ঠ সূত্রে খবর, বুধ অথবা বৃহস্পতিবার থেকেই নন্দীগ্রামে (Nandigram) প্রচারাভিযান শুরু করবেন শিশিরবাবু৷

তৃণমূলের (TMC) সাংসদ হয়ে বিজেপিকে (BJP) ভোট দেওয়ার আহ্বান কেন জানাবেন? উত্তরে বর্ষীয়ান শিশির অধিকারীর (Sisir Adhikary) সাফাই, “আমি কি আর তৃণমূলে আছি না’কি ? ওরা তো পিতৃপুরুষ তুলে গালি দিতেও শুরু করেছে।”

কাঁথির তৃণমূল সাংসদ শিশির অধিকারী পাশাপাশি নিজেই জানিয়েছেন,”আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণ পেলে ২৪ মার্চ কাঁথিতে নরেন্দ্র মোদির ( PM Modi) জনসভায় আমি হাজির থাকবো”৷
পুত্র শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu) বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরমুহুর্ত থেকেই তৃণমূলের সন্দেহের তালিকায় শিশিরবাবু৷ একে একে একাধিক দলীয় ও প্রশাসনিক পদ থেকে তাঁকে সরানো হয়৷ শিশিরবাবু দীর্ঘসময় মুখ না খুলে নিজের রাজনৈতিক অবস্থান নিয়েও জল্পনা তৈরি করেন৷

সম্প্রতি ‘সরব’ হয়েছেন তিনি৷ প্রধানমন্ত্রীর কাঁথির সভায় আমন্ত্রণ জানাতে শিশিরবাবুর বাড়ি গিয়ে খাওয়াদাওয়া করে এসেছেন বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়৷ এর পরই জল্পনা জোরদার হয়, এবার তিনি বিজেপিতে যাচ্ছেনই! ইতিমধ্যেই দরাজ গলায়
তৃণমূলের সমালোচনা শুরু করেছেন শিশির অধিকারী ৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) আঘাত লাগা প্রসঙ্গে বলেছেন, “উনি কি পড়ে গিয়েছিলেন? কোথায় পড়েছিলেন? ডাক্তাররা তো বলেছেন কিছুই হয়নি। দু’দিন আগে বলছিলেন, লোকে ধাক্কা মেরেছে। প্রতিবাদ হওয়ার পর এখন বলছেন, দরজায় লেগেছে। আমরা তো ঘরে বসে সিনেমা দেখছি।” বলেছেন, “তৃণমূল বলছে, আমরা না’কি মিরজাফর! মেদিনীপুরের মানুষ জানেন, কে ত্যাগী আর কে ভোগী।” মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে সরব হয়ে ছেলে শুভেন্দুর সাফল্য কামনাও করেছেন তিনি৷ রাজনৈতিক মহলের ধারনা, শিশিরবাবু অপেক্ষা করছেন, তৃণমূল তাঁর বিরুদ্ধে ‘শাস্তিমূলক’ ব্যবস্থা নিক৷ তৃণমূল সে পথে না হেঁটে ‘লস্ট-কেস’ হিসাবেই ধরে নিয়েছে শিশিরবাবুকে৷

অধিকারী-পরিবারে আরও একজন সাংসদ রয়েছে৷ তমলুকের তৃণমূল সাংসদ দিব্যেন্দু৷ তিনি প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য না করলেও শিশিরবাবু, শুভেন্দু, সৌমেন্দু বিজেপি হয়ে যাওয়ার পর ওই বাড়িতে থেকে দিব্যেন্দু একাই তৃণমূল করে যাবেন, এমন আশা কেউই করছে না৷ ফলে, দিব্যেন্দুও ‘লস্ট-কেস’৷

২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল ২২ আসনে জয়ী হয়৷ পক্ষান্তরে বিজেপি পায় ১৮ আসন৷ তৃণমূলের সাংসদ সুনীল মণ্ডল বিজেপিতে যোগ দেওয়ায় তৃণমূলের এখন ২১, বিজেপির ১৯ সাংসদ৷ এর পর শিশির-দিব্যেন্দুও দল ছাড়লে, তৃণমূল দাঁড়াবে ১৯-এ, এবং বিজেপির সাংসদ সংখ্যা ২১ হয়ে যাবে৷ তবে এই হিসাব সরকারি নয়, লোকসভার খাতায় দলত্যাগীরা পুরোনো দলের প্রতিনিধি হিসাবেই নথিভুক্ত থাকবেন৷

Previous articleএক সপ্তাহেই মোহভঙ্গ! বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে “ঘর ওয়াপাসি” প্রাক্তন মন্ত্রীর
Next articleখোদ কলকাতায় পার্টি অফিস লক্ষ্য করে বিজেপির বিরুদ্ধে বোমাবাজির অভিযোগ তৃণমূলের