অমিত শাহের রোড শো-র পরে শান্তিপুরে কুণালের পাল্টা

রবিবার শান্তিপুরে (Shantipur) রোড শো (Road Show) করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah)। কিন্তু কোনও সভা করেনি তিনি। সেই রোড শো করে তিনি চলে যাওয়ার পরেই শান্তিপুরে যান তৃণমূল (Tmc) মুখপাত্র কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)। প্রথমে দলীয় কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। সেখান থেকে মহিলা তৃণমূল কর্মীদের একটি সভায় বক্তব্য রাখেন এবং তারপর সেখান থেকে যান সূত্রগড় শান্তিগড় কলোনি মাঠে প্রকাশ্য জনসভায়। পরপর সভা থেকেই অমিত শাহকে ধুয়ে দেন কুণাল। তৃণমূল মুখপাত্র জানান, যখন তিনি শান্তিপুরে ঢুকছিলেন, তখনই দেখেছেন ম্যাটাডোর করে বিজেপি কর্মীরা নদিয়া থেকে ফিরে যাচ্ছে। অর্থাৎ বাইরে থেকে লোক জড়ো করতে হয়েছিল অমিত শাহর রোড শো-র জন্য। স্থানীয়দের মতে, বড়জোর দুহাজার লোক ছিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ব়্যালিতে। তার মধ্যে বড়জোর 500 জন ছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা। বাকি সবাইকেই বাইরে থেকে নিয়ে আসা হয়। কটাক্ষ করে কুণাল বলেন, এতদিন ভাড়া করে প্রার্থী নিয়ে যাচ্ছিল বিজেপি, এবার রোড শো-র জন্য ভাড়াতে লোক নিয়ে যাচ্ছে তারা। তিনি বলেন, কিছু পেটুয়া সংবাদমাধ্যম শুধু অমিত শাহর গাড়ির চারপাশের ভিড়টা দেখিয়েছে। কুণালের এই বক্তব্যকে জনসভায় উপস্থিত তৃণমূলের নেতাকর্মীরা তুমুল সমর্থন জানান।

কুণাল ঘোষ বলেন, দেশের মধ্যে একমাত্র মহিলা মুখ্যমন্ত্রীকে সরাতে দিল্লি থেকে ডেইলি প্যাসেঞ্জারি করছেন প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। অথচ রাজধর্ম পালন করছেন না। ছত্তিশগড়ে মাওবাদী হামলায় ২২ জন জওয়ান প্রাণ হারালেন। অথচ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Bandopadhyay) আমলে জঙ্গলমহলে মাওবাদী দৌরাত্ম্য বন্ধ হয়েছে। সেখানে নিয়মিত যাচ্ছেন পর্যটকরা।

রাজ্য প্রচারে এসে অমিত শাহ তৃণমূল নেত্রীর বিরুদ্ধে শীতলকুচির ঘটনায় ধর্মীয় বিভাজন অভিযোগ করেন। অথচ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছেন শনিবার শীতলকুচিতে (Shitalkuchi) যে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে, সবার জন্য সমান ব্যবস্থা নিতে হবে। সে কথা উল্লেখ করে কুণাল বলেন, অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা নিয়ে অমিত শাহ ধর্মীয় মেরুকরণের রাজনীতি করছেন। অথচ চালসায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শীতলকুচির পাঁচ শহিদের বেদিতে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে কুরুচিকর রাজনীতি করছেন অমিত শাহ। শীতলকুচির ঘটনা নিয়েও ধর্মীয় তাস খেলার চেষ্টা করছে বিজেপি।

তৃণমূলের সরকারের উন্নয়ন মূলক কাজের খতিয়ান তুলে ধরেন কুণাল ঘোষ। তিনি প্রশ্ন তোলেন, যে কেন্দ্রীয় সরকার বছরের পর বছর সরকারি কাজের জন্য এই রাজ্য সরকারকে প্রথম-দ্বিতীয়-তৃতীয় পুরস্কারে ভূষিত করেছে, কীকরে সেই সরকারের মন্ত্রীরা এসে তৃণমূল সরকার কোনও কাজ করেনি বলে অভিযোগ করেন?

এদিন বাম-কংগ্রেস জোট নিয়েও সরব হন তৃণমূল মুখপাত্র। তিনি অভিযোগ করেন, 34 বছর ধরে প্রথমে কংগ্রেস, পরে কংগ্রেস (Congress) এবং তৃণমূল কংগ্রেসের উপর অত্যাচার চালিয়েছে সিপিআইএম (Cpim)। এখন কংগ্রেসের এমনই দৈন্যদশা যে বামেদের হাত ধরতে হয়েছে। পুরনো কংগ্রেসীদের তৃণমূলকে সমর্থন করার আহ্বান জানান কুণাল। বলেন, তৃণমূল প্রার্থী অজয় দে ভদ্র মানুষ, কাজের মানুষ। তিনি বিধায়ক হলে এলাকার উন্নয়ন আরো বেশি ত্বরান্বিত হবে।

প্রথমে তৃণমূল মহিলা কর্মীদের সভায় যথেষ্ট ভিড় ছিল। তবে পরে কলোনি মাঠের জনসমাবেশ সেইসব ভিড়কে পিছনে ফেলে দেয়। উপচে পড়ে মাঠ। মূল মঞ্চের সামনে জায়গা না পেয়ে অনেকেই মাঠের চারধারে ঘিরে দাঁড়িয়ে কুণাল ঘোষের বক্তব্য শোনেন। মহিলাদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। যখনই বিজেপির বিরুদ্ধে কুনাল মঞ্চ থেকে কোনও কথা বলেছেন, জনতার পক্ষ থেকে আওয়াজ উঠেছে “খেলা হবে”। তৃণমূল নেত্রীর পক্ষে জনসভার একটাই রায়, “বাংলা নিজের মেয়েকে চায়”।

আরও পড়ুন- শীতলকুচি : জাতপাতের তাস খেললেন শাহ, গুলি চালিয়ে খুন করে বাহিনী তবু শাস্তির বাইরে!

Advt

 

Previous articleশীতলকুচি : জাতপাতের তাস খেললেন শাহ, গুলি চালিয়ে খুন করে বাহিনী তবু শাস্তির বাইরে!
Next articleচাপের মুখে উন্নাও-এর ধর্ষকের স্ত্রী’র প্রার্থীপদ খারিজ করলো বিজেপি