ঝকঝকে আকাশ, শেষ সম্বল বাঁচাতে মরিয়া দিঘার ব্যবসায়ীরা

রোদ উঠতেই মুখে খুশির ঝিলিক। মনে আশা , এই বুঝি দুর্যোগ কাটলো। আনন্দে চোখের জল চিকচিক করছে ব্যবসায়ীদের। নীল আকাশ দেখা গেলেও অধিকাংশেরই মনের মধ্যে কালো মেঘের আনাগোনা। কেননা নিজের উপার্জনের সব কিছুই ভাসিয়ে নিয়ে গিয়েছে সমুদ্র।
কথায় আছে, সমুদ্র নাকি যা নেয় তাই নাকি ফেরত দিয়ে যায়। কিন্তু চেনা সমুদ্রের, অচেনা গর্জন ভয় ধরিয়ে দিয়েছে দিঘার বাসিন্দা থেকে ব্যবসায়ী সবাইকে । রোদ উঠতেই কাজে নেমে পড়েছে দিঘা শঙ্করপুর ডেভলপমেন্ট অথরিটি।
ব্যবসায়ীদের সঙ্গে নিয়ে চলছে সমুদ্রের পাড়ের আবর্জনা সরানোর কাজ৷ চলছে দোকানগুলির অবস্থা কী, তা জানার কাজও। সেটা করতে গিয়েই একের পর দোকানের শাটার খোলা হচ্ছে।

দুদিন আগেই দিঘার বিধান মার্কেট পরিদর্শন করে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। তার পরেই ওল্ড দিঘার বিধান ফ্যান্সি মার্কেট খোলার তোড়জোড় শুরু হয়েছে । বন্ধ শাটারের সামনে কোথাও জমে এক হাঁটু প্লাস্টিকের বর্জ্য। কোথাও আবার জমে আছে মোটা পলির স্তর। এখানে ওখানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে বিশ্ব বাংলা পার্কের মোটা সিমেন্টের চেয়ার। কোথাও আবার ভেঙে ঢুকে গিয়েছে শাটার। দোকান খুলে ব্যবসায়ীরা বের করছেন রেফ্রিজারেটর। কেউ কেউ আবার বার করছেন কম্প্রেসার। সব কিছুই নষ্ট হয়ে গিয়েছে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের দৌলতে। রেফ্রিজারেটর থেকে বার করা হচ্ছে ঠান্ডা পানীয়ের বোতল। তার মধ্যেও জমে আছে সমুদ্রের নোনা জল। কম্প্রেসার খুলতেই দেখা যাচ্ছে জমে আছে কাদা। সেই কাদা বের করার অদম্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।

তারা বলছেন, খাবার যতটুকু সরানো সম্ভব সরিয়ে নিয়েছিলাম। এই ফ্রিজ, বাক্স কোথায় সরাতাম।সব জল ঢুকে নষ্ট হয়ে গিয়েছে। আমাদের প্রায় কয়েক লাখ টাকার ক্ষতি হয়ে গেল।
অমিত সামন্তর ইমিটেশনের গয়নার দোকান। ছুঁড়ে ছুঁড়ে ফেলছেন চুড়ি, কানের দুল, পারফিউম। কারণ কোনওটাই ব্যবহার করা যাবে না আর। হতাশ অমিত বাবুর কথায়, লাগাতার লকডাউন। আর তার মধ্যে সমুদ্র আমাদের এই ক্ষতি করে দিয়ে গেল। বেঁচে থাকা দায় হয়ে যাচ্ছে। হিসেবের খাতা কাদায় মুখ ঢুকিয়ে বসে আছে। দেওয়াল জুড়ে জল-কাদার ছাপ। অসহায় দিঘার বাসিন্দারা।

Advt

রাজ্যের মন্ত্রী তথা রামনগরের বিধায়ক অখিল গিরি জানিয়েছেন, সমীক্ষার কাজ শুরু হয়েছে। অবশ্যই সরকার এই সব মানুষের পাশে দাঁড়াবে।

Previous articleজনসংখ্যার বৃদ্ধিতে লাগাম টেনে এবার চিনা দম্পতিদের ৩ সন্তানের অনুমতি সরকারের
Next articleসেন্ট্রাল ভিস্তা প্রকল্পের কাজ চলবে, স্থগিতাদেশের আর্জি খারিজ করে জানাল দিল্লি হাইকোর্ট