প্রধানমন্ত্রী ইলেকশন চলাকালীন পরীক্ষা পে চর্চা করলে নির্বাচনী বিধি ভঙ্গ হয় না? জামালপুরের জনসভায় প্রশ্ন তুললেন মমতা

প্রধানমন্ত্রী ইলেকশন চলাকালীন পরীক্ষা পে চর্চা করলে নির্বাচনী বিধি ভঙ্গ হয় না? আর আমি জনসভা করলে বিধি ভঙ্গ হয়? ওদের বেলায় কমিশন কিছু বলতে পারে না। শুক্রবার বর্ধমানের জামালপুরের জনসভায় এভাবেই ক্ষোভ উগড়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বললেন দাঙ্গাবাজ বিজেপি অত্যাচার করছে। যা ইচ্ছে তাই করছে। আর ওদের বেলায় কমিশন কিছুই বলছে না।

এদিন বর্ধমানের জামালপুর ছাড়াও মেমারি এবং মন্তেশ্বরেও জনসভা ছিল মুখ্যমন্ত্রীর। আগামী ১৭ এপ্রিল পঞ্চম দফা নির্বাচনের দিন এখানে ভোটগ্রহণ হবে। এদিন প্রতিটি জনসভা যেন জনসমুদ্র হয়ে উঠেছিল। উদ্বেলিত জনতা সোচ্চার হয়ে দিদিকে বারবার নিজেদের সমর্থন জানাচ্ছিলেন।

মুখ্যমন্ত্রী এদিন বলেন, তৃণমূল কংগ্রেসই আপনার আগামী দিনের একমাত্র বন্ধু। আপনারা দেখছেন তো ইলেকশনের আগে আমার একটা পায়ে চোট করে দিয়েছে। যাতে আমি আপনাদের কাছে যেতে না পারি। আমি বিশ্বাস করি আমার মা বোনেদের দুটো পা মিলিয়ে আমার তিনটে পা। আর তার ওপর ভরসা করেই আমি আপনাদের কাছে এসেছি। যদি আগামী দিনে বিনা পয়সায় রেশন চান, তাহলে জোড়া ফুলে ভোট দিতেই হবে। আর আগামী দিনে আমরা বিনা পয়সায় রেশন দেব। ঘরে ঘরে গিয়ে পৌঁছে দিয়ে আসবো। আপনাদের রেশন দোকানে লাইন দেওয়ার দরকার নেই। আগামী দিনে কৃষক বন্ধুদের যাদের এক একর জমি আছে, তারা ৫০০০ টাকার পরিবর্তে ১০ হাজার করে পাবেন। আর প্রান্তিক চাষী বা ক্ষুদ্র চাষী, যাদের এক কাঠা করেও জমি আছে, তারা পাঁচ হাজার টাকা করে পাবেন। মা বোনেদের জন্য আমাদের সরকার একটা করে লক্ষীর ভান্ডার তৈরি করে দেবে। তপশিলি জাতির মেয়েরা পাবেন এক হাজার টাকা করে। জেনারেল কাস্ট -এর মেয়েরা পাবেন ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা করে । প্রতি মাসে মাসে আপনাদের ব্যাংক একাউন্টে চলে যাবে। এই টাকাটা আপনারা জমাবেন। ভবিষ্যতে কাজে লাগবে। স্টুডেন্টদের ১০ লক্ষ টাকার ক্রেডিট কার্ড করে দেব। নিজেদের পড়ার খরচ তারা নিজেরাই চালাবে। খাদ্য ফ্রি। স্বাস্থ্য ফ্রি। নাইনে উঠলে সাইকেল ফ্রি। বারো ক্লাসে উঠলে ১২ হাজার টাকার স্মার্ট ফোন ফ্রি। জন্মালে একটা দামি গাছ সবুজ সাথী ফ্রি। মরে গেলেও আমরা ২০০০ টাকা বৈতরণী দি।

মমতা এদিন কৃষক বন্ধুদের বলেন, যে মাটিতে চাষ হয় না, রুক্ষ অনুর্বর জমি, সেগুলোকে আমরা চাষ যোগ্য করে তুলছি। বাঁকুড়া, বর্ধমান, হুগলি, হাওড়া, মেদিনীপুর মিলিয়ে মোট ২৫ হাজার হেক্টর জমি আমরা চাষ যোগ্য করে তুলব। দামোদরের আশেপাশে যত নিচু জমি আছে, কালভার্ট আছে সব আগামী দু-তিন বছরের মধ্যে আমরা সরিয়ে দেব। আপনাদের আর বন্যা নিয়ে সমস্যায় পড়তে হবে না। আগামী দিনে এখানে প্রচুর কর্মসংস্থান হবে। বর্ধমানের ভাতার এর নতুন গ্রাম ওপর দিয়ে একটা রাস্তা যাবে , যেটা দক্ষিণবঙ্গের সঙ্গে উত্তরবঙ্গ যোগ করবে। এই প্রকল্পে ৪ হাজার কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। ডানকুনি থেকে পুরুলিয়া রঘুনাথপুর পর্যন্ত দুপাশে ফ্রেট করিডোর তৈরি হবে। ৭২ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ হবে। এবং লক্ষ লক্ষ ছেলে মেয়ের কাজ হবে। মনে রাখবেন বাংলায় তৃণমূল না থাকলে সবকিছু বন্ধ হয়ে যাবে। আর তৃণমূল থাকলে কাউকে আর ভবিষ্যৎ নিয়ে কিছু ভাবতে হবে না। প্রধানমন্ত্রী ইলেকশন চলাকালীন পরীক্ষা পে চর্চা করলে নির্বাচন বিধি ভঙ্গ হয় না। আর আমি জনসভা করলে বিধি ভঙ্গ হয়? তখন কমিশন কিছু বলতে পারে না। বিজেপি অত্যাচার চালাচ্ছে। এতকিছু করেও বিজেপি জিততে পারবে না। বিজেপি হারবেই। হারবেই।

Advt

Previous articleছ’মাস আগে রহস্যমৃত্যু, বনগাঁয় যুবকের পচা-গলা দেহ উদ্ধার
Next articleময়নাগুড়িতে রোড শোর মাধ্যমে কর্মীদের চাঙ্গা করার চেষ্টা দিলীপের