সিল করা হল সীমান্ত, জারি ১৪৪ ধারা, নজিরবিহীন নিরাপত্তা নন্দীগ্রাম জুড়ে

বৃহস্পতিবার সকালে ভোট। তাই বুধবার রাত থেকেই নন্দীগ্রামের সীমান্ত সিল করে দেওয়া হল। সেই সঙ্গে গোটা এলাকা জুড়ে জারি করে দেওয়া হল ১৪৪ ধারা। বঙ্গের ভোট যুদ্ধের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ এবং হেভিওয়েট কেন্দ্র নন্দীগ্রামের প্রতি জাতীয় নির্বাচন কমিশন যে যথেষ্ট নজর রেখেছে সেটা এই এক সিদ্ধান্তেই প্রমাণ হয়ে যায়। তাই নন্দীগ্রামের সমস্ত সীমান্ত সিল করার নির্দেশ দিল নির্বাচন কমিশন। কড়া নির্দেশ দিয়ে কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, আজ থেকে কোনও বহিরাগত নন্দীগ্রামে ঢুকতে পারবে না। কোনও নির্বাচনের সময় সাধারণত যে কোনও রাজ্যের সীমান্ত সিল করে দেওয়ার ঘটনা ঘটে। সেটা খুব স্বাভাবিক। কিন্তু এভাবে শুধুমাত্র একটা পৃথক বিধানসভা কেন্দ্র সিল করে দেওয়ার নজির খুব একটা নেই বললেই চলে। তৃণমূল ও বিজেপি, উভয় দলের পক্ষ থেকেই কার্যত অভিযোগের পাহাড় জমা পড়েছে কমিশনের কাছে। বিশেষ করে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একাধিকবার দাবি করেছেন, বহিরাগতদের নিয়ে এসে ভোট বানচাল করার চেষ্টা করছে বিজেপি। 

এই অবস্থায় পরিস্থিতির গভীরতা ও গুরুত্ব বিচার করে নন্দীগ্রামের সমস্ত সীমান্ত সিল করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল নির্বাচন কমিশন।

 

পাশাপাশি কমিশনের তরফে নন্দীগ্রামের বিশেষ দায়িত্ব পাঠানো হয়েছে এসপি পদমর্যাদার নগেন্দ্রনাথ ত্রিপাঠীকে। হলদিয়ার দায়িত্ব পেয়েছেন প্রবীণ ত্রিপাঠী। এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, নাড্ডার কনভয়ে হামলার ঘটনায় এই প্রবীণ ত্রিপাঠীকেই সরিয়ে দিয়েছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। কিন্তু রাজ্য সেই নির্দেশ মানেনি। তাঁকে দিল্লি পাঠানোর কথা বলে রাজ্য। তাঁকেই ফের কমিশন ভোটের দায়িত্ব দেওয়া হল। সুতরাং দেখা যাচ্ছে রাজ্যের আইপিএসের ওপরেই ভরসা রাখল নির্বাচন কমিশন। আর সেইসঙ্গে শুধুমাত্র নন্দীগ্রামের সুরক্ষার জন্যই মোতায়েন করা হয়েছে ২২ কোম্পানি অর্থাৎ ২২০০ আধাসেনা।

কমিশন জানিয়েছে, নন্দীগ্রামের ৩৫৫টি বুথের প্রত্যেকটিতে থাকবে ৪জন করে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান। সেই সঙ্গে এদিন বিকাল ৫টা থেকেই বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে হলদিয়া-নন্দীগ্রাম ফেরী সার্ভিসও।

নন্দীগ্রামে বুথের সংখ্যা ৩৫৫টি। এই কেন্দ্রের নিরাপত্তার জন্য ২২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী বা প্রায় ১৬০০ জন জওয়ানকে মোতায়েন করার পরিকল্পনা করেছে কমিশন। এ ছাড়াও থাকবে রাজ্য পুলিশ। কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার পর্যন্ত ওই কেন্দ্রের জন্য ২১ কোম্পানি বাহিনী মোতায়েনের পরিকল্পনা ছিল। এই কেন্দ্রের উপর বাড়তি নজর রাখতে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতরে বিশেষ সেল তৈরি করা হয়েছে । বৃহস্পতিবার ভোটের দিন সকাল থেকেই এই সেলের অফিসারেরা পরিস্থিতির উপর নজর রাখবেন। জানা গিয়েছে , নন্দীগ্রামের ৭৫% বুথকে ওয়েবকাস্টিংয়ের আওতায় রাখা হবে। অর্থাৎ প্রায় ২৬৭টি বুথে ক্যামেরা থাকবে। বিভিন্ন দিক থেকে ভিডিও ফুটেজ কমিশনের কন্ট্রোল রুমে সম্প্রচারিত হবে।

Advt

Previous articleব্রেকফাস্ট নিউজ
Next articleশুরু হয়ে গেল দ্বিতীয় দফার ভোটগ্রহণ, বিশ্বের নজর নন্দীগ্রামে