যশের ভ্রুকুটি থেকে ফসল বাঁচাতে তৎপর চাষীরা

করোনার জেরে বিপর্যস্ত জনজীবন। লকডাউনের জেরে অনেকেই কাজ হারিয়েছে। আর্থিক দুরবস্থা কাটতে না কাটতেই গোঁদের ওপর বিষফোঁড়ার মতো ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় যশ। গত বছর আমফানে ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল। তাই এবারে আর কোনও ফাঁক রাখতে চান না মালদা জেলার চাষীরা। যশ আছড়ে পড়ার আগেই ফসল ঘরে তুলছেন তাঁরা।
কিছুদিন আগেই শিলাবৃষ্টিতে মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর, চাঁচল, রতুয়া, মানিকচক সহ বিভিন্ন এলাকায় ফসলের ব্যপক ক্ষতি হয়। তখন ধান,পাট এবং আমেরও ক্ষতি হয়েছিল। তার এক সপ্তাহের মধ্যেই ঘূর্ণিঝড়ের আভাস পেয়েই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন মালদা জেলার চাষীরা। তাই ধানের ফলন সম্পূর্ণ হওয়ার আগেই ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কায় সতর্ক হয়েছেন চাষীরা। আগাম ফসল তুলে নিচ্ছেন তাঁরা। পাছে সবটাই যদি শেষ হয়ে যায়।
অন্যদিকে মালদা জেলার একটা বড় অংশের চাষী আম ব্যবসার উপর নির্ভরশীল। এর আগে শিলাবৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন আম চাষীরা। করোনার কারণে বাজারও খারাপ। তার উপর আবার ঘূর্ণিঝড়। লোকসানের মুখে তাই চরম দুশ্চিন্তায় দিন কাটছে আমচাষীদের। আম না পাকলেও ঘূর্ণিঝড়ে সব নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় তুলে নিচ্ছেন গাছের আমও। যদিও প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, যশ মোকাবিলায় সব রকম ভাবে প্রস্তুত তারা। পুলিশ, ব্লক ,স্বাস্থ্য দপ্তর, দমকল বিভাগ সকলেই প্রস্তুত। কিন্তু ঝড় এলে গাছের আম মাটিতে পড়ে নষ্ট হবে। তাই তুলে নিচ্ছেন আম। এক আম চাষীর জানান, ” ঝড়ের খবর পেয়ে আম পেড়ে নেওয়া হচ্ছে। যদিও বেশির ভাগ আম এখনো সম্পূর্ণভাবে পাকেনি। কিন্তু কিছু করার নেই। শিলাবৃষ্টিতে আমের ক্ষতি হয়েছে। আবার যদি ঝড়ে আম নষ্ট হয়। তাই বাধ্য হয়ে কাঁচা আমই ঘরে তুলতে হচ্ছে।” এবিষয়ে মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর ২ ব্লক পঞ্চায়েতের একাউন্টসের অডিট অফিসারকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন,” চাষিরা সতর্ক হয়ে ধান বা আম কেটে নিচ্ছে। সেক্ষেত্রে আমাদের কিছু বলার নেই। তবে আমরা প্রশাসনিক ভাবে প্রস্তুত। বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর প্রস্তুত। ব্লক, স্বাস্থ্য পুলিশ এবং দমকলের মধ্যে সমন্বয় থাকছে। প্রয়োজন অনুযায়ী মোকাবিলা করা হবে।”
গতবারও করোনার মধ্যে আমফান এসে বিপর্যস্ত করেছিল জনজীবন। ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছিল বহু মানুষকে। এবার করোনা পরিস্থিতি আরো ভয়ঙ্কর। তার মাঝে যশের ভ্রুকুটি। আমফানের থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার সবরকমভাবে তৎপর প্রশাসন। ইতিমধ্যেই উপকূলবর্তী এলাকা থেকে বহু মানুষকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে সরকারি আশ্রয় কেন্দ্রে। দুর্গতদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী।

Advt

Previous articleCyclone Yass : কলকাতায় কতটা প্রভাব পড়বে যশের? কী বলছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর
Next articleনিজের এলাকায় টিকা নিলেন বিধায়ক কাঞ্চন