দুর্ভাগ্যজনক! অক্সিজেন-টিকার হাহাকার, নয়া সংসদ ভবন গড়ছে মোদি সরকার

করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে নাজেহাল গোটা দেশ। প্রতিদিনই বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা । দিল্লির পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ। অক্সিজেনের অভাবে বেডেই মারা যাচ্ছে হাজার হাজার মানুষ। নেই পর্যাপ্ত বেড। শ্মশানেও ঠাঁই নেই। চারিদিকে শুধুই মৃত্যুমিছিল। লকডাউনের সময়সীমা বাড়লেও আক্রান্তের সংখ্যাটা কমছে না। ঠিক এমন সময় দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ব্যস্ত ‘সেন্ট্রাল ভিস্টা’ প্রকল্পে নতুন সংসদ ভবন নির্মানের কাজে। পাশাপাশি দিল্লির রাজপথের দুপাশের এলাকা ভেঙ্গে নতুন করে সাজাতে ব্যস্ত হয়ে উঠেছেন তিনি। কাতর আর্তনাদের স্বর তাঁর কাছে পৌঁছেও তিনি নীরব দর্শক। তাই যখন সংক্রমণের জেরে জর্জরিত দিল্লির রাস্তাঘাট প্রায় শুনসান, সেই সময় সেন্ট্রাল ভিস্টা প্রকল্পের কাজ হয়ে উঠেছে ‘অত্যাবশ্যকীয় পণ্য’। তিন শিফটে কর্মীদের কাজ কিন্তু বন্ধ হয়নি। কারণ এই বছরের নভেম্বর মাসের মধ্যেই কাজ শেষ করতে হবে। অক্সিজেন সিলিন্ডার নেই তো কী? হীরক রাজার মূর্তি বানানোটা এই মূহুর্তে বেশি জরুরি।

করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে রাজধানীর হাহাকারের চিত্রটা রোজই ফুটে উঠছে সংবাদমাধ্যমে। অসহায় মুখ আর জ্বলন্ত চিতা দেখে বিশ্ববাসীর মনে শিহরণ জেগেছে। রাজধানীর স্বাস্থ্যব্যবস্থা যখন ভেঙে চুরমার, সেই সময় বিশ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে সেন্ট্রাল ভিস্টা প্রকল্পের কাজ চালিয়ে যাওয়া ‘দুর্ভাগ্যজনক’ ছাড়া আর কোনও ভালো ব্যাখ্যা দিতে পারছেন না ওয়াকিবহাল মহল। জানা গেছে, শুধু নতুন সংসদ ভবন নির্মানের খরচ ৯৭১ কোটি টাকা। বিশেষজ্ঞদের মতে ২০০ কোটি টাকায় ১৬০ টিরও বেশি অক্সিজেন প্ল্যান্ট তৈরি করা যায়। এই অক্সিজেনের অভাবেই দিল্লিতে প্রতিনিয়ত মৃত্যু আর হাহাকার। নতুন ভবন তৈরির অর্থ অক্সিজেন বরাদ্দে ব্যায় করলে রাজধানী ফের প্রাণ ফিরে পেত। এমনকি বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, কেন্দ্রীয় সরকার দেশের ১৮ থেকে ৪৪ বছর বয়সী মানুষদের ৭০ শতাংশ টিকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেও তাতে ২০ থেকে ২৬ হাজার কোটি টাকার বেশি টাকা লাগতো না। কিন্তু সেখানেও নিজের কাজে ‘অষ্টরম্ভা’ মোদি। কোভিড টিকার ভার রাজ্যের উপর দিয়ে মুখে কুলুপ এটেছে মোদি সরকার। জনগণের টাকায় জনগণের প্রাণ রক্ষা নয়, বরং সেন্ট্রাল ভিস্টা তৈরি যুক্তিসঙ্গত বলে মনে করেন মোদি সরকার।
করোনার প্রথম লগ্নে প্রধানমন্ত্রী মানুষকে ত্যাগের আহ্বান জানিয়েছিলেন। সময়, কাজ, জীবনযাত্রা, মানবিক ও সাংস্কৃতিক উচ্ছ্বলতায় মাতার প্রবণতা ত্যাগ করতে বলেছিলেন। কিন্তু অন্যকে জ্ঞান দিয়ে নিজে কী করলেন, তার জবাব অবশ্যই ভবিষ্যতে দেবেন দেশের মানুষ।

Advt

Previous articleমে মাসে ১২ দিন ব্যাঙ্ক বন্ধ, ভোগান্তির শিকার হবেন গ্রাহকরা
Next articleও মোদিজি, বাংলার যেখানে পা রাখলেন, সেখানেই তো হারলেন ! কণাদ দাশগুপ্তর কলম