পশ্চিমবঙ্গে প্রথম। কোভিডে মৃত ব্যক্তির ক্লিনিক্যাল ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এবার প্রকাশ্যে। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, এটিই প্রথমবার বলে দাবি করা হয়েছে। রিপোর্টে জানানো হয়েছে, করোনাভাইরাস সাংঘাতিকভাবে ক্ষতি করেছিল মৃত ব্যক্তির ফুসফুস এবং কিডনিতে। ১৪ মে মারা গিয়েছিলেন গণদর্পনের প্রতিষ্ঠাতা ও রাজ্যে মরনোত্তর দেহদানের পথিকৃৎ ব্রজ রায়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর। বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা নিয়ে এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকাকালীন তাঁর কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ আসে। এরপর শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতালে স্থানান্তরিত করে চিকিৎসা চললেও মৃত্যু হয় তাঁর। তারপরই তাঁর দেহ ক্লিনিক্যাল অটোপসির জন্য রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের হাতে তুলে দেওয়া হয়।

ব্রজ রায়ের ইচ্ছা ছিল মরনোত্তর দেহ দান করার। কিন্তু তা পূরণ হয়নি। মৃত কোনও ব্যক্তির ক্লিনিক্যাল ময়নাতদন্ত করার জন্য রীতিমতো তৈরি ছিল রাজ্য স্বাস্থ্যদফতর। সেই দায়িত্ব দেওয়া হয় আর জি কর মেডিক্যাল কলেজকে। রাজ্যের স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিকর্তা দেবাশিস ভট্টাচার্যের নির্দেশে গঠিত হয় তিন বিশেষজ্ঞের কমিটি। চিকিতসকেরা তাঁর দেহের বিভিন্ন অঙ্গ প্রতঙ্গ, চামড়া, কিডনি, ফুসফুস থেকে ব্রেন সমস্ত কিছু ভিন্ন ভিন্নভাবে পরীক্ষা করে দেখেন। বিশেষজ্ঞরা ব্রজ রায়েরে দেহ ৪০টি ধাপে ময়নাতদন্ত করেন। প্রায় তিন সপ্তাহ আজ, বুধবার প্রকাশ্যে এল সেই ময়নাতদন্তের রিপোর্ট।


আরও পড়ুন-আগামী লোকসভা নির্বাচনে বিরোধী জোটের মুখ কি মমতা? জবাব দিলেন খোদ তৃণমূলনেত্রী

স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা এবং চিকিৎসকরা বলেছেন, নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণে মৃত ব্যক্তির শরীরে কী কী ক্ষতি হয় তা জানার জন্য এই পরীক্ষা অত্যন্ত কার্যকর হয়েছে। এছাড়াও তাঁরা স্পষ্ট করেছেন, মৃতদেহ থেকে সংক্রমণ ছড়ায় না। তবে মানুষের মৃত্যুর আগে পর্যন্ত করোনাভাইরাস মানবদেহে কতটা সাংঘাতিকভাবে ক্ষতি করতে পারে তা জানা গিয়েছে ক্লিনিক্যাল অটোপসিতে। আর তা সম্ভব হয়েছে ব্রজ রায়ের দেহের মাধ্যমে।


চিকিৎসকরা আরও জানিয়েছেন, ব্রজ রায়ের পর আরও ৬টি দেহের ক্লিনিক্যাল ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। সেই রিপোর্টগুলিও পরে সামনে আনা হবে। পাশাপাশি চিকিৎসকরা কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন সেই সমস্ত পরিবারকে যারা তাঁদের আত্মীয়দের দেহ রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের হাতে তুলে দিয়েছে।
