চাঞ্চল্যকর ! স্ট্রংরুম থেকে উদ্ধার হলো নন্দীগ্রামের গণনা না করা ১২টি EVM, ষড়যন্ত্র ফাঁস

শেষপর্যন্ত ফাঁস হয়ে গেলো ষড়যন্ত্র !

পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক এবং পুলিশ সুপারকে সরিয়ে দেওয়ার ২৪ ঘন্টার মধ্যেই হলদিয়ার গণনাকেন্দ্র থেকে গণনা না হওয়া ১২টি EVM উদ্ধার করা হয়েছে৷ নতুন জেলাশাসক এবং এসপি দায়িত্ব নেওয়ার পরই স্পষ্ট হচ্ছে নন্দীগ্রামে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হারিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র ৷ অনেক চেষ্টা করেও শাক দিয়ে আর মাছ ঢেকে রাখা গেলো না৷ আর এই ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে রাজনৈতিক মহলে৷

নন্দীগ্রামে বৃহস্পতিবার হদিশ মিলেছে গণনা না হওয়া ১২টি EVM, প্রতিটিই ভোট ভর্তি, অথচ গণনাই হয়নি৷ জানা গিয়েছে, এই EVM গুলি ব্যবহার করা হয়েছিলো নন্দীগ্রাম বিধানসভা এলাকার সংখ্যালঘু অধ্যুষিত সামসাবাদ এলাকার একাধিক বুথে৷ তৃণমূলের তরফে গত ২ মে থেকেই অভিযোগ করা হয়, ভোটগ্রহণের পর নির্বাচন কমিশন এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীর সাহায্যে বেশকিছু EVM-গুলি লোপাট করেছে বিজেপি৷ এদিন সেই অভিযোগের হাতেনাতে প্রমাণ মিললো৷

ফল ঘোষণার দিন থেকেই অভিযোগ উঠেছে, নন্দীগ্রামের তৃণমূল প্রার্থী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে অনৈতিকভাবে হারিয়ে দিতে হাত মিলিয়েছিলো বিজেপি, কমিশন এবং কেন্দ্রীয় বাহিনী৷ একের পর এক নোংরামির ঘটনাও প্রকাশ্যে আসতে শুরু করে৷ সব ঘটনার পিছনেই উঠে আসে বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারীর নাম৷ এর আগে জানা গিয়েছিলো কীভাবে নন্দীগ্রাম কেন্দ্রের রিটার্নিং অফিসারের মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে, খুন করার হুমকি দিয়ে বিজেপি প্রার্থীকে জয়ী ঘোষণা করা হয়েছে৷ জানা যায়, কীভাবে রিটার্নিং অফিসারের পরিবারের ক্ষতি করার হুমকি দিয়ে খারিজ করা হয়েছে তৃণমূলের রি-কাউন্টিং-এর দাবি৷

আর এবার হলদিয়ার গণনা কেন্দ্রের কুঠুরি থেকে উদ্ধার হলো লুকিয়ে রাখা প্রায় ১২টি ব্যবহৃত EVM, যে EVM-গুলিতে সামসাবাদ এলাকার ভোটাররা ভোট দিয়েছিলেন৷ এই ঘটনায় স্পষ্ট হয়েছে, নন্দীগ্রামের ভোটপর্বের প্রতিটি ধাপে বিজেপি কারচুপি করেছে কমিশনের প্রত্যক্ষ সহায়তায়৷

এবারের নির্বাচনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেদিন ঘোষণা করেন তিনি নন্দীগ্রাম কেন্দ্র থেকেই প্রার্থী হবেন, সেদিন থেকেই বিজেপি আসরে নামে কমিশনকে সঙ্গে নিয়ে৷ ওই কেন্দ্রের সংখ্যালঘু এলাকার জন্য বিশেষ ষড়যন্ত্রের ছক তৈরি হয়৷ তারই একটি অংশ এইভাবে EVM লোপাট করা৷ প্রসঙ্গত, ফল ঘোষণার সময় প্রথমে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জয়ী ঘোষণা করেও পরে শুভেন্দু অধিকারীকে জয়ী ঘোষণা করা হয়৷ তাছাড়া, প্রায় ৪০ মিনিট গণনাকেন্দ্রের বিদ্যুৎ সংযোগ ছিন্ন করা হয়৷ আশঙ্কা করা হচ্ছে, ওই সময়েই বদল করা হয়েছে EVMগুলি৷ তৃণমূলের অভিযোগ, শুভেন্দু-ঘনিষ্ঠ পুলিশকর্তা ও কমিশনের সাহায্যেই EVM বদলে ফেলা হয়৷ ওদিকে, ২মে গণনার শেষে কমিশন নির্বাচন সংক্রান্ত সব নথি সরানোর চেষ্টা করলেও, তৃণমূলের ধরনার ফলে তা সম্ভব হয়নি৷

তৃণমূলের বক্তব্য, কমিশনকে কাজে লাগিয়ে প্রথমেই পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক ও এসপিকে সরিয়ে আনা হয় বিজেপি-ঘনিষ্ঠদের৷ ভোটের পর ওই দুই পদাধিকারীকে সরিয়ে দেয় নতুন রাজ্য সরকার৷ আর তারপরই সামনে এসেছে চাঞ্চল্যকর এই ঘটনা৷ বৃহস্পতিবার ওই জেলার জেলাশাসকের তৎপরতায় হলদিয়া গণনা কেন্দ্র থেকে স্ট্রংরুমের নথিপত্র স্থানান্তরের সময় নন্দীগ্রাম কেন্দ্রের EVM ভর্তি একটি ট্রাঙ্ক খোলা অবস্থায় পাওয়া যায়৷ সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ ওইসব EVM বাজেয়াপ্ত করেছে৷

Advt

এরপরই প্রশ্ন উঠেছে, যে ট্রাঙ্কে EVM আছে, সেই ট্রাঙ্ক তালাবিহীন অবস্থায় ছিলো ? তাহলে কি গণনার সময় ওইসব EVM বদলে ফেলা হয়েছে ? এই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত দাবি করে তৃণমূলের তরফে বলা হয়েছে, পুলিশ সুপার দ্রুত তদন্ত শুরু করুক, জিজ্ঞাসাবাদ চালু করুক, তাহলেই সামনে আসবে প্রকৃত ঘটনা৷

নির্বাচন কমিশনের তরফে শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করা হয়নি৷

Previous article‘উনি শুধু মন কি বাত বলেন, শুনলে ভাল হয়’, মোদিকে টুইটে তুলোধনা হেমন্ত সোরেনের
Next articleকরোনা যুদ্ধে এগিয়ে এলেন অশ্বিন, এন ৯৫ মাস্ক দিয়ে সাহায্যের কথা জানালেন